—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এত দিন জানা ছিল শেখ শাহজাহান রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে জড়িত। এ বার আদালতে নথি দিয়ে ইডি দাবি করল, কয়লা পাচারের সঙ্গেও যোগ ছিল শাহজাহানের। আর এই পাচারে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ‘শাহজাহান কর’ বাবদ তোলা হত বলে প্রাথমিক ভাবে ইডির অনুমান।
উল্লেখ্য, রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিক গ্রেফতারের বেশ কিছু দিন পরে তাঁর মারফতই শাহজাহানের নাম উঠে আসে বলে ইডি সূত্রের দাবি। তদন্তকারীদের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ও তৎ-সংলগ্ন এলাকার বহু বাসিন্দার জমি জোর করে দখল করে সেখানে বেআইনি ভাবে ভেড়ি বানিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ ওঠে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেই মাছ চাষের আড়ালে কালো টাকা সাদা করতেন সন্দেশখালির অবিসংবাদিত নেতা শাহজাহান। আপাতত জেলে তিনি।
কিন্তু, কয়লা পাচারের সঙ্গেও যে তাঁর যোগ রয়েছে, তা এত দিন জনসমক্ষে আসেনি বলেই ইডি সূত্রের দাবি। সম্প্রতি বিচার ভবনে সিবিআই বিশেষ আদালতে শাহজাহান ও তাঁর ভাই আলমগীর-সহ চার জনের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট ইডি জমা দিয়েছে, সেখানে তদন্তকারী অফিসারের দাবি, আসানসোল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংলগ্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক ইটভাটায় নিয়মিত কয়লা পাচার হত। এক একটি গাড়িতে ২০ থেকে ৩০ টন কয়লা আসত। যার সঙ্গে যোগ ছিল শাহজাহানের।
এক টন কয়লার বাজারদর ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। তদন্তকারীদের দাবি, শাহজাহান সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লকে আসানসোল থেকে আসা কয়লা সরবরাহ করতেন এবং টন প্রতি অতিরিক্ত ২০০০ টাকা ‘শাহজাহান কর’ হিসেবে ইটভাটার মালিকদের দিতে হত। তদন্তকারীদের আরও দাবি, ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আসানসোল থেকে সন্দেশখালিতে দিনে প্রায় ১৫০০ টনেরও বেশি কয়লা পাচার হত এবং ‘কর’ বাবদ দিনে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা উঠত।
প্রসঙ্গত, কয়লা পাচারের ইডি ও সিবিআইয়ের মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার অধিকাংশ জায়গায় ইটভাটায় অনুপ মাঝি ওরফে লালা বেআইনি ভাবে কয়লা সরবরাহ করতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। লালার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একাধিক ডায়েরির নথি থেকে কয়লা পাচারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার শাসক দলের একাধিক দাপুটে নেতার নাম উঠে এসেছে। ওইসব নেতাদের সঙ্গে শাহজাহানের ঘনিষ্ঠতারও সূত্র পাওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের কয়লা পাচারের মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক দাপুটে নেতা তথা বিধায়ককে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ফের তাঁকে তলব করা হবে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy