Advertisement
০২ মে ২০২৪

ঝুঁকি নিলেন কেউ, থমকালেন অনেকেই

কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার জেরে আটকে পড়লেন কেউ কেউ। অনেকে আবার ঝুঁকি নিয়েই রওনা হলেন বাড়ির উদ্দেশে। সব মিলিয়ে শুক্রবার দিনভর উদ্বেগে কাটালেন নানা কাজে কোচবিহারে আসা অসমের বাসিন্দারা।

নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে কোকরাঝাড়ের ট্রেন ধরার আগে উৎকণ্ঠায় পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে কোকরাঝাড়ের ট্রেন ধরার আগে উৎকণ্ঠায় পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৩
Share: Save:

কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার জেরে আটকে পড়লেন কেউ কেউ। অনেকে আবার ঝুঁকি নিয়েই রওনা হলেন বাড়ির উদ্দেশে। সব মিলিয়ে শুক্রবার দিনভর উদ্বেগে কাটালেন নানা কাজে কোচবিহারে আসা অসমের বাসিন্দারা।

শুক্রবার সকালে কোকরাঝাড়ের ফকিরাগ্রামের বাসিন্দা মইজাল হক পাঁচ বছরের ছেলে ও স্ত্রী সায়েরা বিবিকে নিয়ে কোচবিহারে আসেন। স্ত্রীর জন্য ওষুধপত্র কিনে নিউ কোচবিহার স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। কী করবেন তা নিয়ে রীতিমতো দোলাচলে থাকা মইজালবাবু বারবার ফোন নিয়ে পরিচিতদের কাছে এলাকার অবস্থা নিয়ে খোঁজ নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, “এখনও ট্রেন পেলাম না। আজ আর বাড়ি ফেরা হবেনা। রাতে ফকিরাগ্রাম পৌঁছনোর ঝুঁকি নেব না ভাবছি। ভাবছি রাতটা গোসাইগাঁওয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে কাটিয়ে দেব।” পাশে বসা মইজালের স্ত্রী সায়েরা বিবি বলেন, “হাতে টাকা থাকলে কোচবিহারের হোটেলে রাতটা কাটিয়ে যেতাম। কিন্তু উপায় নেই তাই গোসাইগাঁও পর্যন্ত যাবই।”

বাড়ি ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই কোচবিহার-ধুবুরিগামী বাসে রওনা দিয়েছেন কোকরাঝাড় জেলা সীমানা লাগোয়া ধুবুরির হাজারিপাড়ার বাসিন্দা সাদেক আলি। তাঁর কথায়, “গৌরীপুর থেকে নেমে অন্য বাসে আমাকে যেতে হবে। জানি না আজ আদৌ তা মিলবে কিনা। বাড়ি পৌঁছোনো নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।” অসমের একটি বাসের কন্ডাক্টর সমীর দাস বলেন, “ফেরার বাসে যাত্রীদের ভিড় নেই। মনে হচ্ছে অনেকেই থেকে যাচ্ছেন। তাই খালি বাস নিয়েই বোধহয় যেতে হবে।” নিম্ন অসমের কার্তিক রায় সাফ জানালেন, ‘‘এই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে যাই কি করে। তাই আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা কোচবিহারের কোনও হোটেলে থেকে যাব ঠিক করেছি।’’

বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন কোচবিহার-অসম রুটে অন্তত ৫০টি বাস যাতায়াত করে। এ ছাড়াও একাধিক ট্রেন রয়েছে। দৈনিক কয়েক হাজার মানুষ কোচবিহারে আসেন। এ দিন দুপুরে কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার কথা জানাজানি হতেই তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। বাসস্ট্যান্ড থেকেও অনেকে
ফিরে যান।

বিভিন্ন কাজে অসমে যাওয়া কোচবিহারের বাসিন্দাদেরও একই অবস্থা। চিরাং জেলায় আত্মীয়ের বাড়িতে থাকা দিনহাটার বাসিন্দা জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “বৃহস্পতিবার চিরাংয়ে এসেছি। ফেরার সময় আজ কোকরাঝাড়ে বোনের বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির জেরে আর ঝুঁকি নিতে পারিনি। এখানেও আতঙ্কের আবহ রয়েছে। দিনের বেলাতেও বিজনি সহ বিভিন্ন এলাকা সুনসান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Miscreants Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE