রাস্তার ধারে জল সরবরাহের স্ট্যান্ড পোস্টগুলি দীঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও আবার সেগুলি জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে। কোথাও গ্রামের রাস্তায় যানবাহনের চাকার ভারে পাইপে ফাটল ধরেছে। এমনই অবস্থা হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের শঙ্করহাটি ১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শঙ্করহাটি গ্রামে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের তত্ত্বাবধানে গভীর নলকূপ থেকে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য বামফ্রন্ট আমলে ২০০৩ সাল নাগাদ পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী গ্রাম কৃষ্ণনন্দপুর, নরেন্দ্রপুর, মুন্সিরহাট প্রভৃতি এলাকায় একইসময়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। ২০০৫ সাল নাগাদ পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এক বছর কাটতে না কাটতেই শঙ্করহাটি গ্রামে এই পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। অথচ অন্য গ্রামগুলিতে এই পানীয় জল সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
শঙ্করহাটি গ্রামের বাসিন্দা জগদীশ হাটুই, মণিমোহন চক্রবর্তী, দেবাশিস ঘোষ প্রমুখ বলেন, “সেই সময় শঙ্করহাটি গ্রামে গভীর নলকূপের জল সরবরাহের ফলে খুব সুবিধা হয়েছিল। পানীয় জল ছাড়াও বাসন মাজা, কাপড় কাচা, সবই হত। গরমের সময় পুকুর ডোবা শুকিয়ে গেলেও আমাদের চিন্তা ছিল না। শঙ্করহাটি গ্রামের গহলা পাড়া, পাত্রপাড়া, দেপাড়া, মুচিপাড়া, ঘোটে পাড়া, গোপ পাড়া, প্রভৃতি এলাকার সরবরাহের কল থেকে জল পাওয়া যেত। বাড়ি বাড়ি এই জলের লাইন নেওয়ার জন্য বাসিন্দারা উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের সব উদ্যোগ বানচাল হয়ে যায়। ফের জল সরবরাহের জন্য বার বার পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।”
শঙ্করহাটি গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় চার হাজার। টিউবওয়েলের সংখ্যা মাত্র ১৩টি। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে টিউবওয়েলের জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় সরু সুতোর মতো করে জল পড়ছে। এক বালতি জল ভরতে অনেক সময় লাগছে। ফলে গ্রামবাসীরা সমস্যায় পড়ছেন। এই রকম গরম দীর্ঘদিন চলতে থাকলে পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র আকার নেবে বলে গ্রামবাসীরা জানান।
গ্রামবাসীরা আরও বলেন, “নরেন্দ্রপুর-কৃষ্ণপুর মৌজায় এই পাম্পহাউসটি নির্মিত। যার দূরত্ব শঙ্করহাটি গ্রাম থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার। এই দূরত্বে জল সরবরাহ করতে যে ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি দরকার তা বসানো হয়নি। এই জল সরবরাহের পাইপ লাইন নির্মাণে নিযুক্ত কর্মী তথা শঙ্করহাটি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সেখ জাহাঙ্গির বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে এই পাইপলাইন বসানোর ফলেই শঙ্করহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জল সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন মহলে বার বার বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
হাওড়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ বলেন, “এই সমস্যার কথা আমাকে কেউ জানাননি। কেউ এ ব্যাপারে জানালে খোঁজ নিয়ে দেখব।”