Advertisement
E-Paper

ব্যালটে নয়, পুরভোট কি ইভিএমেই করতে চাইছে রাজ্য?

রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আসন সংরক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:০৫
বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে ইভিএম-ভিভিপ্যাটের কার্যকারিতা হাতেকলমে দেখানো হয়েছে।—নিজস্ব চিত্র।

বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে ইভিএম-ভিভিপ্যাটের কার্যকারিতা হাতেকলমে দেখানো হয়েছে।—নিজস্ব চিত্র।

ভোটযন্ত্রে (ইভিএম) হওয়া নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন লোকসভা ভোটের আগে থেকেই। আর ভোট মিটতেই তিনি বলেছিলেন, ইভিএমে ‘প্রোগ্রামিং’ করা ছিল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে সব ভোট করাবে, সেই সব ভোটে আর ইভিএম নয়, ফিরিয়ে আনা হবে ব্যালট— একাধিক বার ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে কি উল্টোটাই ঘটতে চলেছে? সেই তাঁর জমানাতেই পুরভোট কি ইভিএমে-ই হবে বাংলায়? পুরভোটের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি পর্ব অন্তত তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে।

রাজ্যে শেষ ব্যালটে ভোট হয়েছিল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে। বছর দুয়েক আগে অর্থাৎ ২০১৮-র সেই নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। ব্যালট লুঠের পাশাপাশি গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা মারার অভিযোগও উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আসন্ন পুর ভোটে পুরনো পঞ্চায়েত বিতর্ককে মাথায় রেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন চাইছে, ইভিএমেই ভোট প্রক্রিয়া সারতে। যদিও এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন।

ইতিমধ্যেই ৯৩টি পুরসভার আসন সংরক্ষণ সংক্রান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আসন সংরক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তার পরেই ঘোষিত হবে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট। ওই সূত্রেই জানা যাচ্ছে, আগামী এপ্রিল এবং মে-জুন মাসে দু’টি ভাগে পুর নির্বাচন হতে পারে। ওই ৯৩টি পুরসভার সঙ্গে সেই সঙ্গে বাকি ১৭টিতেও ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। এপ্রিলের শুরুতে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভায় ভোট করতে চায় কমিশন। সেখানে ব্যালটের বদলে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট ব্যবহার করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এ বারই প্রথম পুর নির্বাচনে ভিভিপ্যাট-সহ ভোট হবে।

বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের ইভিএম (এম-৩) এবং ভিভিপ্যাটের কার্যকারিতা হাতেকলমে দেখানো হয়েছে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে। গত কাল ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল)-এর ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট, হায়দরাবাদ থেকে কয়েক জন এসে তা দেখিয়ে গিয়েছেন। তাঁরা ভোটের জন্যে যন্ত্র সরবরাহ করতেও প্রস্তুত। সে কারণেই মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের পুর নির্বাচন ইভিএমে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্যালটে রাজ্যে শেষ ভোট হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে। পুর নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আসন সংরক্ষণ নিয়ে খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তার পর আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে। এর মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে, ভোট ব্যালটে না ইভিএমে হবে। এমনটাও হতে পারে, কিছু পুরসভায় ব্যালটে এবং বাকিগুলিতে ইভিএমে।’’

আরও পড়ুন: দল ছেড়ে যেখানে খুশি যেতে পারেন পবন, নীতীশের পাল্টা ক্ষুব্ধ নেতাকে

কমিশন সূত্রে খবর, তাদের কাছে প্রায় ২০ হাজারের মতো ইভিএম রয়েছে। তবে সেগুলি এম-২ পর্যায়ের। গত লোকসভা নির্বাচনে এম-৩ ভোটিং মেশিনে যে হেতু ভোট হয়েছে, তাই উন্নত মানের ওই যন্ত্রেই ভোট করাতে আগ্রহী কমিশন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচেনর মতো বিতর্ক এড়াতে, সঙ্গে ভিভিপ্যাটও রাখতে চাইছেন কর্তারা। তাঁদের দাবি, এই ভোটযন্ত্র হ্যাক বা ট্যাম্পারিং করা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: স্টেশনে তালা, উড়ছে না বিমান, ভাইরাস ঠেকাতে নজরবন্দি চিনের শহর

তবে কমিশনের অন্য এক কর্তা জানাচ্ছেন, আসন্ন পুর নির্বাচন ব্যালটে হবে না ইভিএমে, তা নিয়ে আলোচনা এখনও চলছে। কোনও রাজ্যনৈতিক দল বা রাজ্যের তরফে ব্যালটে ভোট করার পক্ষে মতামত এলে, তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগে সর্বদলীয় বৈঠকে ব্যালট এবং ইভিএম নিয়ে প্রস্তাব আসতে পারে বলে মনে করছেন ওই কর্তা। ভোট কবে হবে, কত দফায় হবে— সে বিষয়ে রাজ্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কমিশনই।

Ballot EVM Municipal Election Election Commission West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy