বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, রাজ্যে ‘ড্রপ-আউট’ শূন্য। আর বিধানসভারই শিক্ষা সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি তাদের রিপোর্টে সুপারিশ করেছে, ‘ড্রপ-আউট’-এর সংখ্যা হ্রাস করতে শিক্ষা দফতর ব্যবস্থা নিক! মন্ত্রী এবং বিভাগীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির পরস্পরের সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্যে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের স্কুল স্তরে ‘ড্রপ আউট’-এর প্রকৃত ছবি কি?
বিধানসভার চলতি অধিবেশনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সমীর জানা এই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট প্রশ্ন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রীকে। বিধায়কের প্রশ্ন ছিল, রাজ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কি ‘ড্রপ-আউট’ নেই? লিখিত জবাবে শিক্ষামন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ওই স্তরে স্কুলছুট নেই।
শুধু তা-ই নয়, ঠিক কী ভাবে এই স্কুলছুট বন্ধ করা গিয়েছে, ওই জবাবেই তার সবিস্তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, একটি শক্তিশালী ব্যবস্থার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কিত তথ্যভান্ডার তৈরি করা, তাঁদের উপস্থিতির উপরে নজরদারি করা এবং অনুপস্থিতদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার যে সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে, তা এই প্রক্রিয়ার সহায়ক হয়ে উঠেছে।
প্রায় কাছাকাছি সময়েই বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির ওই রিপোর্টটিও সামনে এসেছে। সেখানে ‘ড্রপ আউট’ বন্ধে শিক্ষা দফতরকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও এই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট তথ্য অবশ্য দেওয়া হয়নি। স্কুলছুটের সমস্যা সামনে রেখেই সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই আগামী ২৫ মার্চ যাদবপুর থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত ‘অধিকার মিছিলে’র ডাক দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, শুধু উচ্চ মাধ্যমিকেই পরীক্ষা দেয়নি ৫০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। ট্যাবের টাকা পাওয়ার পরে তারা গেল কোথায়?
রাজ্য সরকার লাগাতার কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ করলেও শিক্ষা দফতরের কমিটির পর্যবেক্ষণে এক উল্টো ছবিই ধরা পড়েছে। কমিটির রিপোর্টে কেন্দ্রীয় ও কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত প্রকল্পে রাজ্য সরকারের প্রদেয় ‘ম্যাচিং গ্রান্ট সমানুপাতিক হারে ও সময় মতো দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। বরাদ্দ অর্থের সদ্ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। সেই সঙ্গেই নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক আনুপাতিক হার রক্ষার কথা বলেছে কমিটি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)