Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Enforcement Directorate

নারদ: সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ ইডি-র

ইডি-র এক তদন্তকারী জানান, নারদ স্টিং অপারেশনের সূত্র ধরে মূলত ‘ঘুষ চক্রের’ হদিস পেতে তদন্ত করছে সিবিআই।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

এত দিন ধরে অপেক্ষা করা হচ্ছিল সিবিআইয়ের চার্জশিটের জন্য। সেই চার্জশিট দাখিলের কাজ অবশেষে সম্পন্ন হওয়ায় তাঁরা এ বার আদালতের অনুমতি নিয়ে নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের ‘আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তি’ বাজেয়াপ্ত করার তোড়জোড় চালাচ্ছেন বলে জানান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, এ বার অভিযুক্তদের সম্পত্তির তদন্ত দ্রুত শেষ করা হবে। অভিযুক্তেরা আইনি পথে যে-টাকা রোজগার করেছেন, তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব। না-মিললে আলাদা মামলা করা হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। সে-ক্ষেত্রে নতুন করে হাজতবাসও হতে পারে অভিযুক্তদের।

ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রায় প্রস্তুত। খুব শীঘ্রই তা আদালতে পেশ করা হবে এবং আদালতের অনুমতি নিয়েই অভিযুক্তদের আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্প্রতি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এই বিষয়ে সমস্ত রকম সম্ভাব্য আইনি পদক্ষেপ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’

ইডি-র এক তদন্তকারী জানান, নারদ স্টিং অপারেশনের সূত্র ধরে মূলত ‘ঘুষ চক্রের’ হদিস পেতে তদন্ত করছে সিবিআই। অভিযুক্তদের আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কথা ইডি-র। সেই তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আত্মীয়পরিজন, ঘনিষ্ঠদেরও সম্পত্তির হিসেব নেওয়া হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, তাঁদের কারও বেনামে সম্পত্তি রয়েছে কি না। তদন্তকারীদের দাবি, নারদ-কাণ্ডে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েক জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত শেষের পথে বলে জানাচ্ছে ইডি।

ইডি-র এক আইনজীবী জানান, নারদ-কাণ্ডে মূল মামলায় এফআইআর করেছে সিবিআই। সে-ক্ষেত্রে সিবিআই চার্জশিট পেশের আগে ইডি-র পক্ষে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া আইনত সম্ভব নয়। যদিও নারদ তদন্ত নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ তুলেছেন নারদ স্টিং অপারেশনের ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। তাঁর অভিযোগ, ২০১৭ সালে মার্চে নারদ নিয়ে তদন্তের জন্য সিবিআই এবং ইডি-কে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই বছরেই বিশেষ আদালতে মামলা নথিভুক্ত করে তদন্তে নেমেছিল ইডি। ম্যাথুর অভিযোগ, প্রায় চার বছর কেটে যাওয়া সত্ত্বেও তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আদালতে কোনও রিপোর্ট দেননি ইডি-র তদন্তকারীরা।

ইডি-র আইনজীবীদের বক্তব্য, ইডি-র মূল কাজ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা। সে-ক্ষেত্রে সিবিআইয়ের ঘুষ চক্র সংক্রান্ত তদন্তের ফলের উপরে নির্ভর করবে ইডি-র তদন্তের গতিপ্রকৃতি। সিবিআই এত দিন চার্জশিট দাখিল না-করায় তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা এসে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইডি-র দাবি, নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধু অভিযুক্তেরা নন, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁদের আত্মীয়স্বজন এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Enforcement Directorate Narada Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE