Advertisement
১১ মে ২০২৪

‘অভব্যতা’র নালিশ, সরলেন নাট্য প্রশিক্ষক

ব্রাত্যবাবু মিনার্ভা নাট্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের পরিচালন কমিটিরও সদস্য। তিনি এখন বিদেশে রয়েছেন। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি আংশিক শুনেছি। দেশে ফিরে বিশদে খোঁজ নেব।’’

বর্ধমানের রবীন্দ্রভবনে মিনার্ভা নাট্যচর্চা কেন্দ্র ও তথ্য দফতর-কর্তাদের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমানের রবীন্দ্রভবনে মিনার্ভা নাট্যচর্চা কেন্দ্র ও তথ্য দফতর-কর্তাদের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৩
Share: Save:

নাট্য-প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগে এক দল তরুণ-তরুণী হাতজোড় করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন— সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছড়াচ্ছিল ভিডিওটা। মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের পরিচালনায় বর্ধমানের রবীন্দ্র ভবনের প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রেমাংশু রায় নামে ওই প্রশিক্ষক তাঁদের কুপ্রস্তাব দিচ্ছেন বলে সেখানে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। ভিডিও বার্তাটি ‘ভাইরাল’ হতেই প্রেমাংশুবাবুকে সরিয়ে দিল নবান্ন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযোগকারী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন পূর্ব বর্ধমানের তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী এবং মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের প্রশিক্ষক কাজল চক্রবর্তী। বর্ধমানের নাট্য-নির্দেশক ও কর্মীরা তাঁদের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন। কুশলবাবু বলেন, ‘‘তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের নাট্য প্রশিক্ষণ বিভাগের নির্দেশনায় নাটকের সব কাজ থেকে ওই প্রশিক্ষককে সরানো হয়েছে।’’ কাজলবাবু বলেন, ‘‘নন্দন-সহ কলকাতার সব প্রেক্ষাগৃহে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, প্রেমাংশু রায় মিনার্ভার নাম করে কোনও কাজ করতে পারবেন না।’’

রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে দুই বর্ধমান ও বীরভূম জেলার ২১ জনকে নিয়ে ওই নাট্য প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছিল ৮ অক্টোবর থেকে। শেষ হওয়ার কথা আজ, শুক্রবার। বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশিক্ষক প্রেমাংশুবাবুর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন প্রেমাংশুবাবু। ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। তাঁদের রাতে ঘরে ডেকে পাঠাচ্ছেন। প্রতিবাদ করায় খুনের হুমকি দিয়েছেন। কথায়-কথায় মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নাম করে ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

ওই শিক্ষার্থীদের দাবি, শিবিরের প্রথম দিন থেকেই এমন আচরণ করছেন প্রেমাংশুবাবু। সহ্যের সীমা ছাড়ানোয় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। পুলিশে জানালেন না কেন? তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের অভিযোগ শোনার পরেই মিনার্ভা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেন। তাই আর পুলিশের কাছে যাইনি।’’

ব্রাত্যবাবু মিনার্ভা নাট্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের পরিচালন কমিটিরও সদস্য। তিনি এখন বিদেশে রয়েছেন। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি আংশিক শুনেছি। দেশে ফিরে বিশদে খোঁজ নেব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও দিনই কোনও অন্যায়কে সমর্থন করিনি। আজও করছি না।’’ নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘বারবার নিষেধ সত্ত্বেও মদ্যপ অবস্থায় প্রশিক্ষণ, একাধিক মহিলাকে রেপার্টরিতে সুযোগ দেওয়ার নাম করে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওঁর (‌‌‌‌প্রেমাংশুবাবু) বিরুদ্ধে। ওঁকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।’’

এ দিন প্রেমাংশুবাবুর দু’টি মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও সেগুলি বন্ধ ছিল। প্রতিক্রিয়া জানতে এসএমএস করেও জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE