Advertisement
E-Paper

জেলা প্রশাসনের পরামর্শ মানেননি স্কুলকর্তা, রিপোর্ট ডিএমের

এক বার গোলমাল হওয়ার পরেও জেলা প্রশাসনের পরামর্শ না-মেনে দুই শিক্ষককে উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট স্কুলে যোগ দিতে বলেছিলেন বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি এবং স্কুল পরির্দশক (মাধ্যমিক)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৭
রাজেশ সরকার।

রাজেশ সরকার।

এক বার গোলমাল হওয়ার পরেও জেলা প্রশাসনের পরামর্শ না-মেনে দুই শিক্ষককে উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট স্কুলে যোগ দিতে বলেছিলেন বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি এবং স্কুল পরির্দশক (মাধ্যমিক)। আর তার জেরেই বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ-সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা— শুক্রবার শিক্ষা দফতরে এমনই প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছেন জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা। সোমবার বিকাশ ভবনে তাঁর বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানোর কথা।

অন্য দিকে, এ দিনই বিকাশ ভবনে স্কুল-শিক্ষা সচিব মনীশ জৈনের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। ‘পদ’ না-থাকা সত্ত্বেও কেন উর্দু ও সংস্ক়ৃতের শিক্ষক পাঠানো হয়েছিল, কোন ‘পরিস্থিতির চাপে’ তাঁদের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়েছে, তা ‘ব্যাখ্যা’ করেছেন তিনি।

যদিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে স্কুল পরিদর্শকের গাফিলতি ধরা পড়েছে। তাঁকে এ দিন সাসপেনশনের চিঠি ধরানো হয়েছে। তবে অন্য কারও গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

জেলাশাসক ও স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্ট দু’টি বিকাশ ভবন খতিয়ে দেখছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, দাড়িভিট স্কুলটি খাতায়-কলমে উর্দু এবং বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয় হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। কিন্তু গত ১০-১৫ বছরে উর্দুভাষী ছাত্র কমে এখন জনা কুড়িতে দাঁড়িয়েছে। স্কুলটি উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। মাধ্যমিকস্তর পর্যন্ত এখনও উর্দু একটি বিষয় হিসেবে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও পড়ুয়া নেই।

আরও পড়ুন: পড়াশোনা হয় না, তাতেই ক্ষোভ ছিল

বিকাশ ভবন জেনেছে, ওই স্কুলে মাধ্যমিকস্তরে উর্দু ও সংস্কৃতের দু’টি শূন্য পদ ছিল। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকস্তরে এমন কোনও পদ ছিল না। যদিও স্কুল পরির্দশক বিকাশ ভবনে জানান, স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে দু’টি শূন্য পদ দেখানো হয়েছে। সেই ভিত্তিতেই তিনি গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুই শিক্ষককে স্কুলে যোগ দিতে পাঠান।

দাড়িভিট স্কুলের সেই লিখিত প্রতিশ্রুতি। যেখানে বলা হয়েছিল উর্দু এবং সংস্কৃতের শিক্ষক নেওয়া হবে না।
কিন্তু এক দিন পরেই ওই দুই শিক্ষককে পুলিশ দিয়ে ঢোকানো হয়।


সে দিন স্কুলে পৌঁছনো মাত্র ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পান জেলাশাসক। মহকুমাশাসক, বিডিও, পুলিশ কর্তারা স্কুলে পৌঁছন। যান রবীন্দ্রনাথবাবুও। সেখানে প্রশাসনিক কর্তাদের সামনে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি প্রস্তাব গ্রহণ করে, আপাতত ওই দুই শিক্ষক কাজে যোগ দেবেন না। আশপাশের স্কুলে তাঁদের পাঠানো হবে বলে প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়ে আসেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রশাসনকে একপ্রকার অন্ধকারে রেখে পরিচালন সমিতি পরের দিন ফের বৈঠকে বসে। মাধ্যমিকস্তরে শূন্য পদ দু’টি উচ্চমাধ্যমিকস্তরে পরিবর্তন করে দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়। তা পেয়ে স্কুল পরির্দশকও নির্দেশিকা বার করেন।

বৃহস্পতিবার ওই দুই শিক্ষককে ফের স্কুলে যোগ দিতে পাঠানো হয়। বিকাশ ভবনের প্রশ্ন, কার নির্দেশে পরিচালন সমিতি ও স্কুল পরির্দশক শূন্য পদ পরিবর্তনের নির্দেশিকা জারি করলেন? কেন এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন বা স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমতি নেওয়া হল না? কে স্কুল শিক্ষা পরির্দশককে তড়িঘড়ি নির্দেশিকা বার করে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন? স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকস্তরে শূন্য পদ না-থাকলেও কেন স্কুল সার্ভিস কমিশন ওই দুই পদে শিক্ষক পাঠাল? তাদের ওয়েবসাইটে কেনই বা শূন্য পদ দেখানো হচ্ছিল?

সূত্রের খবর, জেলা স্কুল পরির্দশক অনেক কিছুই স্পষ্ট জানাতে পারেননি। তিনি এ দিন সচিবকে জানান, মাত্র এক বছর আগে তিনি জেলায় যোগ দিয়েছেন। তার আগেই শূন্য পদের তালিকা স্কুল সার্ভিস কমিশনে এসেছিল। ফলে কোন কোন পদ শূন্য বলে দাবি করে শিক্ষক চাওয়া হয়েছিল তা তাঁর অজানা। তবে কেন প্রশাসন নিষেধ করার পরও তিনি নির্দেশিকা বার করেছেন? পরির্দশক বিকাশ ভবনকে জানান, সরকারি আদেশনামাতেই তাঁকে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পরিচালন সমিতি প্রস্তাব পেশের পর তা করতে আইনি বাধাও ছিল না। যদিও শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘মাধ্যমিকস্তরের পদ উচ্চমাধ্যমিকস্তরে বদলে দেওয়ার কোনও ক্ষমতাই স্কুল পরিদর্শকের নেই।’’

Islampur District Magistrate District School Inspector Islampore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy