Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2022

পুজোয় দেবীর দরবারে দেশে-বিদেশে মুর্শিদাবাদের ঢাকিরা

বেলডাঙা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বাঁশচাতর গ্রামের দিকে এগিয়ে যেতে ডান দিকে দাস পাড়ায় পুজোর আবেশ এসে গিয়েছিল শরৎ আসার আগেই।

বিশ্বনাথ দাস

বিশ্বনাথ দাস

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায় , কৌশিক সাহা
বেলডাঙা, কান্দি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৫২
Share: Save:

পুজোয় মুর্শিদাবাদের অনেক পরিযায়ী বাড়ি ফেরেন। কিন্তু অনেকে আবার এই সময়ই বাড়ি ছাড়েন সম্বৎসরের উপার্জনের জন্য। সালার থানার প্রসাদপুর থেকে শুরু করে বেলডাঙা শহরের দাসপাড়া। বাড়ির ছেলেরা ঢাক বাজাতে গিয়েছেন ভিন্ দেশে বা ভিন্ রাজ্যে। অনেকে গিয়েছেন কলকাতা-সহ রাজ্যেরই নানা জায়গায়।

বেলডাঙা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বাঁশচাতর গ্রামের দিকে এগিয়ে যেতে ডান দিকে দাস পাড়ায় পুজোর আবেশ এসে গিয়েছিল শরৎ আসার আগেই। সকাল সন্ধ্যা ছিল উৎসবের মেজাজ। দিন, রাত চলেছে ঢাকের তালিম। দাসপাড়ারই বাসিন্দা বিশ্বনাথ দাসের ডাক এসেছে সুদূর সুইৎজ়ারল্যান্ড থেকে। দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত বাঙালিরা দুর্গা পুজোর আয়োজন করেছেন। সেখানেই ঢাক বাজাবেন বিশ্বনাথ। বিশ্বনাথ বলেন, “নবান্ন থেকে যোগযোগ হয়। আমার সঙ্গে আরও ঢাক ও কাঁসি বাজানোর শিল্পীরা যাবেন। যাবেন মহিলা ঢাকিরাও।” তাঁরা সকলেই রওনা হয়ে গিয়েছেন।

ওই দাসপাড়া থেকেই পুজোয় ঢাক বাজাতে মুম্বই যাচ্ছেন ২২ জন। মূল ঢাকি লালু দাস। সঙ্গে রয়েছেন প্রহ্লাদ দাস, প্রশান্ত দাস, পরিমল দাস, পঙ্কজ দাস, নিতাই দাস, হেমন্ত দাস, উত্তম দাস, সন্তোষ দাস প্রমুখ। তাঁরা গিয়েছেন এক সঙ্গীত শিল্পীর বাড়ির পুজোয় ঢাক বাজাতে। লালু বলেন, “পুজোয় সময় মণ্ডপের পাশেই আমাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। একাদশীতে প্রতিমা বিসর্জন হয়। ট্রলিতে চাপিয়ে সমুদ্রের তীর জুহুতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রতিমা ভাসান দেওয়া হয়। রাস্তায় শোভাযাত্রা হয়। আমরা কাঁধে ঢাক নিয়ে প্রতিমার সঙ্গে হেঁটে যাই।”

সালারের প্রসাদপুরের মঙ্গল দাস যাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশ। পনেরো বছর ধরে সেই পুজোয় তিনিই ঢাক বাজান। পুজোর উদ্যোক্তারা পারিশ্রমিকের পাশাপাশি যাতায়াতের ট্রেন ভাড়া, হাত খরচের টাকাও দেন।

ঢাক বাজানো খুব সহজ কথা নয়। ঢাকের যথেষ্ট ওজন। তা কাঁধে বেঁধে চার দিন ধরে বাজাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দরকার হয়। আরতির সময় কখনও কখনও টানা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঢাক বাজাতে হয়। শরীরকে বশে রাখতে তাই পুজোর ক’দিন সংযম খুব প্রয়োজন। মুর্শিদাবাদের অনেক ঢাকিই বংশ পরম্পরায় এই শিক্ষা আয়ত্ত করেছেন। ছোটবেলা থেকেই যে শিক্ষা শুরু হয়। আর প্রতি বছর পুজোর আগে চলে তার চূড়ান্ত অনুশীলন।

তবে কান্দির ভোলানাথপুরের দাস পাড়ার বাসিন্দা প্রভাত দাস বলেন, ‘‘কষ্ট তো সব কাজেই রয়েছে। আমাদের কাজে তার সঙ্গে মিশে থাকে আনন্দ। দুর্গা সত্যিই আমাদের রক্ষাকর্ত্রী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 Indian drummers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE