Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বকপোতা সেতুতে ফাটল, যান চলাচলে নিষেধ

দীর্ঘদিন ধরেই জীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছিল যানবাহন। কিন্তু দু’টি স্ল্যাবের মাঝখানে ফাটল ধরা পড়ায় শেষ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধই হয়ে গেল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বকপোতা সেতুতে। দিন পাঁচেক আগে দামোদরের উপরে এই সেতুর ফাটল ধরা পড়ার পরে যান চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি লটকে দেয় পূর্ত (সড়ক) দফতর। ফলে, উদয়নারায়ণপুরের সঙ্গে জগৎবল্লভপুর, ডোমজুড় এবং হাওড়া শহরের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন হুগলির একাংশের মানুষও।

সেতুর মাঝখানে বিপজ্জনক ফাটল। ছবি: সুব্রত জানা।

সেতুর মাঝখানে বিপজ্জনক ফাটল। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উদয়নারায়ণপুর শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০২:৩৬
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরেই জীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছিল যানবাহন। কিন্তু দু’টি স্ল্যাবের মাঝখানে ফাটল ধরা পড়ায় শেষ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধই হয়ে গেল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বকপোতা সেতুতে।

দিন পাঁচেক আগে দামোদরের উপরে এই সেতুর ফাটল ধরা পড়ার পরে যান চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি লটকে দেয় পূর্ত (সড়ক) দফতর। ফলে, উদয়নারায়ণপুরের সঙ্গে জগৎবল্লভপুর, ডোমজুড় এবং হাওড়া শহরের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন হুগলির একাংশের মানুষও।

ওই সেতু দিয়ে আবার কবে যান চলাচল শুরু হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারেননি পূর্ত (সড়ক) দফতরের কর্তারা। ওই দফতরের হাওড়া ডিভিশনের নির্বাহী আধিকারিক সত্যরঞ্জন বসু বলেন, “আমাদের দফতরের ডিজাইনিং অ্যান্ড প্ল্যানিং বিভাগের বাস্তুকারেরা সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। সম্ভব হলে সেতুটি মেরামত করা হবে। তার পরেই যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।”

দামোদরের উপরে বকপোতা সেতু তৈরি হয় ১৯৭৩ সালে। সেতুটি হাওড়ার সঙ্গে হুগলির যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। সেতু দিয়ে প্রতিদিন তারকেশ্বর-হাওড়া, রামপুর-হাওড়া ভায়া বুড়ুল এবং জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর-হরিপাল প্রভৃতি রুটের বাস চলত। উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসার জন্যও হুগলির বাসিন্দাদের এই সেতু পার হতে হয়। শুক্রবার থেকে সব রকম যান চলাচলই বন্ধ। ঘুরপথে রাজাপুর হয়ে বাসগুলিকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। উদয়নায়ারণপুরের দিকে ওই সেতুর সামনের অংশ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দিয়েছে পূর্ত (সড়ক) দফতর।

বহু বছর ধরে বিপজ্জনক হয়ে পড়া পুরনো সেতুটির সংস্কার বা পাশেই একটি নতুন সেতু তৈরির আবেদন জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বার বার রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই দফতরের তৎকালীন মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী সেতুটি পরিদর্শনে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিশ্রুতি দেন, পুরনো সেতুটির পাশে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে পুরনো সেতুটি সংস্কারের জন্য তিনি ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। সেই টাকায় পুরনো সেতুটি কিছুটা সংস্কার করা হয়। একই সঙ্গে নতুন সেতু তৈরির নকশা তৈরি হয়। কিন্তু সেই সেতু এখনও হয়নি।

ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের মাঝামাঝি মোট ছ’টি স্তম্ভের উপরে নতুন সেতুর নকশা এবং খরচ চূড়ান্ত করে তা অর্থ দফতরে পাঠানো হয়। সেচ দফতরও প্রকল্পটি অনুমোদন করে। নকশা অনুযায়ী অর্থ দফতর ১১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু বেঁকে বসেন কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁরা তাঁদের জমির মাঝখান দিয়ে সেতুটি তৈরির পরিকল্পনায় আপত্তি জানান। সে কথা জানতে পেরে পূর্ত দফতর সেতুর নকশা পাল্টায়। ফলে, খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ কোটি টাকায়। ফের ফাইল ফের পাঠাতে হয় অর্থ দফতরের কাছে। অর্থ দফতর দ্বিতীয় দফাতেও তা অনুমোদন করে। তার পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় দু’বছর। এ বিষয়ে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, প্রস্তাবিত নতুন সেতুর অ্যাপ্রোচ রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। পুরো জমি না পেলে সেতুর কাজ শুরু করা যাবে না।

নতুন সেতু এখনও হয়নি। পুরনো সেতু বন্ধ। যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছেন মানুষ। সে কথা মেনে নিয়ে উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা জানিয়েছেন, আগামী ১৩ জুন জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে হাওড়ায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন বকপোতা সেতুর বিষয়টি তাঁর গোচরে আনা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bokpota bokpota bridge crack udaynarayanpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE