E-Paper

প্রয়োজনে সহকারী পাবেন বিএলও-রা

গত কয়েকদিন ধরেই বিএলও-দের একাংশের মধ্যে কাজের চাপ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল। ফর্ম দেওয়া-নেওয়ার সঙ্গে তা ডিজিটাইজ় এবং তথ্য লিখে আপলোড করার বাড়তি চাপ নিতে নারাজ হচ্ছিলেন তাঁরা। এই অবস্থায় ক্ষেত্র বিশেষে সহকারী বিএলও নিয়োগের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৫:৩২

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

এসআইআরের (ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন) কাজ নিয়ে বিএলও-দের একাংশের ক্ষোভ বাড়ছিল ক্রমশ। শনিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, যেখানে ১২০০-র বেশি ভোটার, সেখানে যে বিএলও-দের একার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না, তাঁদের সহকারী দিতে হবে। এ দিন ওই বৈঠকে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়ালকে সঙ্গে রেখে উপনির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী-সহ কমিশনের কর্তারা জেলাশাসকদের বলে দিয়েছেন, অযোগ্য এক জন ভোটারের উপস্থিতিও খসড়া তালিকায় থাকলে দায় বর্তাবে এই কাজে জড়িত আধিকারিকদের উপরেই। তাতে জেল-জরিমানার মতো শাস্তিও হতে পারে। একাধিক অভিযোগ জমা পড়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকেও সতর্ক করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই বিএলও-দের একাংশের মধ্যে কাজের চাপ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল। ফর্ম দেওয়া-নেওয়ার সঙ্গে তা ডিজিটাইজ় এবং তথ্য লিখে আপলোড করার বাড়তি চাপ নিতে নারাজ হচ্ছিলেন তাঁরা। এই অবস্থায় ক্ষেত্র বিশেষে সহকারী বিএলও নিয়োগের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে জেলাগুলি জানিয়েছে, আলাদা করে বিএলও-অ্যাপের মাধ্যমে ছবি তোলার জন্য পৃথক লোকের ব্যবস্থা করা হোক এবং তথ্য নথিবদ্ধ করতে মোবাইলের পাশাপাশি সুবিধা দেওয়া হোক কম্পিউটার ব্যবহারের। সেই প্রস্তাবও লিখিত ভাবে চেয়েছে কমিশন। তবে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ভোটারের ছবি তুলতেই হবে। যে ভোটারের আত্মীয় ফর্ম ভরে জমা দেবেন, তাতে ছবি সাঁটানো থাকতে হবে। ছবি যে ভোটারেরই তা যাচাই করে আপলোড করতে হবে বিএলও-কে। এ ক্ষেত্রেও কোনও অসাধু প্রবণতা যে বরদাস্ত করা হবে না, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

এসআইআরের ফর্ম বিলির কাজ প্রায় শেষ। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৭.৫৫ কোটি (প্রায় ৯৯%) ফর্ম বিলি করা হয়েছে। জেলাভিত্তিক ভাবে গড়ে ২-৩% ফর্ম গ্রহণ করার কাজও হয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, এ দিন পর্যন্ত জমা পড়া প্রায় ৪০ লক্ষ ফর্ম হয়েছে ডিজিটাইজ়ও। আজ, রবিবার থেকেই সে কাজে গতি বাড়াতে বলা হয়েছে। জেলাগুলি জানাচ্ছে, এ কাজে সর্বাধিক দিন দশেক সময় পাওয়া যাবে। তার পরেই শুরু হবে খসড়া ভোটার তালিকার প্রস্তুতি। তবে জেলাশাসকদের অনেকেই কমিশনকে জানিয়েছেন, কিছু ভোটারকে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাওয়া যাচ্ছে না বলে ফর্ম দেওয়া যায়নি এখনও। কমিশনের বক্তব্য, তিনবার বাড়ি যাওয়ার পরেও যাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না, এলাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে তাঁদের সম্পর্কে। কমিশনের অ্যাপে তাঁদের নামের পাশে সেই তথ্য দাখিল করতে হবে। এখন বিএলও-অ্যাপে এডিট বা সংশোধনের সুবিধা রয়েছে। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই ভোটার যোগাযোগ করলে তাঁকে ফর্ম দেওয়া হবে। তখন তথ্য সংশোধন করে তা জানিয়েও দেবেন বিএলও। তাঁকে একান্ত না পাওয়া গেলে খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকবে না। তখন ৯ ডিসেম্বরের পরে কমিশনকে আবেদন করতে পারবেন তিনি।

এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে সতর্ক করা হয়েছে। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, সেই জেলা থেকে তারা অনেক অভিযোগ পেয়েছে। মৃত, একাধিক ঠিকানায় নাম, অনুপস্থিত বা ভূতুড়ে ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি কমিশন বরদাস্ত করাবে না। এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপের জন্য যে সুনির্দিষ্ট আইন কমিশনের হাতে রয়েছে, তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে।

অন্য দিকে, একাধিক কর্মসূচিতে রাজ্য সফরে আসছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। ১৮ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, সচিব এস বি যোশী, অপর সচিব মলয় মল্লিক এবং উপ সচিব অভিনব আগরওয়াল এসে এসআইআরের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে। ওই সফরে তাঁরা যাবেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদেও। ১৮ নভেম্বরই কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে হবে বৈঠকও। ২১ নভেম্বর ভোটযন্ত্রের (ইভিএম ভিভিপ‍্যাট) প্রথম স্তরের যাচাই-কর্মশালাতেও থাকবেন তাঁরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision West Bengal government SIR BLO Election Commission of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy