Advertisement
E-Paper

সমীক্ষাই সার, হল না উড়ালপুল

ডানকুনি পেরেছে। এখনও পারল না বৈদ্যবাটি। হুগলির দুই জনপদেই রেললাইনের উপর উড়ালপুল তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। নানা জটিলতা কাটিয়ে ডানকুনিতে উড়ালপুল চালু হয়ে গিয়েছে বছর দুই আগে। অথচ বৈদ্যবাটিতে সেই কাজ এখনও বিশ বাঁও জলে।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০০:৫৩

ডানকুনি পেরেছে। এখনও পারল না বৈদ্যবাটি।

হুগলির দুই জনপদেই রেললাইনের উপর উড়ালপুল তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। নানা জটিলতা কাটিয়ে ডানকুনিতে উড়ালপুল চালু হয়ে গিয়েছে বছর দুই আগে। অথচ বৈদ্যবাটিতে সেই কাজ এখনও বিশ বাঁও জলে।

জি টি রোডের উপরেই বৈদ্যবাটি রেলগেট। হাওড়া-বর্ধমান কাটোয়া শাখার ট্রেন চলে এই লাইনে। চলাচল করে বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেনও। কোনও উড়ালপুল না থাকায় সড়কপথে যাতায়াত করা নিত্যযাত্রীদের অবস্থা শোচনীয়। একবার গেট পড়লে বহুক্ষেত্রেই তা খুলতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। ফলে প্রবল যানজট তৈরি হয়। স্কুল-কলেজ এবং অফিসের ব্যস্ত সময়ে নাজেহাল হতে হয় সকলকে। রেহাই মেলে না হাসপাতালের পথে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীরও। নিত্য যানজট সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই রেলগেটের উপর উড়ালপুল তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় মানুষ। গত কয়েক বছরে এ নিয়ে অবশ্য প্রশাসনিক স্তরে নড়াচড়াও হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই, কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় বৈদ্যবাটিতে উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব নেওয়া হয়। ওই ঘোষণায় আশার আলো দেখেছিলেন স্থানীয় মানুষ। কিন্তু ঘোষণার পরে কাজ বিশেষ এগোয়নি। পরে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে এ নিয়ে ফের ফাইল চালাচলি শুরু হয়। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে তত্‌পর হন। বছর দুয়েক আগে সাংসদ ও পুরপ্রধানের উপস্থিতিতে রেল দফতর এবং রাজ্যের পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে সমীক্ষাও করা হয়। দুই দফতরেই দফায় দফায় বৈঠক হয় বিষয়টি নিয়ে। এ সবের মধ্যেই ডানকুনিতে আটকে থাকা উড়ালপুলের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বৈদ্যবাটি থেকে গিয়েছে আগের অবস্থাতেই।

“উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে আমরা অন্যত্র সরে যাব।
যে কোনও মূল্যে উড়ালপুল হওয়া দরকার।’’

স্থানীয় দোকানদার

কেন এই পরিস্থিতি?

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বৈদ্যবাটিতে উড়ালপুল নিয়ে বৈঠকে পূর্ত দফতরের তরফে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কথা তোলা হয়। সেতুর নীচে যে সব এলাকা পড়বে সেখানে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কী ভাবে দমকল ঢুকবে ওঠে সেই প্রশ্ন। যদিও পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত উড়ালপুলের দু’দিকে যে রাস্তা রয়েছে, তাতে দমকল এবং অন্য গাড়ি অনায়াসেই ওই সব জায়গায় পৌঁছতে পারবে। বৈদ্যবাটি রেলগেট থেকে দু’দিকেই আধ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে প্রস্তাবিত উড়ালপুল। কিন্তু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মনে। স্থানীয় বাসিন্দা দীননাথ ঘোষ বলেন, “সকাল ও সন্ধ্যায় ব্যস্ত সময়ে দীর্ঘ সময় লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পড়ে থাকে। তখন দু’দিকেই গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। এমনকী আটকে থাকে অ্যাম্বুল্যান্সও। তাই উড়ালপুলটা তৈরি হওয়া একান্ত জরুরি।”

রেলগেটের সামনেই অশোক চক্রবর্তীর চালের দোকান। বললেন, “উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে আমরা অন্যত্র সরে যাব। যে কোনও মূল্যে উড়ালপুল হওয়া দরকার।’’ একই মত আশপাশের দোকানদারদেরও। বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, “রেল দফতর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে উড়ালপুল তৈরিতে কোনও বিলম্ব হবে না।’’

উড়ালপুল তৈরিতে সহযোগিতায় তাদের কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে রেলও। এক ধাপ এগিয়ে পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার (শ্রীরামপুর) সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত সপ্তাহে নতুন করে একটি সমীক্ষা হয়েছে। তার রির্পোট যথাস্থানে জমা দেওয়া হয়েছে। এর পরে প্রস্তাবিত উড়ালপুলের নকশা তৈরি করা হবে।’’

পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে সম্ভবত কোনও নির্মাণ ভাঙা পড়বে না। কোনও ক্ষেত্রে জবরদখল থাকলেও আলোচনার মাধ্যমে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ বা পূনর্বাসনের কথা ভাবা হবে।

baidyabati flyover prakash pal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy