E-Paper

স্বাস্থ্য ভবনে বিজেপি, তবু প্রশ্ন দলের ঝাঁঝ নিয়েই

কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলার মতো একাধিক বিষয় হাতের সামনে থাকলেও তা নিয়ে দলকে কতটুকু আন্দোলনমুখী করা যাচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৪:৩৮
স্যালাইন-কাণ্ডে থানায় অভিযোগ দায়েরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির অন্য বিধায়কেরা। বিধাননগরে।

স্যালাইন-কাণ্ডে থানায় অভিযোগ দায়েরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির অন্য বিধায়কেরা। বিধাননগরে। —নিজস্ব চিত্র।

আর জি কর থেকে শুরু করে স্যালাইন-কাণ্ডে প্রসূতি মৃত্যু—রাজ্য জুড়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলার মতো একাধিক বিষয় হাতের সামনে থাকলেও তা নিয়ে দলকে কতটুকু আন্দোলনমুখী করা যাচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজ্য বিজেপির অন্দরেই। সেই সূত্রে দলের নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন নিয়ে গড়িমসিকেও কাঠগড়ায় তুলছে দলের একাংশ।

আসন-সংখ্যা এবং ভোটের শতাংশের নিরিখে এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। কিন্তু আর জি কর আন্দোলনের আবহে বিরোধী পরিসরে বিজেপির সেই বিজেপির ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। বরং, বামেরা ছিল অনেক বেশি দৃশ্যমান। এখন নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচন এবং সদস্য সংগ্রহের গেরোয় বিজেপি যখন আবর্তিত হচ্ছে, তখন বামেরা ছাত্র-যুব নেতাদের ময়দানে নামিয়ে মেদিনীপুরে হাসপাতাল সুপারের ঘরে তালা দিয়েছে। রাজ্য জুড়ে পথ অবরোধ করেছে। স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে। স্কুল-ছুটের প্রতিবাদেও সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের তরফে জেলায় জেলায় ডিআই দফতর অভিযান চলছে। সীমিত সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসও স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করেছে। প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও বিষয়ে রাস্তায় থাকছে। এই প্রেক্ষিতে বিজেপির ঘরে-বাইরে প্রশ্ন উঠছে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে।

স্যালাইন-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির জনা পনেরো বিধায়কদের দল অবশ্য বুধবারই স্বাস্থ্য ভবনে গিয়েছিল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও মেদিনীপুর হাসপাতালের সুপারের গ্রেফতার দাবি করেছেন তাঁরা। এই মর্মে বিধাননগরের ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন রানাঘাট উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলনেতাও। শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘গর্হিত অপরাধ! এর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও মেদিনীপুরের সুপারকে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সঙ্গে এই বিষাক্ত স্যালাইন কোন কোন রোগীর শরীরে দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। কারণ, এর প্রভাব সরাসরি কিডনির উপরে পড়বে। তার পরে আপনারা বলবেন সুগার ছিল তাই কিডনি বিকল হয়ে মারা গিয়েছেন! তখন সে সব শুনব না!’’

তবে স্বাস্থ্য ভবনে বিরোধী দলনেতা ও বিধায়কেরা গেলেও রাজ্য বিজেপির আন্দোলনের ঝাঁঝ কমে হয়ে যাওয়া নিয়ে চর্চা থামছে না। দলের ‘অধিনায়কহীন’ অবস্থাকে দায়ী করেছেন অনেকে। রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, “আন্দোলনের ডাক দেওয়ার মতো নেতা যদি সামনে কেউ না থাকেন, কর্মীরা কার ডাকে ঘর থেকে বেরোবেন?” দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়ের মতে, “বিজেপি সভাপতি-নির্ভর দল। অথচ দিনের পর দিন পূর্ণ সময়ের সভাপতি ছাড়া দল চলছে। ফলে, যে কোনও বিষয়ে একটা বিবৃতি দেওয়া ছাড়া দলের আর ভূমিকা থাকছে না।’’

যদিও রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, “বাংলার মানুষকে আগে ভয়মুক্ত করতে হবে। বিজেপি এই মুহূর্তে মানুষকে সংগঠিত করার কাজ করছে। ঠিক সময় বিজেপি তার রাজনৈতিক আন্দোলন মানুষের মধ্যে নিয়ে যাবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Swasthya Bhawan BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy