Advertisement
০৪ মে ২০২৪
DYFI

লোকসভার আগে যুব ব্রিগেড, ধন্দ সাদা ঝান্ডায়

ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, মানুষ না চাইলে শিল্পায়নের জন্য জোর করে কোথাও জমি নেওয়া হবে না।

representational image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৫
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের আগে আগামী জানুয়ারিতে ব্রিগেড সমাবেশ করতে চলেছে যুব সিপিএম। কাজের দাবিতে, রাজ্য ও দেশের যুব প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার ডাক দিয়ে ৭ জানুয়ারি ওই সমাবেশ হবে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের উদ্যোগে। তার আগে দু’মাস ধরে চলবে রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনসাফ যাত্রা’। তবে লোকসভা ভোটের আগে দলের পরিচিত লাল ঝান্ডার রাজনৈতিক মঞ্চের বদলে যুব সংগঠনের সাদা পতাকার ব্রিগেড সমাবেশে কাঙ্খিত বার্তা দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সিপিএমের অন্দরেই।

ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে সোমবার সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘যুবকদের চাকরি নেই। একশো দিনের কাজে টাকা নেই। স্কুলে ড্রপ আউট বাড়ছে। কিন্তু এই সব আসল সমস্যা ক্রমাগত চলে যাচ্ছে আড়ালে। শাসকের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে নামব আমরা। দু’মাস রাস্তায় থাকব। তার পরে দুই সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ব্রিগেডে সমাবেশ।’’ ডিওয়াইএফআইয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস, ৩ নভেম্বর শুরু হবে ‘ইনসাফ যাত্রা’। কোচবিহার থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নানা জেলা ঘুরে শেষে ৭ জানুয়ারি হবে ব্রিগেড সমাবেশ।

যুব সংগঠনের একক উদ্যোগে ব্রিগেড সমাবেশ আগেও হয়েছে। তবে তার বেশির ভাগ সময়েই রাজ্যে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল। ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, মানুষ না চাইলে শিল্পায়নের জন্য জোর করে কোথাও জমি নেওয়া হবে না। তার আগের রাতেই নন্দীগ্রামে শাসক দল ও জমি অধিগ্রহণ বিরোধীদের (আনুষ্ঠানিক নাম হয়েছিল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি) সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘সে সব ব্রিগেডের সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক ছিল না। এই ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের আগে। এই ক্ষেত্রে লাল ঝান্ডার বদলে যুব সংগঠনের সাদা পতাকায় ঠিক বার্তা দেওয়া যাবে কি না, বিষয়টা আলোচনা করে দেখার অবকাশ আছে।’’

নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাম যুবদের নানা কর্মসূচিতেই সাম্প্রতিক কালে ভাল সাড়া মিলেছে। কিন্তু সদ্য ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে সিপিএমের ভোট বাড়েনি। পথে-মাঠের ভিড় ভোটে কেন টানা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্নে মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘ডিওয়াইএফআই নির্বাচনী সংগঠন নয়। তবে নির্বাচন থেকে দূরেও থাকি না। অবশ্যই চাইব ভোট বামপন্থীদের দিকে আসুক। মানুষের সমস্যা, মাফিয়া-রাজ সরানোর জন্য কোনও অ্যাজেন্ডা ধূপগুড়ির ভোটে ছিল? সরকারি নানা প্রকল্প আছে। কিন্তু বেকারদের জন্য কিছু নেই। যাঁরা তৃণমূল বা বিজেপিকে ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে গিয়েও আমাদের কথা বলতে চাই। হাতে গরম ফল মিলবে না। কিন্তু হাল ছাড়ার জায়গায় আমরা নেই!’’

সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’ যাত্রা হয়েছিল রকমারি তাঁবু সঙ্গে নিয়ে। বাম যুবদের পদযাত্রা কেমন হবে, সেই প্রশ্নে মীনাক্ষীর মন্তব্য, ‘‘সরকারি বদান্যতায় গোলাপ ফুল ছিটিয়ে পদযাত্রা তো আমাদের জন্য নয়! রাস্তাই পথ দেখাবে। তাঁবু রাজনীতিতে আমরা নেই! খোলা মাঠে মানুষের বেঁচে থাকার অ্যাজেন্ডা নিয়ে লড়াই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

DYFI Brigade Rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE