Advertisement
E-Paper

চলছে ছোট কর্মিসভা, প্রচারে তারকাদেরও আনার আশ্বাস

২০০৯ থেকে ২০১৪ পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিলকুল বদলে গিয়েছে রাজ্যে রাজনীতির চেহারা। এই বদলের সাপেক্ষে লোকসভা ভোটের মুখে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের হাওয়াও এ বার অবধারিত ভাবেই কিছুটা ভিন্ন খাতে বইছে। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল না তৃণমূল। তৎকালীন শাসকদল সিপিএম তথা বামফ্রন্টের ঝোড়ো বিরোধিতাই ছিল তৃণমূলের একমাত্র হাতিয়ার।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০০:২৯

২০০৯ থেকে ২০১৪ পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিলকুল বদলে গিয়েছে রাজ্যে রাজনীতির চেহারা। এই বদলের সাপেক্ষে লোকসভা ভোটের মুখে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের হাওয়াও এ বার অবধারিত ভাবেই কিছুটা ভিন্ন খাতে বইছে।

গত লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল না তৃণমূল। তৎকালীন শাসকদল সিপিএম তথা বামফ্রন্টের ঝোড়ো বিরোধিতাই ছিল তৃণমূলের একমাত্র হাতিয়ার। সে বার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের। আর গত নির্বাচনে বিজেপি লড়াইয়ে থেকেও ছিল না। এ বার কিন্তু বিজেপি-র সরব উপস্থিতি হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে। চার দলের তীব্র লড়াইয়ের বাস্তবতার জমিতে দাঁড়িয়েই এ বার জমে উঠেছে ভোট।

বদলে যাওয়া এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলই কুশলি প্রচারে জোর দিচ্ছেন। ব্যবহার হচ্ছে প্রযুক্তি। কেউ প্রচার করছেন অডিও-ভিডিও শো-এর মাধ্যমে। সেই কাজে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞাপন সংস্থার। কেউ আবার ভোটারদের মধ্যে বিলি করছেন ‘দিদির’ খোলা চিঠি। শহরাঞ্চলের বাজার আর গ্রামের হাটকে প্রার্থীরা ব্যবহার করছেন প্রচারের আঙিনায়। কেউ আবার ভরসা রাখছেন আদি অকৃত্রিম মিছিলে। সেই সঙ্গে চলছে ছোট ছোট জনসভা, রোড-শো। সরাসরি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার রণকৌশল নিচ্ছেন প্রায় সব প্রার্থীই। এ বারের প্রচারে রণ-পা-র ব্যবহারও লক্ষ্য করার মতো। একেবারে শেষ পাতের প্রচারে হুগলি লোকসভায় বিজেপি-র অন্দরে ভাবনাচিন্তা আছে, ভারতের নানা প্রান্ত থেকে মহাতারকাদের আনা। সেই তালিকায় হেমামালিনীও রয়েছেন বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।

হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে এ বার সিপিএমের প্রার্থী জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি প্রদীপ সাহা। অত্যন্ত প্রত্যয়ের সঙ্গে বললেন, “বিশাল এই লোকসভা কেন্দ্রের প্রায় ৫০ শতাংশই আমি ইতিমধ্যেই ঘুরে ফেলেছি। মানুষের কাছে ভাল সাড়া পাচ্ছি। ধনেখালি, সিঙ্গুর, বলাগড়ে যেখানেই গিয়েছি মানুষের চোখমুখের ভাষা দেখে আমি তৃপ্ত। নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত যদি মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেয়, তা হলে অনেক হিসেব বদলে যাবে এ বার।”

সিপিএম প্রার্থীর এই প্রত্যয়ের সাপেক্ষে মানুষ কী রায় দেন তা সময়ই বলবে। আপাতত তাঁর দলের সমর্থকেরা দেওয়াল লিখন, পোস্টার, ব্যানার আর ফ্লেক্সে শহর এবং গ্রামাঞ্চল ভরিয়ে তুলেছেন। প্রদীপবাবু বলেন, “আমরা সকালে মিছিল করছি। আর বিকেল এবং রাতে জনসভা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার কথা মানুষকে যেমন বলছি, তেমনি বলছি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কথা। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবের ফারাকটাই মানুষের কাছে তুলে ধরছি।”

বিরোধী সিপিএম প্রার্থী মানুষের কাছে যখন রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকে তুলে ধরতে মরিয়া, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী (গতবারের জয়ী) রত্না দে নাগের তখন অস্ত্র, উন্নয়ন। কন্যাশ্রী থেকে যুবশ্রী গত তিন বছরে রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরছেন রত্নাদেবী। সেই দাবিকে জোরদার করতে দলের তরফে পুস্তিকা বিলি করা হচ্ছে। চলছে বুথ ধরে ধরে প্রচার। ইতিমধ্যেই ধনেখালি, সপ্তগ্রাম, সিঙ্গুর, চুঁচুড়া, চন্দননগরের বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়িয়েছেন পেশায় চিকিৎসক এই প্রার্থী। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং তো রয়েছেই। তার পাশাপাশি আমরা মানুষের কাছে নিয়ে যাচ্ছি, দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দেওয়া খোলা চিঠি।”

কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রীতম ঘোষের সমর্থনেও প্রচার শুরু করেছেন দলীয় সমর্থকেরা। পোস্টার, ব্যানার, দেওয়াল লিখনকেই হাতিয়ার করছেন তাঁরা। রোড শো-র পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক প্রচারে জোর দিচ্ছেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী। প্রীতমবাবু বলেন, “আমার কেন্দ্রের গ্রামভিত্তিক এলাকাগুলিতে প্রাচারে বেশি করে জোর দিচ্ছি আমি।”

সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেসের সঙ্গেই এ বার পাল্লা দিয়ে হুগলি কেন্দ্রে প্রচারে নেমেছে বিজেপি। দলীয় প্রার্থী চন্দন মিত্রের সমর্থনে ভিডিও ও অডিও প্রচার করা হচ্ছে। ফ্লেক্সের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থাকে। ট্যাবলোর সঙ্গেই চন্দনবাবুর ভাষণ ভিডিও ও অডিও-র মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এ ছাড়াও, বিজেপি প্রার্থী রোড-শো করেছেন তাঁর কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রবীন এই সাংবাদিকের নাম প্রার্থী হিসেবে দল ঘোষণার পর থেকেই গত এক মাস চুঁচুড়ার বাবুগঞ্জের বাড়িতে ঘাঁটি গেড়ে প্রচারে মন দিয়েছেন তিনি। দলে জেলার সহ-সভাপতি স্বপন পাল বলেন, “আমাদের প্রচারে হেমামালিনী, বাবুল সুপ্রিয় (আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীও বটে), সুষমা স্বরাজ-সহ সর্বভারতীয় বহু নেতানেত্রীর হুগলি কেন্দ্রে প্রচারে আসার কথা রয়েছে।”

ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসবে প্রতিটি দলের প্রচারের পালে হাওয়া ততই তীব্র হবে। এখন দেখার মানুষের রায় মাথায় নিয়ে কোনও দলের প্রার্থী শেষ হাসি হাসেন।

ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত। মঙ্গলবার রাতে খানাকুলের ঘোড়াদহ গ্রামে বছর বারোর এক বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় এক যুবককে ধরল পুলিশ। রাম ঘাঁটি নামে ওই যুবককে বুধবার আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানায়, ঘোড়াদহ গ্রামে যাত্রাপালা হচ্ছিল। মেয়েটি সেখানেই ছিল। রাত ২টো উঠে বাইরে প্রাকৃতিক কাজে বেরোয়। অভিযোগ, মেয়েটিকে সে সময়ে মুখে চেপে ধরে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে ওই যুবক ধর্ষণ করে। মেয়েটি ঘটনা বাড়িতে বলে। ভোরে এলাকার লোকজন অভিযুক্ত যুবককে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

goutam bandyopadhyay election campaign loksabha election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy