Advertisement
E-Paper

জেলে যাবেন মমতাও, দাবি এ বার দিলীপের

দিলীপ মোদী-মমতার বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করায় বিড়ম্বনায় বিজেপি শিবিরও। বিতর্ক এড়াতে এ দিন দিলীপের ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি রাজ্য বিজেপির নেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৫
বিতর্কে জড়ালেন দিলীপ ঘোষ।

বিতর্কে জড়ালেন দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।

ফের বেপরোয়া মন্তব্যে বিতর্কে জড়ালেন দিলীপ ঘোষ। এক দিকে তাঁর ঘোষণা, কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শাসক দলের তাবড় নেতা-মন্ত্রীদেরই জেলে যেতে হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে হবে জেলেই! কিন্তু একই সঙ্গে এই তদন্ত থেকে বাঁচতে মুখ্যমন্ত্রী ‘দাড়িওয়ালা সাধুবাবা’র কাছে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বিড়ম্বনায় ফেলেছেন তাঁর নিজের দলকেও! দিলীপের ওই মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিই ইঙ্গিত বা কটাক্ষ রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার অবশ্য মন্তব্য, ‘‘বাংলা সম্পর্কে দিলীপবাবুদের কোনও ধারণা নেই, প্রলাপ বকছেন! বাংলার মানুষকে চেনেন বলেই তৃণমূল নেত্রী আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও শক্তির ক্ষমতা নেই তাঁকে জেলে রাখার। তিনি জেল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবেন!’’

বিজেপির আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরের ‘নবান্ন চলো’ কর্মসূচির সমর্থনে রবিবার মেদিনীপুরে মিছিলে ছিলেন সাংসদ দিলীপ। মিছিল শেষে সভায় তিনি বলেন, ‘‘দিদি বুঝতে পেরেছেন, ইডি যদি এসে ধরে, তা হলে কে বাঁচাবে? তাই দিল্লি গিয়েছিলেন, ওই দাড়িওয়ালা লোকটার কাছে! বাঁচাও সাধুবাবা, বাঁচাও সাধুবাবা বলেছেন! তবে সাধুবাবা বলছেন, না, আর বাঁচাতে পারব না! এটা আমার হাতের বাইরে। আমার এত টাকা ঝেড়েছো। আমি আর বাঁচাতে পারব না। ঝেড়ে ফাঁক করে দিয়েছো!’’

দিলীপের আরও বক্তব্য, ‘‘কষ্ট সবে শুরু। আপনার ভাইরা যেমন ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে জেলের দিকে, আপনার গতিও তা-ই হবে! লালুপ্রসাদ মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন, রেলমন্ত্রীও ছিলেন। দিদিমণিরও দু’টো ডিগ্রি ছিল। শেষ কোথায়? দমদম সেন্ট্রাল জেল অপেক্ষা করছে দিদিমনির জন্য সেজেগুজে! তাঁকে স্বাগত করার জন্য।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দিদিমণি যাঁর যাঁর নাম বলেছেন, সেই ক’টাকে কিন্তু তুলবেই (ইডি কিংবা সিবিআই)। অভিষেকের নাম বলেছেন? যুবনেতা না থাকলে পার্টির মিটিং জেলে জমবে না। সবাইকে নিয়ে যেতে হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকও ওখানে হবে। আগে কালীঘাটটা সামলান!’’

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘যা বলছেন, এ সব প্রলাপ! এর কোনও জবাব হয়! দল হিসেবে তৃণমূলের লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। আবার প্রশাসনিক স্তরে কেন্দ্রের সঙ্গে ন্যূনতম সমন্বয় রাখতে হয় সরকারকে। মুখ্যমন্ত্রী সেই কাজই করছেন। বাজে কথা বলে বিজেপি এক বার রাজ্যের মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বিজেপির না আছে বিশ্বাসযোগ্যতা, না আছে এখানে জনভিত্তি। দিলীপ ঘোষেরা ফাঁকা হুঙ্কার দিয়ে চলেছেন!’’ তাঁর আরও চ্যালেঞ্জ, ‘‘কেলেঙ্কারি, দুর্নীতিতে অভিযুক্তেরা তাঁর দলে আছেন, বাঁচার জন্য গিয়েছেন। সাহস থাকলে দিলীপ তাঁদের আগে সিবিআই-ইডি’র হাতে তুলে দিন! তার পরে অন্যদের নিয়ে বলবেন।’’

দিলীপ মোদী-মমতার বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করায় বিড়ম্বনায় বিজেপি শিবিরও। বিতর্ক এড়াতে এ দিন দিলীপের ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি রাজ্য বিজেপির নেতারা।

মেদিনীপুরে দিলীপের এ দিন আরও বক্তব্য, ‘‘দিদিমণি মিটিংয়ে বলছেন, আমার বাড়িতে যদি ইডি আসে, আপনারা বেরোবেন তো? কেন দিদি? আমি তো বলছি না যে, আমার বাড়িতে ইডি আসবে। ইডি কি জামাই না কি? যার তার বাড়ি চলে যাবে! ইডি কার বাড়িতে যায়, যার বাড়িতে টাকার গন্ধ পায়। আপনি তো স্বচ্ছতার প্রতীক। আপনি ইডি-র ভয় করছেন কেন? আসলে ডাম মে কুছ কালা হ্যায়!’’

তৃণমূল নেতা তাপস রায় পাল্টা বলেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের স্পর্ধা বেড়েই চলেছে! তিনি যা বলছেন, এটা রাজনৈতিক নেতার মতো কথা নয়। রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়ে, দলে কোণঠাসা হয়ে এখন ভেসে থাকার জন্য এই সব মন্তব্য করছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য মানুষ পছন্দ করছেন না। এই ধরনের হুমকি দিয়েই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে দিলীপবাবুদের ভরাডুবি হয়েছিল। বাংলার মানুষ আবার তাঁদের একই জবাব দেবেন।’’

Dilip Ghosh Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy