পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে খুড়তুতো দাদার হাতে খুন হতে হল ভাইকে। ঘটনার পরে বাড়ি ভাঙচুর, আগুন ধরিয়েও দেওয়া হল অভিযুক্ত দাদার বাড়িতে। পারিবারিক ওই বিবাদের জেরে শুক্রবার দুপুরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল হাওড়ার বাঁকড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম শাহিদ হাসান লস্কর (১৮)। সে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, বাঁকড়া গাজি পাড়ার বাসিন্দা শাহিদ হাসান লস্কর এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে আচমকাই দলবল নিয়ে তাঁর পথ আটকান খুড়তুতো দাদা এনাসুর মল্লিক। অভিযোগ, রাস্তার মধ্যেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই যুবককে কুপিয়ে খুন করে এনাসুর। শাহিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই চম্পট দেয় এনাসুর। প্রকাশ্য দিবালোকে এই ঘটনার পরেই বাসিন্দারা খেপে ওঠেন।
শাহিদের এক আত্মীয় আয়ান হাসান সর্দার বলেন, “বাড়ি ফেরার পথে এমন ঘটনা ঘটবে ভাবিনি। আমরা এক সঙ্গেই ফিরছিলাম। তবে শাহিদের থেকে একটু দূরে ছিলাম। এনাসুর ও তাঁর লোকজন ওঁকে ঘিরে ধরে কোপাতে থাকে। ভয়ে কেউ বাঁচাতে এগিয়েও আসেননি। আমরা ছুটে আসতেই সকলে পালিয়ে যায়।”
পুলিশ জানায়, উত্তেজিত জনতা প্রথমে এনাসুরের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ভয়ে বাড়ির লোকেরা সব পালিয়ে যায়। এর পরে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে ডোমজুড় থানার পুলিশ আসে। পুলিশ জানায়, স্থানীয়েরা মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশকেও এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। মৃতদেহ তুলতে দেওয়া হয় না। তখনই হামলা চালানো হয় অভিযুক্তের বাড়িতে। পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে যেতে দেখে ঘটনাস্থলে আসে ডোমজুড় থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র্যাফ। উত্তেজিত জনতাকে হটাতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করতে হয়।
পুলিশ জানায়, গাজি পাড়ায় পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন এনাসুর ও শাহিদ। বাড়ির কাছেই তাঁদের একটি চার কাঠা জমি রয়েছে। কিন্তু জমিতে কার মালিকানা রয়েছে, তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি লেগে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পুলিশ, সকলেই বিষয়টি জানতেন। এ দিন সেই অশান্তি ও পুরনো শত্রুতার জেরেই এনাসুর লোকজন নিয়ে এসে শাহিদকে খুন করে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।