Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Satyabrata Mookherjee died

প্রয়াত জলুবাবু, রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও

অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সালের জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

image of satyabrata Mookherjee

শুক্রবার সকালে কলকাতার সানি পার্কের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের। — ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ১২:৪১
Share: Save:

প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতিও। তবে রাজনৈতিক মহলে জলুবাবু নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালে কলকাতার সানি পার্কের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

পেশায় আইনজীবী ছিলেন সত্যব্রত। আইনজীবী হিসাবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালে ওই পদে বসেছিলেন। ২০০৯ সালে তাঁকে সরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়েছিলেন রাহুল সিংহ। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সালের জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

১৯৩২ সালের ৮ মে সিলেট (এখন বাংলাদেশ)-এ জন্ম হয়েছিল সত্যব্রতের। সেখান থেকে চলে আসেন নদিয়ার কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডী গ্রামে। বর্ধিষ্ণু পরিবারের সন্তান সত্যব্রত পরিবারের অগ্রজদের মতো বেছে নেন আইনি পেশা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ছিলেন সত্যব্রত। পরবর্তী কালে যোগদান করেন রাজনীতিতে।

১৯৯৯ সালের লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন সত্যব্রত। তবে ওই কেন্দ্রেই ১৯৯৮, ২০০৪, ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েও জিততে পারেননি তিনি। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে প্রবীণ এই বিজেপি নেতাকে হারিয়ে কৃষ্ণনগরের সাংসদ নির্বাচিত হন তৃণমূল প্রার্থী তাপস পাল। তবে হেরে গেলেও তিন লক্ষেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন জলুবাবু।

৮৭ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়মিত হাই কোর্টে যেতেন সত্যব্রত। খোঁজখবর রাখতেন দলীয় কাজকর্মের। তবে বার্ধক্য জনিত কারণে দীর্ঘ তিন বছর সব কিছু থেকে দূরে ছিলেন। মাঝে বেশ কয়েক বার চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। প্রবীণ নেতার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। তিনি বিবৃতি দিয়ে লিখেছেন, ‘‘বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, প্রথিতযশা ব্যারিস্টার ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় (জলুবাবু)-এর মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও শোকপ্রকাশ করেছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। জলু বাবু নামে পরিচিত ছিলেন। সাংসদ ছিলেন। প্রাক্তন সাংসদ এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের সমবেদন জানাই।’’ নদিয়া জেলা তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রাক্তন মন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘‘জলুদার মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। রাজনৈতিক মতানৈক্য থাকলেও ওঁর স্নেহ থেকে কখনও বঞ্চিত হইনি। নদিয়া এক রাজনৈতিক অভিভাবক হারাল।’’

সিপিএমের নদিয়া জেলার সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘রাজনৈতিকভাবে তাঁর মতাদর্শের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু ব্যক্তি সত্যব্রত সবার কাছেই প্রিয় ছিলেন।’’ বিজেপির কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিজেপি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা শোকস্তব্ধ। ওঁর পরিবার ও পরিজনদের সমবেদনা জানাই এবং সত্যব্রত আত্মার শান্তি কামনা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP MP Krishnanagar Assembly Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE