Advertisement
E-Paper

দিলীপবাবুর ‘প্রত্যাবর্তন’! আট মাস পর পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বৈঠকে ঘোষ, ডাক পেলেন শাহি আলোচনায়, বরফ কি গলছে?

দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন দিলীপ। তার পর থেকেই রাজ্য বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। ভোটের মুখে এ বার কি সেই বরফ ধীরে ধীরে গলতে শুরু করেছে?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:২১
(বাঁ দিকে) মেদিনীপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

(বাঁ দিকে) মেদিনীপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বৈঠকে রাজ্য বিজেপির অন্য নেতাদের সঙ্গে ডাক পেলেন দিলীপ ঘোষও। আট মাস পরে প্রকাশ্যে তাঁকে বিজেপির কোনও বৈঠকে দেখা গেল। গত এপ্রিল মাসে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন দিলীপ। তার পর থেকেই রাজ্য বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। ভোটের মুখে এ বার সেই বরফ ধীরে ধীরে গলতে শুরু করেছে বলে অনেকের মত। সেই কারণেই কলকাতায় শাহের বৈঠকে তাঁকেও ডাকা হল।

অমিত শাহের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার মুখে সল্টলেকের হোটেলে দিলীপ ঘোষ।

অমিত শাহের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার মুখে সল্টলেকের হোটেলে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়কদের নিয়ে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি হোটেলে বুধবার বৈঠকে বসেছেন শাহ। সেখানে ডাকা হয়েছে দলের প্রাক্তন সাংসদদেরও। দিলীপ ছাড়াও রয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহ, সুভাষ সরকার, নিশীথ প্রামাণিকেরা। তবে গত কয়েক মাসে দলের নানা কর্মসূচিতে এঁরা কেউ দিলীপের মতো ব্রাত্য ছিলেন না। মমতার সঙ্গে দিঘায় সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হোক বা রাজ্য বিজেপির শীর্ষ স্তরের কোনও বৈঠক, কোথাও দিলীপকে ডাকা হয়নি। এমনকি, গত ২৫ ডিসেম্বর অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারে রাজ্য বিজেপির আদি নেতাদের নিয়ে যে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল, দিলীপ সেখানেও ডাক পাননি। বুধবার শাহের এই বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি তাই আলাদা তাৎপর্য বহন করছে।

বিজেপি সূত্রে খবর, জাতীয় গ্রন্থাগারের সম্মেলনে দিলীপকে যে একেবারেই ডাকা হয়নি, তা নয়। প্রায় ৮০০ জন ওই সম্মেলনের জন্য ফোন পেয়েছিলেন। বিজেপির নিজস্ব কলসেন্টার থেকে তাঁদের ফোন করা হয়েছিল। দিলীপকেও সেখান থেকেই ফোন করা হয়। তবে শীর্ষ নেতাদের আলাদা করে সম্মেলনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দিলীপ সেই পৃথক ফোনটি পাননি। তাই জাতীয় গ্রন্থাগারে যাননি। তার এক সপ্তাহের মাথায় শহরে শাহের বৈঠকে দিলীপকে দেখা গেল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের জন্য দিলীপকে মঙ্গলবার রাতে ফোন করেছিলেন খোদ সুনীল বনসল, যিনি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক।

জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে যাওয়ার পর নাম না-করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন দিলীপ। তাঁর সঙ্গে বিরোধী দলনেতার ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। কিন্তু দিলীপ সে সময় দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে একাধিক মন্তব্য করেছিলেন। তার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব রচনা করেছিল রাজ্য বিজেপি। সূত্রের খবর, দিল্লি থেকেই সেই নির্দেশ এসেছিল। বলা হয়েছিল, দিলীপের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ কথাও সত্যি যে, দূরত্ব সত্ত্বেও দিলীপের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেয়নি শাহের মন্ত্রক। দলের দেওয়া গাড়িই এখনও তিনি ব্যবহার করেন। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দল নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে দিলীপকে। তিনি একটাই কথা বারবার বলেছেন— দল যা দায়িত্ব দেবে, তা তিনি পালন করবেন। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দিলীপের সেই ‘দূরত্ববাস’ ঘুচতে চলেছে, শাহের বৈঠকে তাঁর আমন্ত্রণ থেকে সেই ইঙ্গিতই মিলল।

বুধবারের বৈঠক শেষে বেরোনোর পর সাংবাদিকেরা ঘিরে ধরেছিলেন দিলীপকে। তবে শাহি বৈঠক নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জানিয়েছেন, তাঁদের কেবল শুনতে ডাকা হয়েছিল। দিলীপ বলেছেন, ‘‘যা বলার দল বলবে।’’ ২০২৬ সালের ভোটের আগে রাজ্য বিজেপির কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেখা যাবে তাঁকে? দিলীপ সেখানেও সতর্ক। বলেন, ‘‘সেটা দল বুঝবে।’’

Dilip Ghosh Amit Shah BJP West Bengal BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy