Advertisement
E-Paper

শেষ মুহূর্তে এল কেন্দ্রীয় বাহিনী, কাজ টহলদারি

কলকাতা পুরসভার ভোটে মাত্র তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কাজ চালাতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ৯১টি পুরসভার ভোটের প্রাক্কালে শুক্রবার সকালে রাজ্যে ৩১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্য সরকারকে তা জানানো হল দুপুরেই। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চাহিদা ছিল ১৫০ কোম্পানির। তার উপরে প্রশাসন সূত্রে জেলায় জেলায় বাহিনী ব্যবহারের যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে বাদ পড়েছে তেতে থাকা কোচবিহার, বীরভূমের নাম।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৮
অ্যাকাডেমির সামনে বিশিষ্টদের সভা নিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে বেরোচ্ছেন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাপস রায়। — নিজস্ব চিত্র।

অ্যাকাডেমির সামনে বিশিষ্টদের সভা নিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে বেরোচ্ছেন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাপস রায়। — নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা পুরসভার ভোটে মাত্র তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কাজ চালাতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ৯১টি পুরসভার ভোটের প্রাক্কালে শুক্রবার সকালে রাজ্যে ৩১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্য সরকারকে তা জানানো হল দুপুরেই। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চাহিদা ছিল ১৫০ কোম্পানির। তার উপরে প্রশাসন সূত্রে জেলায় জেলায় বাহিনী ব্যবহারের যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে বাদ পড়েছে তেতে থাকা কোচবিহার, বীরভূমের নাম। কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়ার কথা টেলিফোনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানান রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। কোথায় কোথায় ওই বাহিনী পাঠাতে হবে কমিশনও তা নবান্নকে জানিয়ে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী ওই বাহিনীকে কেবলমাত্র টহলদারির জন্যই মোতায়েন করা হবে। শনিবারের নির্বাচনের জন্য রাজ্যে যে ৩১ কোম্পানি বাহিনী আসছে, তা শুক্রবার দুপুরে প্রথম জানা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। দুপুর পৌনে একটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিকদের জানান, ‘‘এক ঘণ্টা আগে খবর পেলাম, আমাদের প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী আমাদের রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। শনিবার ভোট। দূরদূরান্তে কী ভাবে বাহিনী পাঠাব বলুন তো! মালদহ যেতে এখান থেকে আট ঘণ্টা লাগে। সেখান থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর যেতে আরও তিন ঘণ্টা। ভূগোলটা জানতে হবে তো!’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যেখানে যেখানে পারব, আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে দেব। এগুলো আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হয়। আমি অনেক দিন আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে বলেছিলাম।’’ এত দেরিতে কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক? রাজ্যে দু’দফার পুরভোট নির্বিঘ্নে শেষ করার জন্য ১৫০ কোম্পানি আধাসেনার দাবি জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু প্রথম দফার নির্বাচনে পাওয়া যায় মাত্র তিন কোম্পানি আধাসেনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ১৮ এপ্রিলের নির্বাচনে যে ভাবে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠেছে, তাতে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকেও শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ জানানো হয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। ঠিক হয় পরের ধাপের নির্বাচনে আধা সেনার সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে রাজ্য কী ভাবে এই বাহিনীকে ব্যবহার করবে, তা নিয়ে সন্দিহান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের এক অফিসার বলেন, অতীতে দেখা গিয়েছে পর্যাপ্ত বাহিনী পাঠিয়েও লাভ হয়নি। বহু ক্ষেত্রে বাহিনীকে বসিয়ে রাখার অভিযোগও উঠেছিল। ওই ৩১ কোম্পানি বাহিনী কোথা থেকে আসছে, তা পরিষ্কার করে দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেন, ‘‘এঁরা সবাই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান। এখন এ রাজ্যেই কর্মরত। তাঁরা যে যে জেলায় রয়েছেন, পুরভোটের কাজে তাঁদের সেই জেলাতেই ব্যবহার করা হবে।’’ সুশান্তরঞ্জন জানান, দিন ১৫ আগে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে না। তার পরে তিনি নিজে আর কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কোথাও দরবার করেননি বা চিঠি দেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসায় ভালই হল।’’ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কী ভোটের কাজে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা ঘোষণা করতে পারেন? এতে কি বিধি ভঙ্গ হয় না? সুশান্তরঞ্জনের জবাব, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ তার পরে বলেন, ‘‘অন্য রাজনৈতিক নেতারাও তো বলেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়ার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় কোচবিহার, বীরভূম, বর্ধমানে বিরোধীরা ক্ষুব্ধ। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ঘাটতি রয়েছে।’’ সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক রামচন্দ্র ডোমের কটাক্ষ, ‘‘এখানে অনুব্রত (মণ্ডল) বাহিনী, মনিরুল (ইসলাম) বাহিনী আছে, তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দরকার হয়নি!’’ বিজেপি-র বর্ধমান (পূর্ব) জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিকের বক্তব্য, ‘‘দেদার ভোট লুঠ ও বুথ দখল হতে পারে বলে আমরা মনে করছি।’’

central force Nabanna Mamata Banerjee Municipal election election poll Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy