E-Paper

বিএলওদের সমস্যা ঠেকাতে পদক্ষেপের নির্দেশ

বুধবার নদিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কমিশনের কর্তাদের বৈঠকে বিষয়টি ওঠে। জেলা স্কুল পরিদর্শককে কমিশনের নির্দেশ, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সতর্ক করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০৫:০৩

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

নিজস্ব কর্মক্ষেত্রেও সমস্যা বাড়ছে বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) একাংশের। তা নিয়ে জমছে একের পর এক অভিযোগ। এ বার তা ঠেকাতে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বুধবার সীমান্তবর্তী দুই জেলা (নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ) প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, সিইও মনোজ আগরওয়াল, উপ নির্বাচন কমিশনার অভিনব আগরওয়াল, কমিশনের প্রধান সচিব এস বি যোশী এবং মলয় মল্লিক। জেলাগুলির ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক গুরুত্বকে মাথায় রেখে সেখানেও মৃত, একাধিক ঠিকানায় থাকা ব্যক্তি, অনুপস্থিত এবং ভুয়ো-ভূতুড়ে ভোটারদের নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তথ্যের স্বচ্ছতার প্রশ্নে প্রত্যেককে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে কমিশনের হাতে থাকা কড়া আইনের কথাও।

এসআইআরের (ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন) কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই বেশির ভাগ বিএলও হিসেবে নিয়োগ করেছে জেলা প্রশাসনগুলি। অথচ এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া, জমা নেওয়া, ভোটারের ছবি তোলা, ফর্ম ডিজিটাইজ় করা এবং কমিশনের নির্দিষ্ট অ্যাপে ফর্মে লেখা ভোটার-তথ্য পুনরায় লিখে আপলোড করতে হচ্ছে বিএলও-দের। সময়ের নিরিখে সেই কাজের বহর অনেকগুণ বেশি। আবার কমিশনের নির্দেশ—পুরো সময়ের জন্যই এই কাজ আপাতত করতে হবে বিএলও-দের। তাঁদের কাজের উপর ভর করেই ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। বিএলও-দের একাংশের অভিযোগ, বিপুল এই কাজ সামলাতে গিয়ে স্কুলে যেতে পারছেন না তাঁরা। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ দুর্ব্যবহার করছেন। হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত করে দেওয়া হচ্ছে নানা জায়গায়।

বুধবার নদিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কমিশনের কর্তাদের বৈঠকে বিষয়টি ওঠে। জেলা স্কুল পরিদর্শককে কমিশনের নির্দেশ, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সতর্ক করতে হবে। তাঁরা অনুপস্থিত করা বা অন্য সমস্যা যাতে না করেন, জেলা স্কুল পরিদর্শকদেরই তা দেখতে হবে। কিছু আধিকারিকের বক্তব্য, বিএলও-দের এই কাজ ‘অন-ডিউটি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে বলেই কড়া বার্তা। একটি জেলার উদ্দেশে বার্তার অর্থ, বাকি জেলাগুলির জন্য তা কার্যকর হওয়া।

বিএলও-দের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করলেও, এসআইআরের কাজে গাফিলতি হলে কমিশন যে কড়া পদক্ষেপ করবে, তা স্পষ্ট করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেই শঙ্কা বিএলও থেকে জেলাশাসক পর্যন্ত সকলেরই থাকে। বিহারে এসআইআর ঘোষণার পরে বিশেষ করে মুর্শিদাবাদে রেকর্ড সংখ্যায় ভোটার কার্ডের আবেদন জমা হতে থাকে। অন্যান্য সময়ের স্বাভাবিক গতির সঙ্গে যা একেবারেই মানানসই নয়। আবার জেলাগুলির রাজনৈতিক সমীকরণও খুব জটিল। ফলে বিএলও, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা জেলাশাসকদের উপর রাজনৈতিক প্রভাব চলে আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কমিশন-কর্তারা। সেই দিক থেকে ফের সতর্ক করা হয় সবাইকে।

রাজ্যে চলতি এসআইআরে ফর্ম ডিজিটাইজ়ের হার বাড়ছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কমিশনের দেওয়া তথ্যে এই হার ১৯.৩৬%। সংখ্যার হিসাবে ১.৪৮ কোটির কিছু বেশি। মঙ্গলবার তা ছিল ১৩.১৮% (১.০৯ কোটি)। এ দিন পর্যন্ত ফর্ম বিল হয়েছে প্রায় ৯৯.৭২%। এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২ রাজ্যে ফর্ম ডিজিটাইজ় হয়েছে প্রায় ১৬%। কমিশন জানায়, ফর্ম ডিজিটাইজ়ের কাজে গতি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সার্ভারের ক্ষমতা-বৃদ্ধিও হবে দ্রুত। কারণ, বিএলও-দের অনেকেরই অভিযোগ, সফটওয়্যারের গতি কম থাকায় কাজে অসুবিধা হচ্ছে।

কমিশন-কর্তারা মালদহে গিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন আজ, বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার তাঁরা নিউ টাউনে ভোটযন্ত্রের (ইভিএম- ভিভিপ্যাট) প্রথম পর্যায়ের যাচাই সংক্রান্ত কর্মশালায় থাকবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision BLO West Bengal government SIR Election Commission of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy