Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ব্যবহার হয় না ডাম্পিং গ্রাউন্ড, জঞ্জাল জমছে বাসস্ট্যান্ডের গায়ে

বিশাল ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ পড়ে রয়েছে। অথচ, আবর্জনার পাহাড় জমছে রিষড়া বাসস্ট্যান্ডের পিছনেই। সাধারণ পথচারী, বাসযাত্রী, এমনকী ট্রেনযাত্রীরাও প্রতিদিন দু’বেলা ‘পাহাড়’টা দেখে অবাক হন। নাকে রুমাল চাপা দেন। প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু রিষড়া স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মের ধারে থাকা বাসস্ট্যান্ডের পিছনের ওই আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তেই থাকছে। ওই আবর্জনার স্তূপ সরানোর জন্য বহুবার দরবার করা হলেও রিষড়া পুরসভার হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

জঞ্জাল ভরা বাসস্ট্যান্ড। ছবি: প্রকাশ পাল।

জঞ্জাল ভরা বাসস্ট্যান্ড। ছবি: প্রকাশ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রিষড়া শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৪ ০১:০৭
Share: Save:

বিশাল ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ পড়ে রয়েছে। অথচ, আবর্জনার পাহাড় জমছে রিষড়া বাসস্ট্যান্ডের পিছনেই।

সাধারণ পথচারী, বাসযাত্রী, এমনকী ট্রেনযাত্রীরাও প্রতিদিন দু’বেলা ‘পাহাড়’টা দেখে অবাক হন। নাকে রুমাল চাপা দেন। প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু রিষড়া স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মের ধারে থাকা বাসস্ট্যান্ডের পিছনের ওই আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তেই থাকছে। ওই আবর্জনার স্তূপ সরানোর জন্য বহুবার দরবার করা হলেও রিষড়া পুরসভার হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

ওই আবর্জনার পাহাড়ের জন্য যে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়, সে কথা মেনে নিয়েছেন রিষড়া পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান অপরূপা পোদ্দার (আফরিন আলি)। পরিকাঠামোগত নানা সমস্যার কথা তুলে বলেন, “আমরা ওই আবর্জনার স্তূপ সরানোর চেষ্টা করেছিলাম। নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবু যাতে ওই আবর্জনা সরানো যায়, তা নিয়ে ফের চেষ্টা করা হবে।”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় উত্তরপাড়া থেকে চাঁপদানি পর্যন্ত গঙ্গার ধারের ছ’টি পুরসভার জঞ্জাল ফেলার জন্য বৈদ্যবাটির দীর্ঘাঙ্গিতে দিল্লি রোডের ধারে গড়ে ওঠে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’। ওই ছয় পুরসভার মধ্যে রিষড়া অন্যতম। কিন্তু পুরসভা শহরের জঞ্জাল সেখানে নিয়ে যায় না। পুরসভার গাড়ি শহরের জঞ্জাল জড়ো করে বাসস্ট্যান্ডের পিছনেই। তা ছাড়া, আগের দফায় বাম পুরবোর্ডের আমলে বামুনারির কাছে দিল্লি রোডের ধারে সাত বিঘা জমি কেনা হয়েছিল পুরসভার নিজস্ব ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ তৈরির জন্য। সেই জমিও পড়ে রয়েছে।

বছর দশেক আগে রিষড়া স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মের ধারে বাসস্ট্যান্ডটি গড়ে ওঠে। এখান থেকে রিষড়া-চুঁচুড়া (২ নম্বর রুট) এবং রিষড়া-হাওড়া (৫৪/২ নম্বর রুট) বাস ছাড়ে। আবর্জনার জন্য নাজেহাল হন বাসকর্মীরা। বাসস্ট্যান্ডের পাশ থেকে রিষড়া স্টেশন-শ্রীরামপুর রুটের অটো ছাড়ে। তার পাশে রয়েছে রেলের রিজার্ভেশন কাউন্টার। অর্থাৎ, দিনের বেশির ভাগ সময়েই এলাকাটি মানুষের ভিড়ে সরগরম থাকে। কিছুটা তফাতেই রয়েছে জনবসতি। আবর্জনার দুুর্গন্ধে সেখানকার বাসিন্দারাও অতিষ্ঠ হন। কিছু দিন আগে ক্ষুব্ধ বাসমালিক এবং কর্মীরা ওই বাসস্ট্যান্ড বয়কট করেন। তাতেও অবশ্য পুর-কর্তৃপক্ষের এতটুকু হেলদোল হয়নি।

বাস-মলিকদের বক্তব্য, ওই চত্বরে আগাগোড়াই জঞ্জাল ফেলা হত। কিন্তু বাসস্ট্যান্ড যখন তৈরি হয়, তখনও পরিস্থিতি এমন দুর্বিষহ হয়নি। বাস-মলিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলি জেলা বাস-মালিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিক বলেন, “বর্ষায় তো নোংরা জলে বাসস্ট্যান্ড ভেসে যায়। বলা সত্ত্বেও পুরসভা নজর না দেওয়ায় গত বছর আমরাই পে-লোডার দিয়ে যতটা সম্ভব আবর্জনা পরিষ্কার করেছিলাম। কিন্তু বারে বারে তা সম্ভব নয়।”

কেন ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ ব্যবহার হয় না?

পুরসভার দাবি, বামুনারিতে যে জমিটি কেনা হয় তা পঞ্চায়েত এলাকায় হওয়ায় কিছু জটিলতা তৈরি হয়। ফলে, জমিটি ব্যবহার করা যায়নি। এর পরে দীর্ঘাঙ্গির প্রকল্পটি গড়ে ওঠে। সেখানে আবর্জনা ফেলার কথা থাকলেও গাড়ির অভাব-সহ পরিকাঠামোগত সমস্যায় দীর্ঘাঙ্গিতে আবর্জনা নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সুকুমার গড়কড়ি অবশ্য পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগই তুলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dumping ground rishra garbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE