Advertisement
E-Paper

অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের অস্বাভাবিক মৃত্যু বনগাঁয়

স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। মোবাইলে কয়েক বার ফোন আসার পরে ওই ব্যক্তি একাই ফিরে আসেন বাড়িতে। কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বাড়ি ফেরেন স্ত্রী। দেখেন, তাঁরই শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে ঝুলছে স্বামীর দেহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০১:৫৭
গোপাল বসু

গোপাল বসু

স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। মোবাইলে কয়েক বার ফোন আসার পরে ওই ব্যক্তি একাই ফিরে আসেন বাড়িতে। কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বাড়ি ফেরেন স্ত্রী। দেখেন, তাঁরই শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে ঝুলছে স্বামীর দেহ।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর চাঁপাবেড়িয়া এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম গোপাল বসু (৪৯)। গত কয়েক বছর ধরে বনগাঁরই একটি অর্থলগ্নি সংস্থায় এজেন্টের কাজ করতেন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাস কয়েক হল আমানতকারীরা নিয়মিত টাকা পাচ্ছিলেন না ওই সংস্থা থেকে। তা নিয়ে কেউ কেউ বাড়ি এসে চাপ দিচ্ছিলেন গোপালবাবুকে। তাঁর স্ত্রী স্বাগতা জানান, গ্রাহকদের টাকা শোধ করার জন্য গোপালবাবুর ঊর্ধ্বতন এক এজেন্টকে দিন কয়েক আগে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। কিন্তু সেই টাকা গোপালবাবু কিছুই পাননি। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এ দিকে, পাওনাদারেরা বাড়ি বয়ে এসে নানা ভাবে চাপ দিচ্ছিল। স্বাগতাদেবী আইসিডিএস কর্মী। তিনি স্বামীকে বলেছিলেন, গয়না বিক্রি করে, বাড়ি বন্ধক রেখে যে ভাবে হোক সব টাকা শোধ করে দেবেন তাঁরা। কিন্তু তারপরেও ইদানীং ভয়ে ভয়ে থাকতেন গোপালবাবু।

শোকার্ত পরিবার।

এ দিন তাঁরা সপরিবার গিয়েছিলেন স্বাগতাদেবীর বাপের বাড়ি বনগাঁরই খয়রামারিতে। বাড়ি থেকে কাজ সেরে আসছেন বলে বেলা ১২টা নাগাদ সেখান থেকে বেরোন গোপালবাবু। পরে তাঁর মোবাইল বেশ কয়েক বার বেজে গেলেও স্বাগতাদেবী যোগাযোগ করতে পারেননি স্বামীর সঙ্গে। বেলা আড়াইটে নাগাদ বাড়ি গিয়ে স্বামীর ঝুলন্ত দেহ দেখে তিনি চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করেন। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন গোপালবাবুকে।

স্বাগতাদেবী বলেন, “বনগাঁরই শক্তিগড়ের এক এজেন্টের কাছে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। কিন্তু সেই টাকা পৌঁছয়নি ওঁর (গোপাল) কাছে। গ্রাহকেরা মাঝে মাঝে এসে টাকা চেয়ে ঝামেলা করত। এ সবের সঙ্গে ওঁর মৃত্যুর কোনও যোগ আছে বলেই আমার মনে হয়। সব বিষয় তদন্ত করে দেখুক পুলিশ।” শক্তিগড়ের ওই এজেন্টকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে তাদের অনুমান, গোপালবাবু আত্মহত্যাই করেছেন। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে।

গোপালবাবুর দাদা রামকৃষ্ণ বলেন, “দুপুরের দিকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল পরিচিত এক ব্যক্তির। ভাই তাঁর কাছে ৬০ হাজার টাকা চায়। বলে, পনেরো মিনিটের মধ্যে টাকাটা না পেলে সে মারা যাবে।” ওই ব্যক্তি টাকা দিতে পারেননি। এরপরে সেখান থেকে মোটর বাইক নিয়ে চলে যান গোপালবাবু।

মেয়ে সায়নী এ বারই মাধ্যমিক পাশ করেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল সে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, “পাওনাদারেরা বাবাকে এসে চাপ দিত। সে জন্যই মরতে হল বাবাকে।”

ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

bangaon death of cheat fund agent
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy