রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত মৃত, স্থানান্তরিত এবং অনুপস্থিত বা নিখোঁজ ভোটারের যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টের হাতে তুলে দিতে হবে। ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে এই নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুথ স্তরের আধিকারিকেরা (বিএলও) এজেন্টদের সঙ্গে (বিএলএ) বৈঠক করে ওই তালিকা তাঁদের দেবেন। এ ছাড়া, কমিশনের ওয়েবসাইটেও তা আপলোড করা হবে। বিহারের এসআইআরে যে নিয়ম মানা হয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও তা মানতে হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
বুধবার কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের বলা হয়েছে, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই মৃত, স্থানান্তরিত এবং নিখোঁজদের তালিকা বিএলএ-দের দেখাতে হবে। প্রতি রাজনৈতিক দল যে কর্মীদের এজেন্ট হিসাবে নিয়োগ করেছে, তাঁদের হাতে তালিকা তুলে দেওয়া হবে। যাঁরা একাধিক বার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন, একটি জায়গার তালিকায় তাঁদের নাম রেখে বাকি জায়গা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, যাঁদের বাড়িতে তিন বার বা তার বেশি গিয়েও বিএলও ফিরে এসেছেন, যাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি, তাঁদেরও নাম খসড়া তালিকায় থাকবে না।
আরও পড়ুন:
পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এখন এসআইআর প্রক্রিয়া চলছে। মোট পাঁচ লক্ষ বিএলও এই কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। এ ছা়ড়া, বিভিন্ন দলের বিএলএর সংখ্যা ১২ লক্ষেরও বেশি। কমিশন জানিয়েছে, বুথ স্তরে এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিএলওরা। তাতে প্রাথমিক ভাবে খসড়ায় কোনও ভুল থাকলে তা ধরা পড়বে এবং সংশোধন করে নেওয়া যাবে। কোনও বৈধ ভোটার যাতে তালিকা থেকে বাদ না-পড়েন, তা নিশ্চিত করতেই বিএলও-বিএলএ বৈঠক প্রয়োজন, জানিয়েছে কমিশন।
পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর-এর ফর্ম সংগ্রহ এবং তার তথ্য কমিশনের পোর্টালে আপলোড করার কাজ বা ডিজিটাইজ়েশন প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। বুধবার পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, মৃত ভোটারের সংখ্যা ২৪ লক্ষ ১৪ হাজার ৭৫০ জন। এ ছাড়া, ১১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮৮৯ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্থানান্তরিত হিসাবে একটি জায়গার তালিকা থেকে নাম বাদ যাচ্ছে ১৯ লক্ষ ৮৯ হাজার ৯১৪ জনের। ভুয়ো হিসাবে আরও ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৬২৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যান্য তালিকায় রয়েছেন ৫৪ হাজার ২৭ জন। সব মিলিয়ে বাদের খাতায় থাকছেন মোট ৫৭ লক্ষ ৫২ হাজার ২০৭ জন।
গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এনুমারেশন ফর্মের তথ্য কমিশনের পোর্টালে আপলোড করার শেষ দিন ১১ ডিসেম্বর। তার পর ১৬ ডিসেম্বর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।