Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জল ছাড়া কমিয়েছে ডিভিসি, বৃষ্টি চলছে

নিম্নচাপ সরে গেলেও ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি বন্ধ হয়নি। তবে, ডিভিসি জল ছাড়া কমিয়েছে। বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে।

পরিদর্শন: বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। শুক্রবার ঘাটালের দাসপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

পরিদর্শন: বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। শুক্রবার ঘাটালের দাসপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৫
Share: Save:

কোথাও কিছুটা স্বস্তি। কোথাও এখনও দুশ্চিন্তার মেঘ।

নিম্নচাপ সরে গেলেও ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি বন্ধ হয়নি। তবে, ডিভিসি জল ছাড়া কমিয়েছে। বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। কিন্তু হাওড়া, হুগলি বা দুই মেদিনীপুরের সঙ্কট এখনও কাটার লক্ষণ নেই। এই চার জেলাতেই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে অব্যাহত প্রাণহানিও। শুক্রবারই হুগলির খানাকুলের ছত্রশালে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় কাজল বেরা (৪৫) নামে এক মহিলার। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার পখন্না মানাচরে এ দিন দামোদরের বান দেখতে গিয়ে ভেসে যান এক যুবক। তাঁর খোঁজ মেলেনি। নবান্নের খবর, এ পর্যন্ত প্লাবনে এ রাজ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শুধু ১৪ জন মারা গিয়েছেন জলে ডুবে। এ ছাড়া, সপর্দষ্ট হওয়া, দেওয়াল ভাঙা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে।

নবান্নের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এ দিন সকালে ডিভিসি-র গালুডি ব্যারাজ থেকে ৪১ হাজার ৯৬০ কিউসেক, চান্ডিল থেকে ৩১ হাজার ৬২৭ কিউসেক, দুর্গাপুর থেকে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ২৫০ কিউসেক, তেনুঘাট থেকে ৪৮ হাজার ৯২৬ কিউসেক, পাঞ্চেত থেকে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৭২ কিউসেক ও মাইথন থেকে ৫৬৬৮ কিউসেক জল ছাড়া হয়। ডিভিসি-র তরফে রাতে জানানো হয়েছে, জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমিয়ে ৭০ হাজার কিউসেক করা হয়। যা আগের চেয়ে কম। তবে, নদীগুলি এখনও যে ভাবে ভরে রয়েছে, তাতে এই জলে প্লাবনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না নবান্নের কর্তারা।

আরও পড়ুন: বন্যার ঘাটালে উদ্ধারে ব্যর্থ বায়ুসেনার হেলিকপ্টার

এ দিন বিভিন্ন জেলার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান মন্ত্রীরা। ঘাটালের পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়। সেখানে গিয়েছিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের সঙ্গে সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি। পরে সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্যোগের সময় রাজনীতি করতে চাই না। তবে, ঘাটাল মাস্টার-প্ল্যানের জন্য অর্থ বরাদ্দ না-করে আমাদের বঞ্চিত করছে কেন্দ্র।’’ হাওড়া, হুগলিতেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হুগলির পুরশুড়ার মির্জাপুরে দামোদরের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৮টি পঞ্চায়েত এলাকা। আরামবাগেও মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙে কিছু এলাকায় জল ঢোকে। জল বেড়েছে গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায়। ডুবেছে আমতা-২ ব্লকের আরও দু’টি প়ঞ্চায়েত।

বীরভূমের পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। এ দিন বিকেলে লাভপুরে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে এসে সে কথা মেনেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। লাঘাটা সেতুও খুলেছে। এক বছরের মধ্যে লাঘাটা কজওয়েতে নতুন সেতু গড়ার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।

কিছুটা স্বস্তিতে নদিয়া-মুর্শিদাবাদ। ক’দিন ধরে ভাগীরথীর পাড়ে দাঁড়িয়ে জল মাপছিলেন মায়াপুরের হোটেল ব্যবসায়ীরা। সামনেই ঝুলন উৎসব। বৃষ্টিতে গঙ্গা ক্রমশ এগিয়ে আসছে। সেই নদীই এ দিন যেন অনেক শান্ত। মুর্শিদাবাদের কান্দি এলাকায় জল কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হতে আরও দু’দিন সময় লাগবে বলে মনে করছে সেচ দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE