E-Paper

হবে ভোটার সমীক্ষা, সময় বাঁধল কমিশন

পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি ভোটারের উপস্থিতিও পরিস্থিতির গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। তাই এ রাজ্যে নিবিড় সমীক্ষার জন্য পুরো প্রস্তুতি সেরে ফেলতে জেলা প্রশাসনগুলিকে সময় বেঁধে দিল কমিশন।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ০৭:১৮

—প্রতীকী চিত্র।

এ রাজ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবিড় ভোটার সমীক্ষা শেষ বার হয়েছিল ২০০২ সালে। তাতে বাদ গিয়েছিল প্রায় ২৮ লক্ষ নাম। তার পর থেকে প্রায় ২৩ বছর এমন সমীক্ষা আর হয়নি। এর মধ্যে ভোটার তালিকায় বহু ভুয়ো এবং অবৈধ ভোটারের তথ্য পাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আবার পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি ভোটারের উপস্থিতিও পরিস্থিতির গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। তাই এ রাজ্যে নিবিড় সমীক্ষার জন্য পুরো প্রস্তুতি সেরে ফেলতে জেলা প্রশাসনগুলিকে সময় বেঁধে দিল কমিশন। সমীক্ষার প্রাথমিক কাজে নিযুক্ত বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) নিয়োগ প্রক্রিয়া এ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। উদ্দেশ্য— নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির সমীক্ষায় সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধ করা।

গত ১ জুলাই দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা দাবি করেছিলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের সময়ের ভোটার তালিকাকেই যেন ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। কমিশন তা ভেবে দেখার আশ্বাস দিলেও, এ রাজ্যে নিবিড় সমীক্ষা যে নির্ধারিত সময়েই হতে চলেছে, সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত প্রশাসনের অনেকেই। তবে বিরোধীদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০০২ সালে এ রাজ্যে নিবিড় ভোটার সমীক্ষার সময়ে কেন্দ্রে তৎকালীন ক্ষমতাসীন এনডিএ সরকারের শরিক ছিল তৃণমূলও। কমিশনের এক কর্তার কথায়, “সংবিধানের ৩২৪ ধারা নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়েছে। ভোটার তালিকা পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই পদক্ষেপ করারই কথা। আইন বলছে— যোগ্যের যেন ভোটাধিকার থাকে, আর অযোগ্য যেন ভোটার তালিকায় না থাকেন।” কমিশন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত নিবিড় সমীক্ষার প্রাথমিক তালিকায় ৪ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৪৬ জন ভোটার ছিলেন এ রাজ্যে। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষায় তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন ৩৫ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩১৭ জন। বাদ গিয়েছিলেন ৬৯ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৫১ জন।

তার পরে যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়, তাতে ৪ কোটি ৫২ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫৭৪ জনের নাম ছিল। সেই তালিকায় আবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ২১৫ জন। বাদ গিয়েছিলেন ৪৭ হাজার ২৬৯ জন। সমীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯১ হাজার ৫২০ জনের নাম ছিল। অর্থাৎ, প্রাথমিক তালিকা থেকে ২৭ লক্ষ ৯১ হাজার ২৬টি নাম বাদ গিয়েই তৈরি হয়েছিল চূড়ান্ত তালিকা। এক কর্তার কথায়, “এ বারেও সমীক্ষার পরে নতুন নাম তোলা বা বাদ দেওয়ার আবেদন করার সুযোগ থাকবে। ফলে যোগ্য কেউ যে বাদ যাবেন না, তা নিশ্চিত করা যায়।”

জেলা প্রশাসনগুলি জানাচ্ছে, ৫০-৭০% করে অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক বিএলও বাদ দিতে হচ্ছে। কিন্তু কমিশনের বেঁধে দেওয়া প্রাথমিক সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও, স্থায়ী বিএলও নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও শেষ করা যায়নি। তাই ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তা শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এক কর্তার কথায়, “ধরে নেওয়া যায়, এই কাজ শেষ হলেই নিবিড় যাচাইয়ের বিজ্ঞপ্তিপ্রকাশিত হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Voter Card Correction Election Commission of India Fake Voter Card

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy