Advertisement
E-Paper

দিলীপ বলছেন সভা হবেই, কৈলাস বলছেন রায় বুঝে  

“বিজেপি গণতান্ত্রিক দল। আদালতের রায়কে আমরা মান্যতা দেব। রায় না আসা পর্যন্ত সভার কাজও স্থগিত থাকবে।” বিজেপির ‘রথযাত্রা’ নিয়ে এ ভাবেই কার্যত দ্বিধাবিভক্ত এবং বিভ্রান্ত দলীয় নেতৃত্ব।

স্যমন্তক ঘোষ ও নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৩০
দিলীপ ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। —ফাইল চিত্র।

দিলীপ ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাইকোর্টের বৃহস্পতিবারের রায়ে বিজেপির রথযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার ব্যাপারে এখনও আশাবাদী রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রায় জেনে এ দিন তাঁর বক্তব্য, “ডিভিশন বেঞ্চে পরবর্তী আবেদনের রায় না আসা পর্যন্ত রথ বেরোবে না। কিন্তু সভা হবেই।” একই প্রশ্নে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় অবশ্য বলেছেন, “বিজেপি গণতান্ত্রিক দল। আদালতের রায়কে আমরা মান্যতা দেব। রায় না আসা পর্যন্ত সভার কাজও স্থগিত থাকবে।” বিজেপির ‘রথযাত্রা’ নিয়ে এ ভাবেই কার্যত দ্বিধাবিভক্ত এবং বিভ্রান্ত দলীয় নেতৃত্ব।

এ দিন আদালতের নির্দেশে রথযাত্রা আপাতত স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরেও সভা করার সিদ্ধান্তে দিলীপবাবু অনড়। তাঁর যুক্তি, রথযাত্রা এবং সভা দু’টি আলাদা কর্মসূচি। তিনি বলেন, ‘‘গত ছ’মাস ধরে সভার প্রস্তুতি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বাইরে থেকে প্রচুর লোক চলে এসেছে। গাড়ির ব্যবস্থা হয়েছে। এখন এই অবস্থায় কী ভাবে সভা বাতিল করব?’’ কোচবিহারের পর নামখানা এবং তারাপীঠে পরের দু’টি প্রস্তাবিত রথযাত্রা উপলক্ষেও শাহের সভা করার কথা। সে বিষয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘যেখানে যেখানে সভার জন্য মাঠ নেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেখানে সেখানে সভা হবে।’’

এ দিন সকাল থেকেই রথযাত্রা ঘিরে বিজেপির প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। মাঠে তৈরি হয়ে গিয়েছে ব্যারিকেড। এরই মধ্যে খবর আসে, জেলা প্রশাসন আদালতকে জানিয়েছে, বিজেপির রথযাত্রা ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। ফলে প্রশাসন অনুমতি দিতে চায় না। তবে এ বিষয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই মন্তব্য করবেন না। একই কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক। যার প্রেক্ষিতে দিলীপবাবু তখন বলেন, “প্রশাসন যা-ই বলুক, রথযাত্রা হবেই।” জবাবে রাজ্যের মন্ত্রী এবং তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ওদের রথ গণতন্ত্রের নয়, দাঙ্গার। রথের জন্য কোচবিহারের ভাবাবেগে আঘাত লাগলে আমরাও রাস্তায় নেমে পাল্টা জবাব দেব।”

চিত্র বদলাতে শুরু করে বিকেলে আদালতের নির্দেশ আসার পর থেকে। জরুরি বৈঠকে বসেন কৈলাস, কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন প্রমুখ। খানিক পরে বৈঠকে যোগ দেন দিলীপবাবু। এর পরেই বিভ্রান্তির সূত্রপাত। এ দিকে বৈঠক চলাকালীন দলের আর এক নেতার মন্তব্য, “প্রশাসনের বক্তব্যেই পরিষ্কার— রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। তাই কোনও দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারার ভয় পাচ্ছে তারা।” যদিও তৃণমূল সাংসদ এবং কোচবিহার যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপির কর্মসূচি গণতান্ত্রিক নয়। সাম্প্রদায়িক।”

বিজেপি সূত্রের খবর, জরুরি বৈঠকে আদালতের রায় নিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন দলের শীর্ষ নেতৃত্বই। দিলীপ শিবির দাবি করে, আদালত রথে ‘সাময়িক’ স্থগিতাদেশ দিয়েছে। কিন্তু তাতে সভার কাজ আটকায় না। অন্য দিকে, কৈলাস শিবিরের ব্যাখ্যা, সভা রথেরই অংশ। ফলে আদালতের রায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। এ দিকে, শুক্রবারের সভায় আসার কথা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি শাহের। তিনি কি আসবেন? দিলীপবাবুর বক্তব্য, “শাহের সূচির পরিবর্তন হয়নি।” কৈলাসের

মন্তব্য, “শাহ কী করবেন, সে সিদ্ধান্ত তাঁর। আমরা কিছু বলব না।” দিলীপবাবুর মন্তব্য নিয়ে কৈলাসকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর সাফ জবাব, “উনি দেরিতে বৈঠকে ঢুকেছেন। সে জন্য দলের সিদ্ধান্ত তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়।”

Kailash Vijayvargiya Dilip Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy