Advertisement
E-Paper

সুলতানকেই বরণ উলুবেড়িয়ার

সুলতানেই আস্থা রাখল উলুবেড়িয়া। শুধু ক্ষমতা ধরেই রাখলেন না, এ বার এক লাফে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নিলেন উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের তৃণমূূল প্রার্থী সুলতান আহমেদ।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৪ ০২:৩৯
আবার আপনাদের মাঝে। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুলতান আহমেদ। ছবি: সুব্রত জানা।

আবার আপনাদের মাঝে। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সুলতান আহমেদ। ছবি: সুব্রত জানা।

সুলতানেই আস্থা রাখল উলুবেড়িয়া।

শুধু ক্ষমতা ধরেই রাখলেন না, এ বার এক লাফে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নিলেন উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের তৃণমূূল প্রার্থী সুলতান আহমেদ। পাশাপাশি, শুক্রবার ভোটের ফল প্রকাশের পরে দেখা গেল, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে এই কেন্দ্রে তৃতীয় শক্তি হিসেবে উত্থান ঘটেছে বিজেপি-র।

উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এ দিন প্রতি রাউন্ডের গণনার পরে ব্যারিকেডের বাইরে অপেক্ষারত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের জয়োল্লাস বেড়েছে। উড়েছে সবুজ আবির। চলেছে মিষ্টিমুখ। সুলতান দুপুর পর্যন্ত কলকাতাতেই ছিলেন। বিকেলে যখন গণনাকেন্দ্রে ঢোকেন, কর্মী-সমর্থকদের আবেগের বাঁধ ভাঙে।

২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের জোটপ্রার্থী হিসেবে সুলতান জিতেছিলেন ৯৮ হাজার ভোটে। এ বার তাঁর জয়ের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়াল দু’লক্ষ এক হাজার। তিনি পেয়েছেন মোট ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৬৯৮টি ভোট। একক শক্তিতে লড়াই করে সুলতান যে ভাবে তাঁর জয়ের ব্যবধান বাড়ালেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। সুলতান নিজে অবশ্য বলেন, “কাজের অনুপ্রেরণা আরও বাড়ল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা মানুষ দেখতেই পাচ্ছেন। সে জন্যই তাঁরা আমাকে জেতালেন।”

উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের ফল

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

তৃণমূলের এই জয়ের পিছনে অবশ্য ছাপ্পা ভোট, রিগিং এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে সিপিএম (৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮১৫টি ভোট পেয়ে তারা দ্বিতীয় স্থানে)। দলীয় প্রার্থী সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, “আমরা আগেই বলেছিলাম প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলে আমরা জিতব। কিন্তু তা হল না। নির্বাচনের দিন সন্ত্রাস করে জিতল তৃণমূল।” তৃণমূূল সন্ত্রাসের অভিযোগ মানেনি।

তৃণমূলের সঙ্গে জোট না থাকায় কংগ্রেস কতটা কী করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরাই। দেখা গেল, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। ২০০৯ সালে এই কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছিল ৪২ হাজার ভোট। এ বার পেয়েছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার। সিপিএমের সঙ্গে তাদের ফারাক অনেকটা হলেও জেলার রাজনৈতিক মহলের অনুমান, দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার মতো লড়াইয়ের জমি তৈরি হয়ে গেল বিজেপি-র।

বিজেপি নেতৃত্বও এই ফলে উৎসাহিত। কয়েক মাসের মধ্যেই উলুবেড়িয়া পুরসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে ‘অ্যাসিড টেস্ট’ হিসেবেই দেখছে বিজেপি। দলের হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “নির্বাচনের ফলে প্রমাণিত, মানুষ বিজেপিকে তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে। পুরসভার নির্বাচনে একক ভাবে বোর্ড দখল করার জন্য ঝাঁপাব।”

চতুর্থ স্থান পেয়ে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন আত্মসমালোচনার প্রয়োজন বোধ করছেন। ঘরোয়া আলাপচারিতায় কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছিলেন, জেতা নয়, তাঁদের ভোট বাড়িয়ে নেওয়াই লক্ষ্য। কিন্তু তা হল কোথায়?

২০০৯ সালের লোকসভা এবং ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে লড়ার ফলে কংগ্রেসের নিজস্ব ভোট যে ঠিক কতটা ছিল, সে বিষয়ে সংশয়ে ছিলেন দলের নেতারাই। তাঁরা হিসেবে ধরেছিলেন ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে। ওই বছর জোট হয়নি। লোকসভা কেন্দ্রের অধীন সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীরা মোট ভোট পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৪৩ হাজার। এ বার কংগ্রেস নেতৃত্ব ভেবেছিলেন, অন্তত ওই ভোট অটুট থাকবে। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মিত্র পেয়েছেন মোট ৬৮ হাজার ৮১৫টি ভোট। অসিতবাবুর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র আমতায় কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

দিনের শেষে তাই কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কাজি আব্দুল রেজ্জাক বলেন, “আমরা গণ-আন্দোলন করে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারিনি। আমাদের প্রদেশ নেতৃত্বের আত্মসমীক্ষা করে দেখা উচিত।”

sultan ahmed nurul absar uluberia constituency
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy