Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
Egra

ভিন্‌ রাজ্যে বেতন মেলেনি, বাড়ির পথে ট্রেনে হামলা! এগরায় ফিরল যুবকের কফিনবন্দি দেহ

মহারাষ্ট্রের জলগাঁও শহরের একটি হোটেলের কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরছিলেন অমিত প্রহরাজ। তাঁকে ছত্তীসগঢ় থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে রেল পুলিশ।

মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ় থেকে বাড়ি ফিরেছে অমিত প্রহরাজের কফিনবন্দি দেহ।

মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ় থেকে বাড়ি ফিরেছে অমিত প্রহরাজের কফিনবন্দি দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২২ ২২:০০
Share: Save:

ভিন্ রাজ্যে গিয়ে কাজ করলেও বেতন মিলছিল না। অবশেষে সে কাজ ছেড়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তবে বাড়ির ফেরার পথে ট্রেনে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর হামলার শিকার হন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার এক যুবক। যার জেরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। এমনই দাবি যুবকের পরিবারের। মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ় থেকে বাড়ি ফিরল ওই যুবকের কফিনবন্দি দেহ।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম অমিত প্রহরাজ (৩৩)। তিনি এগরা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। মহারাষ্ট্রের জলগাঁও শহরের একটি হোটেলের কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরছিলেন অমিত। তাঁকে ছত্তীসগঢ় থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে রেল পুলিশ। গত ১৮ নভেম্বর মাথায় গুরুতর চোট নিয়ে ছত্তীসগঢ়ের বালোদাবাজার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল অমিতকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরের দিন তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রায়পুরের ডিকেএস সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ২০ তারিখ ওই হাসপাতালের আইসিইউ-তে মারা যান অমিত।

মঙ্গলবার তাঁর দেহ কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-সহ আত্মীয়স্বজনেরা। পরিবারের দাবি, ‘‘১৮ তারিখ সন্ধ্যা নাগাদ ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার পথে ফোনে অমিত জানিয়েছিল, কয়েক জন তাঁর সঙ্গে ঝামেলা করে তাঁকে মারধর করছে। এমনকি, ট্রেনে তাকে কোনও একটি ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়েছে বলেছিল। তার পর থেকেই অমিতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে ছত্তীসগঢ় পুলিশের তরফে জানা যায়, সেখানকার হাসপাতালে অমিতের মৃত্যু হয়েছে।’’

মঙ্গলবার অমিতের দেহ কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-পরিজনেরা।

মঙ্গলবার অমিতের দেহ কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরেছে। যা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ সূত্রে খবর, ছত্তীসগঢ়ে অমিতের চিকিৎসা চলাকালীন একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষায় দেখা যায়, তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লেগেছিল। রেল পুলিশের সহায়তায় অমিতকে প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গোড়ায় তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি ছিল না। ২০ তারিখ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সোমবার দেহটি ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার অমিতের কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে পৌঁছয়।

মৃতের পরিজনদের দাবি, ‘‘ট্রেনের মধ্যে ছেলেটি কী ভাবে হামলার শিকার হল, কারা এই ঘটনায় যুক্ত, তা খুঁজে বার করুক রেল পুলিশ।’’ ওই দুষ্কৃতীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিজনেরা। অমিতের পরিবারের আরও দাবি, মহারাষ্ট্রের যে হোটেলে অমিত কাজ করতেন, সেখানে বেশ কয়েক মাস তাঁকে বেতন দেওয়া হচ্ছিল না। তা নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অমিতের ঝামেলাও হয়। টাকা না পেয়ে খালি হাতেই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু পথে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হামলার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE