Advertisement
E-Paper

যাদবপুরের চার পড়ুয়াকে আজীবন বহিষ্কার! র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে সুপারিশ তদন্ত কমিটির

প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর একটি তদন্ত কমিটি গড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির জমা দেওয়া রিপোর্টে একাধিক জনের শাস্তির সুপারিশ রয়েছে বলে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:০৩
image of JU Main hostel

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। — ফাইল চিত্র।

প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিল সেখানকার অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্টে র‌্যাগিং রুখতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে। র‌্যাগিংয়ে জড়িত চার বর্তমান পড়ুয়াকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে। পাশাপাশি, কয়েক জন প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

গত ৯ অগস্ট রাতে মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। পর দিন সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি, অভ্যন্তরীণ একটি তদন্ত কমিটি গড়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সেই তদন্ত কমিটিই মঙ্গলবার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছিল ওই কমিটি। তবে চূড়ান্ত রিপোর্টে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ অগস্ট, ওই ছাত্রের পড়ে যাওয়ার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ঘটনার বিষয়ে সঠিক বর্ণনা দেননি। ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন তাঁরা। কেউ কেউ তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টাও করেছেন বলে ওই কমিটির অভিযোগ। তাঁদের সকলকে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, কমিটির রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, সেই রাতে হস্টেলে যে প্রাক্তনীরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টের সুপারিশ মেনে সিনিয়রদের একাংশকে হস্টেল ছাড়তে হতে পারে। ঘটনার দিন সিনিয়র হয়েও কেন চুপ ছিলেন তাঁরা, প্রশ্ন তুলেছেন খোদ উপাচার্য। ফলে তাঁরা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকতে পারবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। এগ্‌জিকিউটিভ কাউন্সিল (ইসি)-এর বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, র‌্যাগিংয়ে জড়িত রয়েছেন এমন ১৫ জন পড়ুয়াকে একটি সেমেস্টার, ১১ জন পড়ুয়াকে দু’টি সেমেস্টার, পাঁচ জনকে চারটি সেমেস্টারে সাসপেন্ড করা হতে পারে। এমনকি, গবেষণা শেষের পর এক গবেষক ছাত্রকে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না ক্যাম্পাসে, এমন সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।

অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি এবং ইসি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর প্রতিনিধিরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে খবর, ইউজিসির প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুলেছেন, র‌্যাগিং হলেও কেন এত দিন কড়া শাস্তি দেওয়া হল না? কেন এত নরম মনোভাব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের? র‌্যাগিং প্রমাণিত হলে দোষী ছাত্রকে এক সপ্তাহের জন্য কি সাসপেন্ড করা হয়েছিল? কেন করা হয়নি? এ সমস্ত প্রশ্নই করেছেন ইউজিসির প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি, তাঁরা জানতে চেয়েছেন, কেন এত দিন ইসির বৈঠক ডাকা হয়নি? ইউজিসির র‌্যাগিং বিরোধী নির্দেশিকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন কতটা মেনেছে, সেটাও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ওই প্রতিনিধি দলের সূত্রে জানা গিয়েছে।

JU Student Death Ragging Jadavpur University UGC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy