Advertisement
২৪ মে ২০২৪
TET Scam

TET scam: দুর্নীতির গোড়া অনেক গভীর, ১০ বছর আগে শুরু হয় শিক্ষায় অবৈধ নিয়োগ, দাবি ইডির

তদন্তকারীদের দাবি, ২০১২-তে প্রাথমিক টেট হয়েছিল। পরবর্তী কালে ২০১৪-র টেট ২০১৫-তে হয় এবং ২০১৭-র পরীক্ষা ২০২১-এ হয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২২ ০৬:২৬
Share: Save:

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া শিক্ষা দফতরের নানা নথি এবং দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রের দাবি, শিক্ষায় সরকারি নিয়োগে দুর্নীতির শুরুটা অন্তত ১০ বছর আগে। ২০১২-র প্রাথমিক টেট (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) থেকেই ওই দুর্নীতির শুরু বলে দাবি তদন্তকারীদের একটি সূত্রের। সূত্রের আরও দাবি, চাকরি বিক্রির জন্য অতিরিক্ত পদও না কি সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে তাঁদের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

তদন্তকারীদের দাবি, ২০১২-তে প্রাথমিক টেট হয়েছিল। পরবর্তী কালে ২০১৪-র টেট ২০১৫-তে হয় এবং ২০১৭-র পরীক্ষা ২০২১-এ হয়। ২০১৪-র উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষাও সময় অনুযায়ী হয়নি এবং ওই পরীক্ষার মূল্যায়নের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি। তদন্তকারীদের দাবি, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি), প্রাথমিক টেট এবং উচ্চ প্রাথমিকের সব নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি ধোঁয়াশায় ভরা। ইডি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ নাকি জানিয়েছেন, ২০১২-তে তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন না। তাই ওই বিষয়ে তাঁর জানা নেই।

তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, তদন্ত যত এগোচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও ‘প্রভাবশালীর’ নাম উঠে আসছে। রাজ্য জুড়ে শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ, পুরসভার কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত কর্তাদের সুপারিশে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। টাকার লেনদেনও হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।

তদন্তকারীদের দাবি, মূলত শাসক দলের কর্মীদেরই বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে এবং তা সব ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমেই করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। একাধিক প্রভাবশালী এবং শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তা-কর্মীদের যোগসাজশের তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সচিব সুকান্ত আচার্য ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য-সহ একাধিক আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দুর্নীতি কাণ্ডের লভ্যাংশের টাকা কোথায় পৌঁছেছে এবং সম্পত্তি-সহ কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে তার একাধিক সূত্র হাতে এসেছে।’’

এ দিকে, অর্পিতা তদন্তকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছেন বলেও সোমবার অভিযোগ তুলেছেন তদন্তকারীরা। প্রথম পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদে অর্পিতার দাবি ছিল, তাঁর সঙ্গে পার্থের ৫-৬ বছর আগে পরিচয় হয়েছে। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের ‘অপা’ বাড়ির দলিল অনুযায়ী, পার্থ ও অর্পিতার সম্পর্ক ২০১২ সাল থেকে রয়েছে। তদন্তকারীদের কথায়, জেরার সময়ে কান্নাকাটি করে অনেক কিছু এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অর্পিতা। পাশাপাশি পার্থও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের ওপর দোষারোপ করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছেন। ইডি-র দাবি, অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার বিষয়টিও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন পার্থ।

এ দিকে বেলঘরিয়ায় যে ফ্ল্যাটে অর্পিতা থাকতেন, সেখানকার আবাসন কমিটির কর্তৃপক্ষ সোমবারেই ইডি-র দফতরে গিয়ে বিভিন্ন নথি জমা দিয়ে এসেছেন। রথতলার ‘ক্লাব টাউন হাইটস’ আবাসনের ব্লক-২ এবং ব্লক-৫-এ ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার। ওই দুই ব্লক-সহ আবাসনের মূল প্রবেশদ্বারের রেজিস্ট্রার খাতা ইডি-র কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মূল গেটে যে অ্যাপের মাধ্যমে ভিজ়িটরদের ছবি ও তথ্য ফ্ল্যাট-মালিকের কাছে পাঠানো হয়, সেই নথিও জমা করা হয়েছে। আবাসন কর্তৃপক্ষ তদন্তকারীদের অনুরোধ করেছেন, আবাসন এবং ওই দু’টি ব্লকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যেন তাঁরা নিজেরা এসে সংগ্রহ করেন। রাতে ইডি-র তদন্তকারীরা আবাসনে গিয়ে সেই ফুটেজ সংগ্রহ করেন বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET Scam Enforcement Directorate Partha Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE