বুধবার বিধাননগরের অফিসে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়কে (ছবির ডানদিকে বিজেপির উত্তরীয় গলায়) বিজেপিতে ফিরিয়ে নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন। আবার বিজেপিতে ফিরেছেন বিধায়ক সৌমেন রায়। তা সত্ত্বেও, তাঁর সদস্যপদ খারিজ চেয়ে স্পিকারের কাছে করা আবেদন ফিরিয়ে নিল না বিজেপি। গত বুধবার বিধাননগরের কার্যালয়ে আচমকাই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশে দেখা যায় কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেনকে। গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে স্বাগতও জানান বিরোধী দলনেতা। সঙ্গে জানিয়ে দেন, চাপের মুখে তাঁকে দলত্যাগ করতে হয়েছিল। দলে ফিরে আসায় আবারও বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবেন তিনি।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জ থেকে বিজেপির টিকিটে জেতেন সৌমেন। সেই বছরই ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতার এক হোটেলে বিজেপি ছেড়ে তৎকালীন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন সৌমেন। তার পরেই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানান বিরোধী দলনেতা। স্পিকারের দফতর সূত্রে খবর, বিজেপিতে ফিরে যাওয়ার পরে দু’দিন কেটে গেলেও, এখনও বিরোধী দলনেতার দফতর থেকে তাদের কাছে সৌমেনের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন প্রত্যাহারের অনুরোধ আসেনি। আবার বিরোধী দলনেতার দফতর সূত্রে খবর, সেখানেও শুভেন্দু এখনও কালিয়াগঞ্জ বিধায়কের পদ খারিজের আবেদন প্রত্যাহারের কোনও নির্দেশ দেননি। তাই বিরোধী দলনেতার দফতরও সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়নি।
কেন আবেদন করা হয়নি, তার ‘ব্যাখ্যা’ দিলেন বিজেপি পরিষদীয় দলের এক সদস্য। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েক জন বিধায়ক দল ছাড়ার পরপরই বিরোধী দলনেতা তাঁদের সকলের বিধায়কপদ খারিজের আবেদন করেছিলেন স্পিকারের কাছে। পাশাপাশি আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ স্পিকার জানিয়ে দেন, বিধায়কেরা সকলেই বিজেপিতে রয়েছেন। স্পিকারের এমন ঘোষণার পর তাই আর কাউকে বিজেপি বা তৃণমূল বলে প্রমাণ করার দায় আমাদের নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সৌমেন বিজেপির বিধায়ক বলে জানিয়েছিলেন স্পিকার। তাই সে আমাদের সঙ্গেই বসে কাজ করবে। স্পিকারই যখন তাকে বিজেপি বিধায়ক বলে উল্লেখ করেছেন, তাই আর পৃথক ভাবে বিধায়কপদ খারিজের প্রশ্নই ওঠে না।’’ বিজেপিতে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ফোন করা হয় রাজবংশী বিধায়ক সৌমেনকে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, এখন সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে তাঁকে নিষেধ করা হয়েছে।
সৌমেনের ‘ঘর ওয়াপসি’ হলেও, তৃণমূলে চলে গিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়, রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী, সোনামুখীর হরকালী প্রতিহার, বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ। সৌমেনের যোগদানের দিনই শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘মুকুলবাবু দিল্লিতে গিয়ে দলে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমরা তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিইনি।’’ অন্য দলত্যাগী বিধায়কেরা যদি দলে ফিরতে চান, সে ক্ষেত্রেও বিজেপি কী অবস্থান নেবে তাও স্পষ্ট করেননি শুভেন্দু। তবে বাংলায় ‘যোগদান’ প্রসঙ্গে যাবতীয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy