Advertisement
E-Paper

আমরা ভুক্তভোগীরাই অপরাধী হলাম? যুবভারতীর ভাঙচুরে ধৃতদের সওয়াল আদালতে, তদন্তে এ বার গোয়েন্দা পুলিশ

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভাঙচুরকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:১৩
Court orders remand of those arrested in Yuva Bharati vandalism case till December 22

শনিবার যবভারতীতে ভাঙচুর চালান ক্ষুব্ধ জনতা। — ফাইল চিত্র।

সল্টলেকে যুবভারতীকাণ্ডে তাঁরাই ভুক্তভোগী। তাঁরা কোনও অপরাধী নন। কেন তাঁদের ধরা হল? ক্রীড়াঙ্গন ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃতেরা আদালতে এমনই প্রশ্ন তুললেন। যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়ার আবেদন করেন ধৃতের আইনজীবীরা। যদিও সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি আদালত।

সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভাঙচুরের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভাঙচুরকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা হলেন বাসুদেব দাস, সঞ্জয় দাস, অভিজিৎ দাস, গৌরব বসু এবং শুভ্রপ্রতিম দে। তাঁদের বিধাননগর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশের তরফে তাঁদের হেফাজতে চাওয়া হয়নি। জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। সেখানেই প্রশ্ন তোলেন ধৃতদের আইনজীবীরা। তাঁদের যুক্তি, পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়নি, জামিন দিয়ে দেওয়া হোক!

যদিও জামিনের বিরোধিতা করা হয়। সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘যুবভারতীতে তাণ্ডবে অনেক সরকারি কর্মী, পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের আঘাত কতটা গুরুতর, সে সম্পর্কিত রিপোর্ট এখনও আসেনি। জেল হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশ হেফাজত চাইতেই পারে।’’

আদৌ তাঁদের সিসিটিভিকে দেখা গিয়েছে কি না, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলেন ধৃতেরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে তার প্রমাণ কোথায়? আমরা নিজেরাই ভুক্তভোগী। আমরা মেসিকে দেখতে গিয়েছিলাম। টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু মেসিকে দেখতে পাইনি।’’ তাঁদের আরও প্রশ্ন, ‘‘কী প্রমাণ রয়েছে, আমরা ভাঙচুর করেছি, মারধর করেছি? কী ভাবে অত লোকের মধ্যে আমাকেই শণাক্ত করা হচ্ছে?’’

ধৃতদের মধ্য অভিজিৎ এবং বাসুদেবের দাবি, ‘‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজে নেই। আমরা কোথায় আছি, দেখান?’’ বাসুদেবের বক্তব্য, ‘‘অভিজিৎকে গ্রেফতারের পর আমি থানায় গিয়েছিলাম। সেখানেই আমাকে গ্রেফতার করা হয়।’’ শনিবার যুবভারতীর ঘটনা ঘটেছে কিছু লোকের অব্যবস্থার জন্যই, আদালতে দাবি ধৃতদের। তাঁরা শুনানিতে বার বার দাবি করেছেন, সে দিনের ঘটনায় তাঁরাই ভুক্তভোগী।

আর এক ধৃত সঞ্জয়ের প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা ভাঙচুর করেন, তাঁদের না-ধরে আমাকে কেন ধরা হল?’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার বাবার ফুলের দোকান রয়েছে। সেখান থেকে টব নিয়ে বলা হচ্ছে, যুবভারতী থেকে নিয়েছি। আমরা ফুলপ্রেমী। আমরা কেন ফুল নষ্ট করতে যাব!’’

দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা শুভ্রপ্রতিম এমবিএ-র পড়ুয়া। শুধু তিনি একা নন, ধৃতদের মধ্যে আরও এক জন এমবিএ পড়ুয়া রয়েছেন। শুভ্রপ্রতিমের দাবি, পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি আধাসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তাঁর আবেদন, জামিন না-পেলে ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। যদিও আদালত জামিন মঞ্জুর করেনি। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁদের। একই সঙ্গে পুলিশের কাছে কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে।

মেসির কলকাতা সফর ঘিরে শনিবার দৃশ্যত তাণ্ডব চলে যুবভারতীতে। মেসি, সুয়ারেজ়, ডি’পলেরা স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু প্রায় ২০ মিনিট সেখানে থাকার পরেই স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। যে সময়টুকু মেসিরা স্টেডিয়ামে ছিলেন, পুরো সময়টাই তাঁদের ঘিরে একটি জটলা হয়ে ছিল। সেই জটলার মধ্যে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। ওই জটলার কারণে গ্যালারি থেকে দর্শকেরা কেউই মেসিকে প্রায় দেখতেই পাননি। আর তার জেরেই মেসিরা স্টেডিয়াম ছাড়ার পরে জনতার রোষ আছড়ে পড়ে যুবভারতীতে। অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে গ্যালারিতে হোর্ডিং ছেঁড়া শুরু হয়। তার পরে শুরু হয় বোতলবৃষ্টি। গ্যালারি থেকে মাঠের দিকে একের পর এক বোতল উড়ে যেতে শুরু করে। ক্রমে সেই রোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে। গ্যালারির চেয়ার ভেঙে চলে তাণ্ডব। তার পরে মাঠের ফেন্সিং ভেঙে চতুর্দিক থেকে ক্রুদ্ধ জনতার ভিড় দখল নেয় মাঠের। সেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে বিধানগর পুলিশ। তবে এ বার এই ঘটনার তদন্তভার বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে যেতে চলেছে।

Salt Lake Stadium arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy