Advertisement
১৯ মে ২০২৪

খুনের চেষ্টার অভিযোগে গণপ্রহার, মৃত ২

এক ব্যক্তিকে লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে গণপ্রহারে মৃত্যু হল দুই যুবকের। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে টিটাগড় থানার খড়দহে। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম পার্থ রায় (২৩) ও রাজীব ভৌমিক (২০)। দু’জনেরই বাড়ি খড়দহের পাতুলিয়ায়। যাঁকে লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে তাঁদের পিটিয়ে মারা হয়, শেখ জাকির হোসেন নামে সেই ব্যক্তি জমি-বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করেন। ব্যারাকপুরের বিড়লা গেটের বাসিন্দা জাকিরের দাবি, কিছু দিন আগে তাঁর কাছে মোটা টাকা দাবি করেছিল স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০২:১০
Share: Save:

এক ব্যক্তিকে লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে গণপ্রহারে মৃত্যু হল দুই যুবকের। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে টিটাগড় থানার খড়দহে। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম পার্থ রায় (২৩) ও রাজীব ভৌমিক (২০)। দু’জনেরই বাড়ি খড়দহের পাতুলিয়ায়। যাঁকে লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে তাঁদের পিটিয়ে মারা হয়, শেখ জাকির হোসেন নামে সেই ব্যক্তি জমি-বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা করেন। ব্যারাকপুরের বিড়লা গেটের বাসিন্দা জাকিরের দাবি, কিছু দিন আগে তাঁর কাছে মোটা টাকা দাবি করেছিল স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে জাকির মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন। টিটাগড় থানা এলাকার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে সরস্বতী পল্লির কাছে একটি পানশালার সামনে রাস্তার ধারে মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল পার্থ ও রাজীব। জাকিরের অভিযোগ, ‘‘বাইকে বসা দু’জনেরই মুখ ঢাকা ছিল। এক জন আমাকে লক্ষ করে গুলি চালায়। গা ঘেঁষে গুলিটা বেরিয়ে যেতেই আমি চিৎকার করতে থাকি। ওরা বাইক নিয়ে খড়দহের দিকে পালায়।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাকিরের চিৎকার শুনে অন্য দু’টি গাড়ি ও মোটরবাইকের চালকেরা রাজীবদের তাড়া করে। রুইয়া বকুলতলার কাছে রাজীবদের মোটরবাইকটির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ততক্ষণে চিৎকার চেঁচামেচিতে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে গিয়েছেন। রটে গিয়েছে এক জনকে খুন করে পালাচ্ছিল ওরা। উত্তেজিত জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে দু’জনের উপর। রাস্তার উপরে ফেলে বাঁশ, গাছের ডাল, আধলা ইঁট দিয়ে থেঁতলে মারা হয় দু’জনকে।

রাজীবের দাদা পাপাই ভৌমিক বলেন, ‘‘ভাইকে যখন সবাই মারবে বলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তখন ফোন করেছিল ও। বলছিল, ‘আমাকে মেরে ফেলবে, বাঁচা।’’ পৌঁছে দেখলাম ভাইকে মেরে ফেলেছে। ও কলেজে পড়ত। সত্যি খুনি হলে ওকে পুলিশে দিতে পারত।’’

স্থানীয় একটি গেঞ্জি কারখানার কর্মচারী, পার্থর বাবা সুকুমার রায় বলেন, ‘‘আমার ছেলে যদি অপরাধী হয়েও থাকে, তার শাস্তি কারা দিল? তারা কি ওকে শাস্তি দেওয়ার অধিকারী? এটা খুন নয়?’’

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, জনরোষের এই ভয়ঙ্কর প্রতিফলন নিয়ে। গণপিটুনিতে নিহত দুই যুবকের নামে পুলিশের খাতায় আগে কোনও অভিযোগ ছিল কি না, তা বলতে পারেননি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান সি সুধাকর। সকালবেলা যেখানে এই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে, তার কাছেই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশের টহলদারি গাড়ি থাকে। বাসিন্দাদের কেউই পুলিশকে না ডেকে দুই যুবককে পিটিয়ে মারায় পুলিশ নিজে থেকেই একটি মামলা করেছে।

গোয়েন্দা-প্রধান বলেন, ‘‘খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। কিন্তু পুলিশের হাতে অভিযুক্তদের তুলে দেওয়ার পরিবর্তে জনতাই পিটিয়ে মেরে ফেলল তাদের। তাই আমরা মামলা করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

attemted murder khardah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE