Advertisement
E-Paper

শুভেন্দু-ভ্রাতা দিব্যেন্দুর আইনি নোটিস বিজেপির জগন্নাথকে, পোস্ট মুছেই দিলেন সাধারণ সম্পাদক!

শুক্রবারই ওই তালিকা ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন জগন্নাথ। সঙ্গে টিপ্পনী। শনিবার দিব্যেন্দুর আইনজীবী নোটিস পাঠিয়ে জগন্নাথকে জানান, দু’ঘণ্টার মধ্যে পোস্ট না মুছলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

(বাঁ দিকে) দিব্যেন্দু অধিকারী। জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) দিব্যেন্দু অধিকারী। জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৮
Share
Save

প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর আইনি নোটিস পেয়ে সমাজমাধ্যম থেকে কটাক্ষমূলক পোস্ট মুছে দিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, দিব্যেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। একদা তৃণমূলে থাকলেও শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে এবং পরে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল দিব্যেন্দুর। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে অর্জুন সিংহের সঙ্গে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে শুক্রবার। সিবিআই একটি তালিকা পেয়েছে (যা আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেও রয়েছে)। সেই তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে চাকরির জন্য কারা, কত জনের নাম সুপারিশ করেছেন। সেই তালিকায় নাম ছিল দিব্যেন্দুর। ছিল প্রাক্তন আইপিএস তথা পরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভারতী ঘোষের নামও। তালিকায় উল্লেখ রয়েছে, দিব্যেন্দু ১১ জনের চাকরির সুপারিশ করেছিলেন। জগন্নাথ পুরো তালিকাটিই ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘এসএসসি নিয়োগ। যোগ্যরা রাস্তায়, অযোগ্যরা সুপারিশে। সেটিং সেটিং বলে যাঁরা চিৎকার করেন তাঁরাই বলুন।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। জগন্নাথ পোস্টের শেষে লিখেছিলেন, ‘২০১৬ সাল। সকলেই তৃণমূলী সম্পদ। কেউ ছাড় পাবেন না। সময় লাগতে পারে।’

শুক্রবার ওই তালিকা ফেসবুকে পোস্ট করেন জগন্নাথ। শনিবার দিব্যেন্দুর আইনজীবী নোটিস পাঠিয়ে জগন্নাথকে জানান, ওই মামলা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তাধীন। এই ধরনের পোস্ট তাঁর মক্কেলের সামাজিক সম্মান, পরিচয়কে কালিমালিপ্ত করেছে। নোটিসে স্পষ্ট লেখা হয়, দু’ঘণ্টার মধ্যে পোস্টটি মুছে না দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। নোটিসটি ইমেলে পাঠানো হয়েছিল।

ঘটনাচক্রে, সেই নোটিস পাঠানোর খানিক ক্ষণের মধ্যেই দেখা যায় জগন্নাথের ‘ভেরিফায়েড’ ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টটি উধাও। সূত্রের খবর, জগন্নাথ নিজেই পোস্টটি মুছে দিয়েছেন। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরে শোরগোল পড়েছে। জগন্নাথকে ওই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

গত বছর জুন মাসে বিকাশ ভবনের ওয়্যারহাউসে অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। সেখানে তল্লাশি চালিয়েই ওই নথি উদ্ধার হয়েছিল। ওই তালিকা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠানো হয়েছিল। দিব্যেন্দু, ভারতী বাদ দিয়ে তালিকায় আরও অনেকের নাম রয়েছে। নাম রয়েছে বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোতুলপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শ্যামল সাঁতরা, ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা, স্বরূপনগরের বিধায়ক বীণা মণ্ডলদের। দিব্যেন্দু এবং ভারতী ছাড়া ওই তালিকাভুক্ত সকলে এখনও তৃণমূলেই আছেন। ফলে জগন্নাথের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল।

২০১৬ সালে সাংসদ পদ ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় যোগ দেন শুভেন্দু। তাঁর ছেড়ে আসা তমলুক আসনে উপনির্বাচনে দিব্যেন্দুকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি জিতে সাংসদ হন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ফের তমলুকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন দিব্যেন্দু। ২০২০ সালে শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরে দিব্যেন্দু তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ান। তবে তখন তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেননি। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে তিনি খাতায়-কলমে বিজেপিতেই আছেন। আবার একদা ‘মমতা-ঘনিষ্ঠ’ আইপিএস ভারতীও বিজেপিতে বেশ কয়েক বছর হল। জগন্নাথের পোস্ট দেখে অনেকেই এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন যে, একদা তৃণমূলে থাকলেও দিব্যেন্দু এবং ভারতী দু’জনেই এখন বিজেপিতে। একজন বিজেপি নেতার কি তাঁদের এ ভাবে নিশানা করা উচিত? বিশেষত, এই বাক্যটি লেখা উচিত যে, ‘কেউ ছাড় পাবেন না’? আইনি নোটিস পেয়েই তিনি পোস্ট মুছে দিয়েছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাব দেননি জগন্নাথ। এমনকি, নোটিস তিনি পেয়েছেন কি না, তা-ও বলতে নারাজ বিজেপির লোকজন। তবে বিজেপির একাংশের দাবি, দিব্যেন্দুদের তরফে বিজেপির ‘উচ্চ’ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তার পরেই পোস্ট উধাও হয়ে যায়। অন্য দিকে, দিব্যেন্দু শিবিরের বক্তব্য, তাঁরা আইনি চিঠি দেওয়াতেই পোস্ট মুছে দিয়েছেন জগন্নাথ। তবে জগন্নাথ পোস্ট মুছে দেওয়ায় তাঁরা এ বিষয়ে আপাতত আর এগোচ্ছেন না।

BJP TET Dibyendu Adhikari Suvendu Adhikari

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}