E-Paper

রিঙ্কু-পুত্রের মৃত্যু নিয়ে ভিন্নমত দিলীপ-রাজার

দিলীপের দাবির সঙ্গে ভিন্নমত রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের স্বামী রাজা। তাঁর দাবি, “আসলে আমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে ছেলে মায়ের উপরে পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। মা বিয়ে করে চলে যাচ্ছে। বুঝতে না দিলেও ও কষ্টে ছিল।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ ০৭:৫৩
মঙ্গলবার মৃত্যু হয় দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয়ের।

মঙ্গলবার মৃত্যু হয় দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয়ের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘পুত্র-শোকে’র কথা জানিয়েছিলেন গত সন্ধ্যায়। সকাল হতে না হতেই সেই পুত্রের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য বিতর্ক উস্কে দিল। যদিও ছেলের মায়ের পুনর্বিবাহকেই কার্যত দায়ী করলেন প্রয়াত সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের বাবা রাজা দাশগুপ্ত।

ইকো পার্কে প্রাতর্ভ্রমণ সেরে দিলীপ বুধবার বলেছেন, “পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বাকি ময়না তদন্তের সম্পূর্ণ রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। এক জন সব দিক থেকে সুস্থ-সবল ছেলে, হঠাৎ করে কেন এই রকম হল, কী চলছিল ভিতরে, সব তো জানা সম্ভব নয়। আজ যুব সমাজের মধ্যে আমরা যে নেশার প্রভাব দেখছি, এটা তার একটা নমুনা।” তাঁর সংযোজন, “কত দূর কী করেছে, কোনও নেশা নিয়েছিল কি না, সে সব তো কিছু বলতেই পারেনি। তার আগেই শেষ হয়ে গেল। কিছু করার সুযোগ ছিল না। আগামী দিনে বিষয়টা বেরোবে। একটা বড় শিক্ষা দিয়ে গেল আমাদের সবার জন্য।’’ দিলীপের মতে, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে সেটা জানা দরকার। তাকে মানুষ করে দেওয়া মানে শুধু লেখাপড়া শিখিয়ে, চাকরি পেয়ে গেল, সেখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তার পরেও এত বড় ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।” সেই সঙ্গেই সৃঞ্জয় সম্পর্কে তিনি স্পষ্ট দাবি করেছেন, “বহু দিন ধরে ড্রাগ (মাদক) নিতো। ওর কাউন্সিলিং চলছিল। ওর অফিসের চিকিৎসক দেখছিলেন।”

তবে দিলীপের দাবির সঙ্গে ভিন্নমত রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের স্বামী রাজা। তাঁর দাবি, “আসলে আমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে ছেলে মায়ের উপরে পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। মা বিয়ে করে চলে যাচ্ছে। বুঝতে না দিলেও ও কষ্টে ছিল। তাই সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিল না। আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল, বাবা, আর কিছু বছর পরে আমিও বিয়ে করব। মা বলছে, আবার একা হয়ে যাবে। মা একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মা যদি ভাল থাকে, তা হলে অবশ্যই ভাল।” রাজার মন্তব্য, “বাহ্যিক ভাবে ও হয়তো সবাইকে দেখিয়েছে যে, ও বিয়েটা মেনে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো মেনে নিতে পারেনি। একেবারে একা হয়ে গিয়েছিল। বাবার কাছ থেকেও চলে এল, মা-ও চলে গেল। গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিল ছেলেটা।” তবে একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, “মৃত্যুর কারণ নিয়ে আমার ধোঁয়াশা রয়েছে। সাধারণ মৃত্যু বলে আমার মনে হয় না। খুব হাসিখুশি, সবার সঙ্গে কথা বলতো, কিন্তু ব্যথাটা বলতো না কাউকে। না হলে মায়ের বিয়ের দিন বাইরে চলে যেত না! সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, মেনে নিয়েছিল। আবার আমাকে বলেছিল, আমি থাকব না, দিঘা চলে যাচ্ছি। আলাদা করে আর কী করে বলবে! ও তো ছেলে, সবটা তো আর ভাঙতে পারে না! কারণটা বুঝে নিতে হবে।”

দিলীপ-রাজার এই দাবি, পাল্টা দাবির মধ্যেই সৃঞ্জয়ের মৃত্যুর কারণ নিয়ে অন্য একটি তত্ত্ব সামনে এনেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি এক মহিলার সমাজ মাধ্যমের পোস্ট সামনে এনে তাঁকে দিলীপ-রিঙ্কুর শুভানুধ্যায়ী বলে দাবি করেছেন। সেই পোস্টে ওই মহিলা দাবি করেছেন, সৃঞ্জয়য়ের এক বান্ধবী তাঁকে বিভিন্ন ভাবে বিরক্ত করতেন। অর্থনৈতিক ভাবেও বিব্রত করতেন। এমনকি, ঘটনার রাতে সৃঞ্জয়ের বাড়িতে যাওয়ার কারণ নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

যদিও কুণাল সমাজ মাধ্যমে ওই পোস্ট ‘শেয়ার’ করেও রিঙ্কু ও দিলীপকে সমবেদনা জানিয়েছেন। এমনকি, সমাজ মাধ্যমে একাংশের রিঙ্কুকে টানা আক্রমণের প্রতিবাদ করে লিখেছেন, ‘কিছু জানোয়ার যে ভাবে এই নিয়ে পুত্রহারা রিঙ্কুকে আক্রমণ করল, তাতে স্পষ্ট, হাতে আধুনিক ফোন থাকলেই সমাজের সবাই সভ্য হয় না’!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dilip Ghosh Death Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy