Advertisement
E-Paper

সংস্কার করে ইছামতীকে স্রোতস্বিনী করে তোলাই হবে প্রধান কাজ, ইলা

চৈত্রের কাঠফাটা রোদ এড়াতে অন্য দলের প্রার্থীরা যখন সকাল সকাল প্রচার সারছেন, তখন অদম্য তিনি। রোদের চোখরাঙানির পরোয়া না করে দুপুরেই দলবল নিয়ে প্রচারে নেমে পড়ছেন। অনেক প্রার্থীই তো রোদ এড়াতে সকালটা বেছে নিয়েছেন। কিন্তু আপনি কেন এখন? প্রার্থীর সটান উত্তর, “রোদ বলে কী আমার ভোটাররা কাজে বেরোচ্ছেন না! আর আমি রোদ এড়িয়ে প্রচার করব? কথা শেষ করেই হন হন করে কর্মীদের নিয়ে এগিয়ে গেলেন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসপ্রার্থী ইলা মণ্ডল।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৯
ভোট চাইতে বনগাঁ ট-বাজারে কংগ্রেস প্রার্থী। ছবি: নিমার্ল্য প্রামাণিক।

ভোট চাইতে বনগাঁ ট-বাজারে কংগ্রেস প্রার্থী। ছবি: নিমার্ল্য প্রামাণিক।

চৈত্রের কাঠফাটা রোদ এড়াতে অন্য দলের প্রার্থীরা যখন সকাল সকাল প্রচার সারছেন, তখন অদম্য তিনি। রোদের চোখরাঙানির পরোয়া না করে দুপুরেই দলবল নিয়ে প্রচারে নেমে পড়ছেন। অনেক প্রার্থীই তো রোদ এড়াতে সকালটা বেছে নিয়েছেন। কিন্তু আপনি কেন এখন? প্রার্থীর সটান উত্তর, “রোদ বলে কী আমার ভোটাররা কাজে বেরোচ্ছেন না! আর আমি রোদ এড়িয়ে প্রচার করব? কথা শেষ করেই হন হন করে কর্মীদের নিয়ে এগিয়ে গেলেন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসপ্রার্থী ইলা মণ্ডল।

ঘড়িতে বেলা ১টা। রোদের তাপে পায়ের নীচে রাস্তা ফুটছে। কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থীকে দেখে বোঝার উপায় নেই। কর্মীদের নিয়ে দোরে দোরে কড়া নেড়ে নিজেকে চেনাচ্ছেন। ভরদুপুরে অনেক বাড়ির জানলাই বন্ধ। মিছিলের কর্মীদের হাঁকডাকে জানলা ফাঁক করলেই কংগ্রেসপ্রার্থীর গলদঘর্ম সহাস্য মুখে একটাই কথা, “আমি আপনাদের লোক। মনে রাখবেন। ভোটের দিন অবশ্যই বুথে যাবেন।” জানলার ওপারে মাথা সম্মতি জানায়। এগিয়ে গেলেন প্রার্থী। খোলা দোকানে দুপুরের কারণে ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে। দোকানের সামনেই দাঁড়িয়ে পড়লেন প্রার্থী। তবে এ বার কিছু বলতে হল না। দোকানের ভিতর থেকেই ভেসে এল কণ্ঠস্বর, “নমস্কার দিদি। চিন্তা নেই।” প্রতি নমস্কার জানিয়ে কর্মীদের নিয়ে ফের হাঁটা শুরু। চোখে হাল্কা মাইনাস পাওয়ারের চশমা। গলায় দলীয় প্রতীক আঁকা উত্তরীয়, যা দিয়ে মাঝে মাঝেই কপালের ঘাম মুছে নিচ্ছিলেন। রোদের প্রচণ্ড তাপ মাথায় করেই একে একে ঢুঁ মারলেন শহরের কোর্ট রোড, স্কুল রোড, ট-বাজার। সব্জি বিক্রিতা থেকে শুরু করে ফল বিক্রেতা সকলের হাত ধরেই ভিক্ষা ভোটের। প্রচারের পথেই পড়ল মন্দির। ঢুকে নমস্কার করে বেরোতেই সাংবাদিকদের প্রশ্ন, “কি চাইলেন?” ছোট্ট জবাব, “আশীর্বাদ।”

মন্দির থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগোনোর পর ঢুকে পড়লেন মিষ্টির দোকানে। বেঞ্চিতে বসে মিষ্টি খাচ্ছিলেন এক বৃদ্ধা। তাঁকে জড়িয়ে ধরে পায়ে হাতে দিয়ে প্রণাম প্রার্থীর। নিজের পরিচয় দিয়ে ভোটটা তাঁকেই দেওয়ার অনুরোধ জানালেন। বৃদ্ধার হ্যাঁ শুনে দোকান ছাড়ার মুখে কর্মীদের আব্দারে মুখে পুরলেন দুটো কালাকাঁদ। দোকানি এগিয়ে দিলেন জল। তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে গেলেন প্রার্থী। হাঁটতে হাঁটতেই জনতার উদ্দেশে মন্তব্য, “ইছামতী সংস্কার করে তাকে স্রোতস্বিনী করে আপনাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াই হবে আমার প্রধান কাজ।” জানালেন, “কেন্দ্রের টাকায় অতীতেও নদী সংস্কারের কাজ হয়েছে। নির্বাচিত হলে ফের এ বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করব।”

ইছামতী নিয়ে অবশ্য অন্য দলগুলিও এ বার ভোটে সরব। বিজেপি প্রার্থীর ইছামতীতে নেমে কচুরিপানা সরানোর প্রসঙ্গ তুললে কংগ্রেস প্রার্থীর জবাব, “লোকদেখানো প্রচারে আমরা বিশ্বাসী নই। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে উনি ওই ভাবে প্রচার করছেন।”

বসিরহাট কলেজের স্নাতক ইলাদেবী কলেজে পড়ার সময় থেকেই ছাত্রপরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বরূপনগরের গোয়ালবাথানে শ্বশুরবাড়ি। স্বামী তপনবাবুর উৎসাহেই ভোটের ময়দানে। বিধানসভা নির্বাচনের পর বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পুরসভা ও পঞ্চায়েতের অনেক দলীয় নেতাই তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও জেতা নিয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী ইলাদেবী।

বনগাঁর ভোটারদের একটা বড় অংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের। বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল, বিজেপি সব প্রার্থীই মতুয়াদের বড়মা বীণাপানি দেবীর কাছে গিয়েছিলেন আশীর্বাদ নিতে।

আপনি আশীর্বাদ চাইতে যাবেন না? প্রশ্নে একটু ইতস্তত। তবে তা দ্রুত সামলে নিয়ে বললেন, “বড়মার কাছে আশীর্বাদ নিতে ঠাকুরবাড়ি যাব। মায়ের কাছে মেয়ে গেলে অসুবিধার কি? উনি তো সকলের মা।”

loksabha election congress banga simanta mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy