দিন দিন বাড়ছে বসতি ও বাজার। তৈরি হচ্ছে নতুন আবাসন, কারখানা। নানা জায়গায় ক্রমশ ঘন হচ্ছে তারের জঙ্গল। কিন্তু আগুন লাগলে বাঁচাবে কে? দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও মুম্বই রোডের ধারে ডোমজুড় ব্লকের আশপাশে কোনও দমকলকেন্দ্র তৈরি হয়নি। এলাকায় দমকলকেন্দ্র তৈরির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন। হাওড়া জেলা দমকল অফিসে চিঠি পাঠিয়েছে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি।
জেলা দমকলের এক কর্তা ডোমজুড়ে দমকলকেন্দ্র তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে বলেন, “মুম্বই রোড চওড়া করার সময়ে পাশের নয়ানজুলিগুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়। তাই ডোমজুড়ে দমকলকেন্দ্র তৈরির আগে জলের নতুন সংযোগের ব্যবস্থা করা জরুরি।” দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “আমার কাছে আবেদন এলে তা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। জমির সমস্যা হবে না।”
বর্তমানে হাওড়ায় মোট দমকলকেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচটি। এগুলি রয়েছে হাওড়া, বালি, শিবপুর, লিলুয়া এবং উলুবেড়িয়ায়। এর মধ্যে গ্রামীণ হাওড়ায় পড়ছে একমাত্র উলুবেড়িয়া দমকলকেন্দ্রটি। ফলে, গ্রামীণ হাওড়ার ডোমজুুড়, সাঁকরাইল, জগৎবল্লভপুরের মতো এলাকায় যদি কোনও আগুন লাগার ঘটনা ঘটে তা হলে দমকল তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে না। ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ধুলাগড়ি পর্যন্ত মুম্বই রোডের ধার ঘেঁষে অনেকগুলি সরকারি ও বেসরকারি কারখানা গড়ে উঠেছে। আলমপুরের কাছে রয়েছে একটি বেসরকারি শিল্পতালুক। ধুলোগড়িতে রয়েছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের তৈরি ফুড পার্ক। এ ছাড়া, ডোমজুড় বাজার, আন্দুল বাজার, বড়গাছিয়া বাজারের মতো এলাকায় রয়েছে ছোটবড় দোকান। ডোমজুড় বাজার এলাকায় ঘরে ঘরে হয় সোনার কাজ। আন্দুলে আবার রয়েছে প্রচুর কাঠের দোকান। কিন্তু ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে যাওয়া এই এলাকায় খুব কম বাড়ি এবং দোকানে রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। বছর কয়েক আগে ধুলাগড়িতে একটি রং তৈরির কারখানায় আগুন লেগেছিল। কিন্তু কাছাকাছি দমকলকেন্দ্র না থাকায় হাওড়া ও উলুবেড়িয়া থেকে দমকল আসার পরে আগুন নেভাতে বাড়তি সময় লেগে যায়।
তাই ডোমজুড়ে দমকলকেন্দ্র তৈরির দাবি তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে আন্দুল আড়গোড়ির শুভদীপ সেনের দাবি, “আন্দুল থেকে আলমপুর পর্যন্ত দু’ধারে অনেকগুলি কারখানা রয়েছে। প্রতি দিন অনেক মানুষ এখানে কাজ করতে আসেন। তাঁদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে ধুলাগোড়ি এলাকায় একটি দমকলকেন্দ্র তৈরি করা উচিত।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের প্রথম দিকে ডোমজুড়ের ধুলাগড়ি মোড়ে দমকলকেন্দ্র তৈরির চেষ্টা হলেও পরে আর কাজ এগোয়নি। জেলা পরিষদের তৎকালীন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা সিপিএম নেতা আনন্দ চট্টোপাধ্যায় জানান, সেই সময় মুম্বই রোড চওড়া করার কাজ চলছিল। জমি সংক্রান্ত সমস্যাও ছিল। তাই দমকলকেন্দ্র তৈরি করা যায়নি। তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া জেলা পরিষদের বর্তমান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষের দাবি, ডোমজুড় থানা সংলগ্ন এলাকা এবং কোনা এক্সপ্রেসওয়ের আশপাশে দমকলকেন্দ্র তৈরির জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে।
এলাকায় দমকল কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করছেন তৃণমূল পরিচালিত ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বর্ণালি ঘোষ। তিনি বলেন, “ডোমজুড়ে দমকলকেন্দ্র তৈরি করা আমাদের স্বপ্ন। আমরা এলাকার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy