ধৃত সুমন্ত (মাঝখানে)।— নিজস্ব চিত্র।
এমনটা যদি তাঁর ওখানেও হত, তবে বরাহনগরের ওই তরুণীকে আত্মহত্যা করতে হত না। যেমনটা ঘটল কালনায়। পড়ুয়া কিশোরী-তরুণীদের প্রতি দিন উত্যক্ত করত যুবকটি। কিন্তু, ইভটিজিং-এর কোনও প্রতিবাদই করত না তারা। আর সেই সুযোগটাই গত ছ’মাস ধরে নিয়েছে বর্ধমানের কালনার বছর আঠাশের ওই যুবক সুমন্ত ঘোষ। বুধবার একই ঘটনা ঘটতেই তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় ওই পড়ুয়ারা। সুমন্তকে ধরে ফেলে তারা। এক প্রস্ত মারধরের পর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবকের বাড়ি কালনা শহরের পাথুরিয়া মহলে। সাইকেলে চেপে প্রতি দিন সকাল সাতটা নাগাদ সে পৌঁছে যেত স্থানীয় কালীতলা মোড়ে। এর পর সেখানেই ঘণ্টা দুয়েক দাঁড়িয়ে থাকত সে। বাসস্ট্যান্ড থেকে খুব কাছেই ওই কালীতলা মোড়। শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রাইভেট টিউশন নিতে যাওয়া পড়ুয়াদের একাংশকে ওই মোড় পেরিয়েই যেতে হয়। শহরে ঢোকার ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রতি দিন ওই পড়ুয়াদের নানা রকম ভাবে উত্যক্ত করত ওই যুবক। কারও দিকে ছুড়ে দিত অশালীন মন্তব্য, তো কারও প্রতি অশ্লীল ইঙ্গিত। কটূক্তির পাশাপাশি কখনও কখনও গালিগালাজও করত সে।
ছ’মাস ধরে টানা এই ঘটনা মুখ বুজে সহ্য করলেও, সম্প্রতি একটা পরিকল্পনা করে ওই পড়ুয়ারা। এ দিন সকালে যেই ওই যুবক এক পড়িয়াকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করে, তখনই পেছন থেকে তাকে ধরে ফেলে পড়ুয়াদের একাংশ। উত্তম-মধ্যম দেওয়া হয় ওই যুবককে। পা থেকে জুতো খুলে মারা হয় তাকে। ঠিক এই সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন কালনা থানার ওসি আকাশ মুন্সি। পড়ুয়ারা তাঁর হাতেই তুলে দেয় সুমন্তকে। তাঁকে গ্রেফতার করে এর পর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবাদী এক তরুণীর কথায়, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে কটূক্তি করে যাচ্ছিল ওই ছেলেটি। প্রথমে ভেবেছিলাম, নিজে থেকেই সরে যাবে। কিন্তু, ছ’মাসের মধ্যে সেটা না হওয়ায় আমরা ঠিক করি যে, এ বার প্রতিবাদ করব। সোমবার সকালে একই ঘটনা ঘটতেই, এক পড়ুয়া প্রতিবাদ করে। তার সঙ্গে আমরা সবাই যোগ দেই।’’
আকাশবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ওই যুবকের সঙ্গে আর কেউ আছে কি না আমরা তা খতিয়ে দেখছি। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy