Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দেবের ফোন, মিলল চাষে সাহায্যের আশ্বাস

সিপিএম করার ‘অপরাধে’ তাঁকে চাষ বন্ধ রাখার ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৮
Share: Save:

সিপিএম করার ‘অপরাধে’ তাঁকে চাষ বন্ধ রাখার ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সাংসদ-ভাইপো দেবের ফোনে জ্যাঠা শক্তিপদ অধিকারীর সেই সঙ্কট কাটল। শাসক দলের তরফেই এ বার মিলল সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস। প্রয়োজনে বীজতলা দেওয়ার কথাও!

কেশপুরের মহিষদার বাসিন্দা, সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য শক্তিপদবাবু মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা তাঁকে চাষ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সে কথা শুনে ওই দিনই দেব জানিয়েছিলেন, তিনি খোঁজ নেবেন। বিকেলেই তিনি জ্যাঠার ছেলে সুজিত অধিকারীকে ফোন করেন। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের সঙ্গেও দেবের কথা হয় বলে সুজিতবাবুর দাবি। এর পরেই মেলে সহযোগিতার আশ্বাস।

তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “সঞ্জয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে।

ওঁকে যা বলার বলে দিয়েছি। আমাদের কেউ কাউকে চাষে বাধা দেবে না। কেশপুরের নেতৃত্বকে বলেছি, প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থেকে চাষে সহযোগিতা করতে হবে।” একই সুরে সঞ্জয়বাবুও বলেন, ‘‘উনি (শক্তিপদবাবু) নিশ্চিন্তে চাষ শুরু করতে পারেন। চাইলে বীজতলাও দেব!”

তবে, শুধু শক্তিপদবাবুই নন, গ্রামের আরও কয়েক জন সিপিএম সমর্থককেও একই ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। শক্তিপদবাবু-সহ বাকিদেরও চাষের কাজে কোনও বাধা না-দিতে স্থানীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। অন্য চাষিরা মুখ না খুললেও শক্তিপদবাবু বলেন, ‘‘ওদের (তৃণমূলের) লোকেরা আর চাষে বাধা দেবে না বলে শুনেছি। এখনও বীজতলা ফেলা হয়নি। হাতে সময় কম। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলি। তারপরেই চাষের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার জোরজুলুম বন্ধ করার বার্তা দিচ্ছেন দলীয় কর্মীদের। এই ধরনের অভিযোগ পেলে প্রশাসনকেও কড়া হতে নির্দেশ দিচ্ছেন। দেবের জ্যাঠার বিষয়টি নিয়েও তাঁরা যে কঠোর মনোভাব নিতে চলেছেন সে ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার পার্থবাবু বলেন, ‘‘দেবের জ্যাঠা সমস্যায় পড়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। দেব ওখানকার তৃণমূলের সাংসদ। তাঁকে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। জেলা তৃণমূল থেকে রিপোর্ট নিয়ে প্রশাসনকে জানাতে হবে, যাতে প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারে।’’

শক্তিপদবাবুকে যে ছ’বিঘা জমিতে চাষ বন্ধের ফতোয়া দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ, তার মধ্যে তিন বিঘা দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারীর। যদিও সেই জমি শক্তিপদবাবুই চাষ করেন। শ্যুটিংয়ের জন্য দীর্ঘদিন ব্রাজিলের মানাউস শহরে ছিলেন দেব। সোমবার কলকাতায় ফেরেন। ভাইয়ের (দেবের) ফোনের কথা স্বীকার করে সুজিতবাবু বলেন, “চাষ বন্ধের বিষয়টি জানার পর ভাই মঙ্গলবার বিকেলে ফোনে জানতে চেয়েছিল, ঠিক কী হয়েছে। আমি সবটাই জানিয়েছি। ভাইয়ের সঙ্গে সঞ্জয় পানেরও কথা হয়।’’ দেবের ফোনের কথা অবশ্য মানতে চাননি সঞ্জয়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘তেমন কিছু হয়নি। দেব এ ব্যাপারে কিছু জানতেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dev Farming assurance CPM দেব
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE