তার লাগবে কবে? নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবনের প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। বছর পাঁচেক আগে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিদ্যুৎ তো দূরের কথা, বেশিরভাগ গ্রামে এখনও বিদ্যুতের খুঁটি পর্যন্ত পড়েনি। কোথাও আবার বিদ্যুৎ এসেছে ঠিকই। কিন্তু সেখানে ভোল্টেজ থাকে নামমাত্র।
ফের ভোট এসেছে। শুরু হয়েছে প্রচার। ফের প্রার্থীরা বলছেন গ্রামে বিদ্যুৎ আসবে। কিন্তু এ বার প্রতিবাদ জানাতে ক্যানিং মহকুমার বাসিন্দারা অনেকেই ইভিএমের নোটার বোতামকে হাতিয়ার করতে চাইছেন।
২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ক্যানিঙে এসে বলেছিলেন দু’বছরের মধ্যে গ্রামীণ বিদ্যুৎ যোজনা প্রকল্পে মহকুমার প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবেন। কিন্তু সেই সময় সীমা পেরিয়ে গিয়েছে বহুদিন আগেই। গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় এখনও অনেক জায়গাতেই বিদ্যুতের খুঁটি পর্যন্ত পড়েনি। আর কিছু জায়গাতে খুঁটি পড়লেও তার লাগানো হয়নি। যে সমস্ত জায়গাতে বিদ্যুতের আলো এসেছে সেখানে ভোল্টেজ এতটাই কম যে কোনও কাজ করা যায় না। ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকার সারেঙ্গাবাদ, দেউলি ১ ,কালিকাতলা, মঠেরদিঘি, আঠারোবাকি, নারায়ণপুর, ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা এলাকার দাঁড়িয়া, হাটপুকুরিয়া, ইটখোলা, গোসাবা বিধানসভার বালি ১, ২, সাতজেলিয়া, লাহিড়িপুর, কুমিরমারি, সোনাগাঁ, দুলকি, আমতলি, পাঠানখালি, মোল্লাখালি-সহ বাসন্তী বিধানসভা এলাকার হোগলডুরি, ইটেভাটি, ১১ নং কুমড়োখালি, ১২ তীতকুমার, ঝড়খালির ত্রিদিবনগর, গরাণবোস-সহ এলাকার অধিকাংশ জায়গাতে এখনও সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও ভোল্টেজ এতটাই কম থাকে যে কোনও কাজ ঠিক মতো করা যায় না।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে টাকার কিছুটা সমস্যা ছিল। পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরু হলেও এখনও তা শেষ করা যায়নি। আশা করা যায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ হবে। তবে এলাকার বিভিন্ন দ্বীপে বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে যাওয়া, নদীর উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার কিছু সমস্যা রয়েছে। অনেক সময় স্থানীয় কিছু সমস্যার কারণেও কাজের গতি থমকে গিয়েছে। তাই দেরি হয়েছে।’’
জীবনতলার মঠেরদিঘির বাসিন্দা আজিজুল মোল্লা, রবি রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে শুনছি এলাকায় বিদ্যুৎ আসবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। তাই এ বার আমরা ঠিক করেছি ইভিএমে নোটার বোতাম টিপব।’’ গোসাবার ছোটমোল্লাখালির বাসিন্দা অমিত কয়াল, দীননাথ নস্কররা বলেন, ‘‘ভোট এলেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতিশ্রুতি শোনা যায়। ভোট শেষ হয়ে গেলে তাঁদের আর সে সব কথা মনে থাকে না।’’
ক্যানিং ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী সওকত মোল্লা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘এটি সত্যিই বড় সমস্যা। তার উপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এ নিয়ে আমরা প্রশাসনিক স্তরে একাধিকবার জানিয়েছি।’’
ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রের জোটের প্রার্থী কংগ্রেসের অর্ণব রায় বলেন, ‘‘এই সরকার খালি প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছে। কোনও কাজ করেনি। যা গরম পড়ছে তাতে মানুষের ক্ষোভ থাকাটা স্বাভাবিক। এই সরকার উন্নয়নের সব দিক থেকে ব্যর্থ।’’
বাসন্তীর বিদায়ী বিধায়ক তথা এই কেন্দ্রের আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্কর বলেন, ‘‘২০১১ সালের মধ্যে আমরা সুন্দরবনে বিদ্যুতের কাজ শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে সেই কাজ শেষ হয়নি। আমাদের সময় যেটুকু কাজ হয়েছিল ওইটুকুই আছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর কাজ তেমন এগোয়নি।’’
তৃণমূলের পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগ। তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে লাগানো পোস্টার-ব্যানার-ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগরের টালিখোলা ও চার মাইল এলাকায়। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy