Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dilip Ghosh

BJP Bengal: ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে না পারার জন্য ক্ষমা চাইলেন সুকান্ত, খোঁচা দিলীপকে?

নিজের পূর্বতন রাজ্য সভাপতি এবং অধুনা দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার বীরভূম থেকে জেলা সফর শুরু করেছেন সুকান্ত।

বীরভূমে এক মঞ্চে দিলীপ এবং সুকান্ত।

বীরভূমে এক মঞ্চে দিলীপ এবং সুকান্ত। ছবি: টুইটার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২১ ০৫:০৮
Share: Save:

ভোটের পরে দলের আক্রান্ত কর্মীদের সকলের পাশে দাঁড়াতে না পারার জন্য ‘ক্ষমা’ চাইলেন বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নিজের পূর্বতন রাজ্য সভাপতি এবং অধুনা দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার বীরভূম থেকে জেলা সফর শুরু করেছেন সুকান্ত। বীরভূমের সিউড়িতে দলীয় কর্মীদের এ দিন তিনি বলেন, “ভোটের পর হয়তো আমরা সবার পাশে দাঁড়াতে পারিনি। আমাদের অনেক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তাঁদের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। আমি হাতজোড় করে তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তাঁদের বিপদের সময়ে পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দাঁড়াতে পারিনি।” ওই কর্মিসভাতেই দিলীপের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “যুবকদের হাতে বিজেপির নেতৃত্ব। এক দিকে মেদিনীপুর থেকে শুভেন্দু অধিকারী, অন্য দিকে বালুরঘাট থেকে সুকান্ত মজুমদার। যুবকদের এই নেতৃত্ব মানতে হবে। তাঁদের নেতা মেনে নিয়ে রাজ্যে এগিয়ে যেতে হবে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সুকান্ত যে সময়ে দলীয় কর্মীদের বিপদে পাশে দাঁড়াতে না পারার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, সেই সময়ে দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ। অর্থাৎ, সুকান্তের ওই মন্তব্যে দিলীপের প্রতি খোঁচা রয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের আরও অভিমত, দিলীপ নিজের ওই মন্তব্যে বিজেপির প্রবীণ নেতা-কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন।

সিউড়ির কর্মিসভায় সুকান্ত দলের কর্মীদের সামনে চারটি কর্তব্য বেঁধে দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ, আসন্ন পুরভোটের জন্য এখন থেকে কোমর বাঁধতে হবে, আগামী লোকসভা ভোটে দলের আসন সংখ্যা ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২০-তে নিয়ে যেতে হবে, রাজ্যে দলের প্রাপ্ত ভোটের হার কোনও ভাবেই কমতে দেওয়া যাবে না এবং শুধু ভোটের স্বার্থে নয়, নিজেদের ভূমি রক্ষার স্বার্থে লড়াই করতে হবে। বিজেপি কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার নির্দেশও এ দিন দিয়েছেন দলের নতুন রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত বলেন, “আমাদের একত্রিত হতে হবে। নীচের স্তরে দলের নেতার বিরুদ্ধে কথা না বলে তৃণমূলের নেতার বিরুদ্ধে কথা বলা অভ্যাস করুন। আর দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে বলতেই হলে উপরের স্তরে বলুন। নিজের দায়িত্ব ভাল ভাবে পালন করুন। সেই গণ্ডির বাইরে যাবেন না।”

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আক্রমণের অভিযোগ তুলে আসছে বিজেপি। সুকান্ত এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গোটা রাজ্যে আমরা ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। বীরভূমে আমরা ৪৩-৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। এই মুহূর্তে আমরা যদি ঘরে ঢুকে যাই, তা হলে সেই সমস্ত লোকের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে, যাঁরা আমাদের সাহস করে ভোট দিয়েছেন। রাজ্যে যে ৩৮ শতাংশ ভোট আমরা পেয়েছি, তা থেকে পিছু হঠার কোনও জায়গাই নেই।” এক ধাপ এগিয়ে তাঁর আরও মন্তব্য, “আমাদের আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কী হবে? পুলিশ দিয়ে পেটাচ্ছে। কত মামলা তো হয়েইছে। এখনও হবে। যখন মামলা খেতেই হবে, শুধু মার খেয়ে নয়, পাল্টা মার দিয়ে মামলা খাওয়া ভাল।” তৃণমূলের প্রতি সুকান্তর হুঁশিয়ারি, “তৃণমূল কংগ্রেসের যে নেতারা গুন্ডামি, মস্তানি করেন, তাঁদের নাম নিয়ে আমার মুখটা নোংরা করতে চাই না। শুধু তাঁদের বলব, “প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে। আর সময় পরিবর্তনশীল। চিরকাল কারও সমান নাহি যায়। তাই সময় যখন আসবে, তখন পেটে খেলে পিঠে সয়, এই ফর্মুলা প্রয়োগ হবে।”

সুকান্তর হুঁশিয়ারিতে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “মারতে গেলে হাতের দরকার হয়। হাতের কব্জিটাই যদি ভেঙে যায়? ময়দানে থেকে এ সব করুক, ভাল লাগবে।”

দলীয় কর্মীদের ভূমি রক্ষার কর্তব্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুকান্ত আফগানিস্তানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “সে দেশে তালিবানদের উত্থানের ফলে অনেক সাধারণ মানুষ পালিয়ে গিয়েছেন। এমনকি, সাংসদ ও রাষ্ট্রপতিও পালিয়েছেন। অর্থাৎ, মাটি হারালে ধর্ম, রাজনীতি, সংস্কৃতি— সব হারাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh Sukanta Majumdar BJP Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE