Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাতে ঠান্ডা, দিনে গরমে রোগের পৌষ মাস

এ বার পারদ কেমন খামখেয়ালি তার স্পষ্ট উদাহরণ শনি ও রবিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ফারাক। শনিবার কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা থিতু হয়েছিল ১৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

দিনের বেলা রোদে বেরোলে বেশ গরম লাগছে। রাত বাড়লেই আবার উত্তুরে হাওয়ার স্পর্শে শীত-শীত ভাব। ভোরবেলা বিছানা ছেড়ে যাঁরা হাঁটতে বেরোন, তাঁদের গায়ে চাপাতে হচ্ছে গরম জামা। মাঘের মাঝামাঝি শীতের এ বার বিদায় নেওয়ার পালা। কিন্তু পালাই-পালাই করেও শীত পালাচ্ছে না! আর এই দোলাচলের পাল্লায় পড়ে সর্দি, কাশি, জ্বরে ভুগছেন অনেকেই।

এ বার পারদ কেমন খামখেয়ালি তার স্পষ্ট উদাহরণ শনি ও রবিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ফারাক। শনিবার কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা থিতু হয়েছিল ১৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রবিবার সেখান থেকে এক লাফে পারদ উঠেছে ১৯.১ ডিগ্রি। শহরের উপকণ্ঠে দমদমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল আরও কিছুটা কম, ১৮.৩ ডিগ্রি। ফলে রাতের দিকে ফাঁকা এবং বেশি গাছপালা থাকা দমদম, সল্টলেক, রাজারহাটে এখনও খাস কলকাতার তুলনায় বেশি ঠান্ডা মালুম হচ্ছে।

মরসুমের শুরুতে এসেও যেন ধরা দিচ্ছিল না বাঙালির কাছে। শীতের জন্য হাপিত্যেশ করছিলেন অনেকে। জানুয়ারির গোড়া থেকে অবশ্য সে আশ মিটিয়েছে প্রকৃতি। উত্তুরে হাওয়া এবং পারদ পতনের যুগলবন্দির জেরে হাড়ে কাঁপুনি লেগেছিল কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের। ফেব্রুয়ারিতে বিদায়বেলায় তাই অনেকেই বলছেন, ‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাব’-র ঢঙে শীতবাবুর প্রত্যাবর্তন ঘটবে না তো?

আবহবিদেরা কিন্তু শীতের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিচ্ছেন। তাপমাত্রার এমন উত্থান-পতন সম্পর্কে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এটা ঋতু বদলের ইঙ্গিত। মার্চ থেকেই গরম পড়ার শুরু। তার আগে, ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে এমনই চলবে।’’ আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়বে। গভীর রাতে বা ভোরে হাল্কা শীতবস্ত্র লাগলেও দিনের বেলা তার প্রয়োজন হবে না। আজ, সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকবে। সপ্তাহের শেষে রাতের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যেতে পারে।

তাপমাত্রার এই ফারাকে অশনি সঙ্কেত দেখছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা বলছেন, এমন সময়ে চট করে শরীর খারাপ হতে পারে। এ সময়ে সক্রিয় হয় পরজীবীরাও। তাই বিশেষ সতর্কতার কথাও জানাচ্ছেন তাঁরা। চিকিৎসকদের মতে, এ সময়ে অসতর্কতায় ঠান্ডা লাগতে পারে। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে চিকেন পক্স, হারপিসের মতো ভাইরাসবাহিত রোগ হতে পারে। ভাইরাসের আক্রমণে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে অন্যান্য রোগেরও আক্রমণ হতে পারে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বিনয় গুছাইতের পরামর্শ, রোদ থেকে চট করে এসি-তে ঢোকা বা এসি থেকে বাইরে বেরোনোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গভীর রাতে বা ভোরের ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে। এ সময়ে ধুলো থেকে অনেকের অ্যালার্জি হয়। যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। চিকিৎসকেরা বলছেন, বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ঋতু বদলের সময়ে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। তাই ফ্রিজের জল, আইসক্রিম খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। ডিহাইড্রেশন এড়াতে পর্যাপ্ত জল খাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE