—প্রতীকী ছবি।
সামনে খামারবাড়ি। ভিতরে মাদকের কারখানা! উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় তল্লাশি চালিয়ে এমনই কারবারের সন্ধান পেল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। এসপি (এসটিএফ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, প্রচুর পরিমাণে মাদক উদ্ধারের পাশাপাশি চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ওই বাড়ির মালকিন-সহ দু’জন মহিলা রয়েছেন। ধৃতদের নাম কাকলি রায়, অভিজিৎ বিশ্বাস, তপন মণ্ডল ও ডলি সরদার। কাকলি ওই বাড়ির মালকিন। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই মাদক কলকাতা, হাওড়া আর উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হত। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া মাদকের আনুমানিক বাজারদর প্রায় ১৬ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্রের খবর, গাইঘাটার বিষ্ণুপুর গ্রামে প্রায় ছ’ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ওই খামারবাড়ি। তাতে পোলট্রি রয়েছে, ছাগল-গরুও পোষা হয়। সেই সব আস্তানা ছাড়ালেই একটি দোতলা বাড়ি। সেই বাড়ির দোতলার ঘরগুলিতে থরে থরে হেরোইন তৈরির বিভিন্ন রাসায়নিক সাজানো ছিল। বাড়ির মালকিন কাকলি এক সময় পোশাকের ফেরিওয়ালা ছিলেন। পরে মাদকের ব্যবসা শুরু করেন। এ কাজে শ্রমিকও নিয়োগ করেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। বাইরে থাকা ওই শ্রমিকদের অবশ্য এলাকায় রাজমিস্ত্রি হিসাবেই পরিচয় করানো হয়েছিল।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, মূলত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিজিৎ এবং তপন হেরোইন তৈরির রাসায়নিক জোগাড় করতেন এবং তা থেকে ওই খামারবাড়িতে মাদক তৈরি করা হত। দালাল মারফত সেই মাদক ছড়িয়ে পড়ত বিভিন্ন জায়গায়।
একদা পোশাকের ফেরিওয়ালা কাকলি সেই ব্যবসার আড়ালে ওই মাদকের কারখানা চালােতন। তাঁকে সাহায্য করতেন ডলি। অভিজিৎ এবং তপন উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে কোটি কোটি টাকার ‘ক্রুড হেরোইন’ নিয়ে আসতেন। ওই কারখানায় তা মিশ্রণ ও পরিশোধন করা হত। পরে যা এজেন্ট মারফত বিভিন্ন জায়গাতে ছড়িয়ে দেওয়া হত।
এসটিএফ সূত্রের খবর, হেরোইন তৈরির রাসায়নিক ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ওজন মাপার যন্ত্র, মিক্সার গ্রাইন্ডার, নানা মাপের পলিথিন ব্যাগ ও পলিথিন ব্যাগ ‘সিল’ করার যন্ত্র। তবে গোয়েন্দাদের একাংশ সন্দেহ করছেন যে, ডলির পিছনেও কোনও বড় চাঁই থাকতে পারে। শুক্রবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক তাঁদের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy