‘লুপাস’-এর সঙ্গে লড়াইয়ে শুধু রোগীর সচেতনতাই যথেষ্ট নয়। চিকিৎসকদেরও ‘সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমেটোসাস’ বা লুপাস রোগকে আরও বেশি চিনতে সক্ষম ও সচেতন হতে হবে। শনিবার বিশ্ব লুপাস দিবসে এমনই বার্তা দিলেন রিউম্যাটোলজিস্ট থেকে অন্যান্য চিকিৎসকেরা।
শহরের এক সভাগৃহে এ দিন লুপাস নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। ওই সংগঠনের সম্পাদক ও আহ্বায়ক, রিউম্যাটোলজিস্ট অলোকেন্দু ঘোষ জানান, তাঁদের সংগঠনে ৬০০ রোগী পরিষেবা পান। বছর কয়েক ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার সহযোগিতায় একটি বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ফলো আপে থাকার ফলে ওই রোগীরা চিকিৎসা শুরুর সময় থেকে পাঁচ বছর পরে মানসিক অবসাদ পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি, শারীরিক ভাবেও তাঁরা সুস্থ। যেমন, পর পর দু’বার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে গেলেও মাস আড়াই আগে সুস্থ সন্তানের
জন্ম দিয়েছেন লুপাস আক্রান্ত সৌমি দাস অধিকারী। এ দিন তিনি যেমন নৃত্য পরিবেশ করলেন, তেমনই স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোনালেন স্কুল শিক্ষিকা অপরাজিতা হেমব্রম।
তবে লুপাস আক্রান্ত ১৭ থেকে ২০ শতাংশ মহিলা কেন গর্ভধারণ করতে পারছেন না, তার জন্য আরও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক সুভাষ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের প্রব্রাজিকা অখিলাত্মাপ্রাণা, নেফ্রোলজিস্ট অর্পিতা রায়চৌধুরী-সহ অন্যেরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দিকে, ‘এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজি অ্যান্ড রিউম্যাটোলজি’-তে লুপাস নিয়ে আলোচনায় রিউম্যাটোলজিস্ট অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় জানান, বিশ্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দেওয়া থেকে চিকিৎসকের কাছে আসতেই এক জন রোগীর ১৩
থেকে ১৪ মাস সময় লাগে। আবার চিকিৎসা পুরোপুরি শুরু হতে হতে অনেক সময়েই ২৫ থেকে ৩০ মাস পেরিয়ে হয়ে যায়। অর্ঘ্য বলেন, ‘‘চিকিৎসক ও রোগীর নিবিড় সম্পর্ক এবং রোগ সম্পর্কে উভয়ের সচেতনতা বৃদ্ধিই লুপাসের লড়াইয়ে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)