বালি পাচারের অভিযোগে মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করে পুরুলিয়া জেলা আদালতে পেশ করল পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ১৩ জনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। বাকি তিন জনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ। ধৃতদের মধ্যে ১ জন বালি ঘাটের লিজ নেওয়া ব্যবসায়ীও রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। পুরুলিয়া শহরের পুরনো পুলিশ লাইন এলাকায় বিজেপির যুব মোর্চার নেতা সুরজ শর্মা বালি পাচারের অভিযোগে বালি ভর্তি একাধিক ট্রাক্টর আটকান। পরে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বালিবোঝাই দু’টি ট্রাক্টর আটক করে। খবর জানাজানি হতেই পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় সটান পুরুলিয়া সদর থানায় হাজির হলে সেখানে সুরজের সঙ্গে বিধায়কের বচসা শুরু হয়। বচসা হাতাহাতিতে গড়ায় বলে অভিযোগ।
থানার ভিতর দু’জনের হাতাহাতির সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আহত অবস্থায় সুরজকে পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে বালি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারের দফতরে সুরজের দাদাগিরি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে মোট ১৬ জন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ প্রথমে আটক করে। পরে ওই ১৬ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ।
পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈধ ভাবে চালান নিয়ে কয়েক জন বালির গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। সুরজ শর্মা আমার নাম করে ওদের কাছ থেকে টাকা চেয়েছিল। ঘটনার খবর পেয়ে আমি থানায় যেতেই সুরজ আমার দিকে তেড়ে আসে। আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করি মাত্র। কেউ আমার বদনাম করার জন্য আমার নামে তোলাবাজি করার চেষ্টা করবে, তা আমি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করব না।’’
পাল্টা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুরজ বলেন, ‘‘আমি বাড়ি ফেরার পথে বালি ভর্তি একাধিক ট্রাক্টর দেখে আটকেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম। পুরুলিয়া সদর থানা ট্রাক্টর দু’টিকে আটক করে আমাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে বলে। সেই অভিযোগ জানাতে পুরুলিয়া সদর থানায় গেলে আমাদের দলের বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বালি মাফিয়াদের সঙ্গে নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় আমার উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করেন। আমি গুরুতর জখম হই। আমি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুরুলিয়া সদর থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’