E-Paper

কেন মৃত্যু, আত্মহত্যা, তথ্য তলব কমিশনের

বিহারে মোটের উপর নির্বিঘ্নে হলেও, এ যাত্রায় একাধিক রাজ্যেই বিএলও-রা আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে কমিশন। ওই সব মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যের সিইও-দের প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৮

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এসআইআর শুরু হওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য থেকে বুথ লেভল অফিসার বা বিএলও-দের মৃত্যু ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর আসছে। এর পিছনে কি কাজের চাপ, না কি অন্য কারণ রয়েছে— সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই নির্দেশ মতো, যে সব এলাকায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার জেলাশাসকদের থেকে সবিস্তার রিপোর্ট নিতে হবে সিইও-দের।

এরই মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে বিএলও-দের মৃত্যু নিয়ে সরব হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। আজ সংবাদমাধ্যমের পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাহুল জানান, গত ১৯ দিনে এসআইআরের কাজ করতে গিয়ে ৬ রাজ্যে ১৫ জন (গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশে ৪, পশ্চিমবঙ্গে ৩, রাজস্থানে ২ এবং কেরল ও তামিলনাড়ুতে এক জন করে) বিএলও-র মৃত্যু হয়েছে। রাহুলের দাবি, এসআইআরের কাজ করছেন, এমন বিএলও-দের মৃত্যুর কারণ হল অত্যাধিক কাজের চাপে হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হওয়া, মানসিক চাপ, আত্মহত্যা। রাহুলের কথায়, ‘‘এসআইআর কোনও সংস্কার নয়, চাপিয়ে দেওয়া অপরাধ... ক্ষমতা ধরে রাখতে গণতন্ত্রের বলি (বিএলও-রা)।’’

বিহারে মোটের উপর নির্বিঘ্নে হলেও, এ যাত্রায় একাধিক রাজ্যেই বিএলও-রা আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে কমিশন। ওই সব মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যের সিইও-দের প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএলও পিছু গড়ে এক হাজার জন ভোটারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই সেই অর্থে বিএলওদের কাজের চাপ বেশি হওয়ার কথা নয় বলেই কমিশন মনে করে। তা সত্ত্বেও বিএলওদের আত্মহত্যার ঘটনা, মানসিক অবসাদগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে কমিশন কর্তারা। তাই কর্মীরা যাতে সবাই মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকেন, সে দিকেও বিশেষ করে নজর দিতে বলা হয়েছে।

শনিবার নদিয়ারই এক বিএলও রিঙ্কু তরফদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার এবং তাঁর ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গেও যথেষ্ট অস্বস্তিতে কমিশন। পরিস্থিতি সামলাতে ভিন্ন ছবি তুলে ধরারও চেষ্টা হয়েছে কমিশনের তরফে। এ দিনই রিঙ্কুর জেলা নদিয়ার হাঁসখালি ব্লকের এক বিএলও ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডলের কথা জানানো হয়েছে, যিনি ১৭ দিনের মধ্যে তাঁর এক্তিয়ারে থাকা ৮০৬ জন ভোটারের তথ্য কমিশনের অ্যাপে তুলে দিয়েছেন। অর্থাৎ, পুরো কাজ শেষ করেছেন। সেই এলাকার ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং সহকারী ইআরও ওয়াহিদের এই কাজের তথ্য জানিয়েছেন কমিশনকে। যদিও পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পরিবেশ-পরিস্থিতি সব ক্ষেত্রে এক হয় না। তাই কোনও বিএলও দ্রুত কাজ শেষ করতে পারেন, কারও কাজ শেষ করতে বেশি সময় লাগতেই পারে। ওই অংশের এ-ও বক্তব্য, অস্বস্তিতে পড়ে এটা কমিশনের মুখরক্ষার চেষ্টা।

এর মধ্যে এ রাজ্যে এসআইআরের পূরণ হওয়া ফর্ম ডিজিটাইজ় হওয়ার কাজেও রবিবার গতি বেড়েছে। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে ফর্ম ডিজিটাইজ়ের হার রবিবার হয়েছে প্রায় ৪৯.২৬ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্য মিলিয়ে সেই হার ৩৯.২৯ শতাংশ। এই ১২টি রাজ্যে ৯৯ শতাংশেরও বেশি ফর্ম দেওয়াও হয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যে সেটা হয়েছে ৯৯.৭৫ শতাংশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision Death Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy