Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিপদ মাথায় নিয়েও অ্যাপ্রোচ রোড দিয়ে নিত্য যাতায়াত চলছে বাগনানে

রাস্তার মাঝে মাঝে খানাখন্দ হয়ে বছর চারেক ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে বাগনানের অ্যাপ্রোচ রোড। বাগনান স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কাছ থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে পূর্ব দিকের রেল গেট পর্যন্ত প্রায় সাতশো মিটার রেলের ওই রাস্তাটি আমতা ও শ্যামপুর ব্লকের লক্ষাধিক মানুষের স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য এক মাত্র ভরসা। কম পক্ষে দু’হাজার বাস, অটো, ট্রেকার ও ম্যাজিক গাড়ির নিত্য চলাচল ওই রাস্তা দিয়ে।

খন্দ পথে যাতায়াত নিত্যসঙ্গী। —নিজস্ব চিত্র।

খন্দ পথে যাতায়াত নিত্যসঙ্গী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০১:২৪
Share: Save:

রাস্তার মাঝে মাঝে খানাখন্দ হয়ে বছর চারেক ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে বাগনানের অ্যাপ্রোচ রোড।

বাগনান স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কাছ থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে পূর্ব দিকের রেল গেট পর্যন্ত প্রায় সাতশো মিটার রেলের ওই রাস্তাটি আমতা ও শ্যামপুর ব্লকের লক্ষাধিক মানুষের স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার জন্য এক মাত্র ভরসা। কম পক্ষে দু’হাজার বাস, অটো, ট্রেকার ও ম্যাজিক গাড়ির নিত্য চলাচল ওই রাস্তা দিয়ে। প্রতি দিনই তাই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, রাস্তা সারানোর ব্যাপারে উদাসীন রেল কর্তৃপক্ষ। টাকার অভাবে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে রেল সূত্রে খবর।

এই অ্যাপ্রোচ রোডের দক্ষিণে রেলের দক্ষিণ-পূর্ব শাখার রেললাইন। উত্তরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই রাস্তার পাশেই রয়েছে বাগনান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, বাগনান হাইস্কুল। তার কিছুটা দূরে রয়েছে বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়। এছাড়াও রয়েছে কয়েকটি শিশুদের স্কুল। রয়েছে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, ভূমি সংস্কার দফতরের অফিস, বাগনান কলেজ, বাগনান থানা-সহ মার্কেট কমপ্লেক্স, হাটবাজার ইত্যাদি। জাতীয় সড়ক থেকে ওটি রোড ও বাগনান স্টেশন রোড এবং মুরারী রোডের রাস্তা ধরে বাগনান স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ডে আসতে হয়। ওই দুই রাজ্য সড়কের অবস্থা খারাপ না হলেও বেহাল এই রাস্তাটির জন্যই যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। গোটা রাস্তাটাই এখন ছোট বড় গর্তে ভর্তি। কোথাও কোথাও তা আবার ছ’ইঞ্চি থেকে আট ইঞ্চি গভীর। গোটা রাস্তাটিতেই পিচের প্রলেপ সরে গিয়ে স্টোনচিপ বেরিয়ে পড়েছে। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে গাড়ির চাকা গড়ালেই একবার ডান দিকের গর্তে ও একবার বাঁ দিকের গর্তে পড়তে থাকে। ফলে বড় দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ে। পথচারীরাও রাস্তায় পা দিলেই হোঁচট খান। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিপদ মাথায় নিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। কর্মস্থলে পৌঁছতেও দেরি হয়। যে রাস্তা এক মিনিটে পেরনোর কথা, সেই রাস্তা পেরোতে সময় লাগে প্রায় দশ মিনিট। বাগনানের বছর সত্তরের এক বৃদ্ধ অশোক রায় বলেন, “অ্যাপ্রোচ রোডে এলেই ভয় করে। আমরা চাই, রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই রাস্তাটি সারানোর ব্যবস্থা নিক। তাহলে আমরা নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারব।”

রেলযাত্রী সুরক্ষা কমিটির প্রাক্তন সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা মিটিং-এ বহুবার আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগে একবার প্যাচওয়ার্ক করা হয়েছিল। তারপর আর সংস্কার করা হয়নি। তাও গতবছর পুজোর আগে বড় গর্তগুলোতে ইট, স্টোনচিপ দিয়ে বোজানো হয়েছিল। তখনই একটি মিটিং-এ এই অ্যাপ্রোচ রোড সারানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল কতৃর্পক্ষ। এর সঙ্গে কুলগাছিয়া অ্যাপ্রেচ রোড এবং অন্যান্য রেল সংক্রান্ত কাজ করার জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করা হয়েছিল। পরে সেটা বেড়ে ৫০ লক্ষ টাকা হয়েছে বলে জানান রেলের এক আধিকারিক। টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, টাকার অভাবে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। দক্ষিণ-র্পূব রেলের খড়গপুরের ডি আর এম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে প্রথমে রেলের পরিষেবা দেখা হয়। তারপর রাস্তার দিকে নজর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যা রয়েছে। তাই বড় ধরনের কোনও মেরামত করা এখনও সম্ভব হয়নি। রাস্তাটি পরিদর্শন করে অবশ্যই ছোটখাটো গর্তগুলি সারাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

approach road bagnan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE