E-Paper

সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরতের চেষ্টা জীবনের: ইডি

তদন্তকারীদের দাবি, অনেকেই জীবনকৃষ্ণকে টাকা দিয়েও চাকরি পাননি। তাঁরা টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এমন কয়েকজনের বয়ানও নথিবদ্ধ করেছিল ইডি।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ০৭:১২
জীবনকৃষ্ণ সাহা।

জীবনকৃষ্ণ সাহা। —ফাইল চিত্র।

বছর দেড়েক আগে তৃণমূল বিধায়ক নিয়োগ দুর্নীতির সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ইডি সূত্রের দাবি, স্বামী জামিন পাওয়ার পরেই স্ত্রী টগর উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করে চাকরি না-পাওয়া লোকজনকে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা শুরু করেছিলেন। ওই সব সম্পত্তি স্ত্রীর নামেই কিনেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তাই টগরই সেগুলি বিক্রি করেছিলেন। প্রসঙ্গত, জীবনকৃষ্ণ বর্তমানে ইডি হেফাজতে আছেন। এ ব্যাপারে তাঁকে জেরা করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। যদিও একটি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত জীবনকৃষ্ণ টাকা ফেরতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য, আজ, শনিবার জীবনকৃষ্ণকে আদালতে পেশ করা হবে।

তদন্তকারীদের দাবি, অনেকেই জীবনকৃষ্ণকে টাকা দিয়েও চাকরি পাননি। তাঁরা টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এমন কয়েকজনের বয়ানও নথিবদ্ধ করেছিল ইডি। সম্প্রতি এমন কয়েকজন ইডি-কে জানান যে বিধায়কের স্ত্রী সম্পত্তি বিক্রি করে দফায়-দফায় টাকা ফেরত দিচ্ছেন। ওই লেনদেন নগদে হয়েছে বলেও ইডি সূত্রের দাবি। এ প্রসঙ্গে ইডি-র এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী টগরকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ ইডি সূত্রের দাবি, জীবনকৃষ্ণ কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে একাধিক আর্থিক পরামর্শদাতার সাহায্য নিয়েছিলেন। তাঁদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। ভবিষ্যতে তাঁদেরও তলব করা হবে।

তদন্তকারীদের দাবি, জীবনকৃষ্ণ নিজেকে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পর্দার আড়ালে রেখেছিলেন। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেওয়া টাকা প্রথমে তাঁর পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেজমা পড়ত। পরবর্তী কালে ওই টাকা তুলে বিভিন্ন ছোট মাপের সম্পত্তি কিনতেন তিনি। সে সব সম্পত্তিও নিজের বদলে পরিবারের সদস্য অর্থাৎ স্ত্রী, ছেলে, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নামে কিনতেন বিধায়ক। এমনকি, গাড়িচালক ও নিয়োগ দুর্নীতিচক্রের কয়েক জন এজেন্টের নামেও তিনি সম্পত্তি কিনেছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি।

ইডি-র এক কর্তার আরও দাবি, শুধু সম্পত্তি কেনা নয়, আত্মীয়-পরিজনদের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যবসাতেও চাকরি দুর্নীতি থেকে প্রাপ্ত টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বীরভূমের সাঁইথিয়ার বাসিন্দা এবং স্থানীয় পুরসভার কাউন্সিলর মায়া সাহাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণের পিসি। মায়ার স্বামী অর্থাৎ জীবনকৃষ্ণের পিসেমশাই সুব্রত সাহাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ইডি সূত্রের দাবি, ২০১৯ সালের পর সুব্রত সাহার নানা ব্যবসায় বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার মায়া ও সুব্রতর সব সম্পত্তির দলিল এবং গত১০ বছরের ব্যবসার লেনদেনের নথি, আয়কর রিটার্নের সমস্ত তথ্য তলব করা হয়েছিল। ওইসব নথি প্রাথমিকভাবে যাচাই করার পর জীবনকৃষ্ণের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব ঘণ্টাখানেক চলেছিল। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, সেই জিজ্ঞাসাবাদে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jiban Krishna Saha ED ED Raids Recruitment Case financial corruption

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy