Advertisement
E-Paper

এই বুঝি খাদে পড়ে! বাসে চোখ বুজে বসে

ডেবরার বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের কর্মী জানিয়েছেন কেদারনাথে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা।

তাপস মান্না

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২১ ০৫:১৯
সিকিম থেকে কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বিরিকধারায় ধস। বৃহস্পতিবার।

সিকিম থেকে কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বিরিকধারায় ধস। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

নবমীতে রওনা দিই কেদারনাথ। একে তীর্থ, তায় নিসর্গের টান— মন ছিল চনমনে। দুন এক্সপ্রেসে হরিদ্বার রওনা থেকে কেদারনাথ মন্দির দর্শনের সময়ও বুঝিনি কী মারাত্মক বিপদ লুকিয়ে হিমালয়ের বাঁকে।

১৫ অক্টোবর বিকেলে হরিদ্বার পৌঁছই। পরদিন ভোরে সোনপ্রয়াগ যাত্রা। বাসে দিল্লি ও নয়ডার পাঁচজনের সঙ্গে আলাপ হয়। ১৭অক্টোবর ভোরে কেদারনাথ যাত্রা শুরু হয়। ১২ ঘন্টা হেঁটে যখন পৌঁছলাম, দাঁড়ানোর শক্তি নেই। মন্দির দর্শন দ্রুত মিটল। কিন্তু ততক্ষণে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছে। এদিক-ওদিকে ধস নামছে। প্রচুর মানুষ আটকে পড়ায় ঘর ভাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত কাটাতে মাথাপিছু ছ’শো টাকায় একটা ঘর জোটে। কনকনে ঠান্ডায় মাটিতে বিছানা করে ৬ জন থাকলাম। পরদিন পেলাম ধসের খবর। আমাদের ওখানেও জল আর খাবারের দাম চড়ছে। শেষে ১৮ অক্টোবর চড়া দামে একটা বর্ষাতি কিনে নীচে নামার চেষ্টা শুরু করলাম।

ঘোড়া, খচ্চর কিচ্ছু নেই। হেলিকপ্টারও বন্ধ। ভিজে জুতো সামলে নামতে নামতে দেখছি ধসে চারপাশ তছনছ হয়ে গিয়েছে। বড় বড় পাথর পেরিয়ে প্রায় ৯ ঘন্টা হেঁটে সোনপ্রয়াগে ফিরি। সেখানেও অনেকে আটকে। ঘর নেই। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দেওয়া খাবারে খিদে মেটাই। মালপত্র রাখার ঘরে মাথা পিছু ৫০০টাকা দিয়ে দু’দিন ছিলাম। দু’রাত চোখের পাতা এক করতে পারিনি। লোডশেডিং চলছিল। ফোনে চার্জ নেই। পরে একজনের পাওয়ার ব্যাঙ্ক থেকে মোবাইল সামান্য চার্জ করে বাড়িতে ফোন করি। পরিজনেদের তখন ঘুম ছুটেছে।

২০ অক্টোবর সকালে গাড়িতে বাড়তি ভাড়া গুনে ৭০কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর বাইপাসে পৌঁছই। হাতে আর টাকা নেই। সঙ্গীদের কাছে ধার করলাম। এখানে হরিদ্বারের বাস পেলাম। কিন্তু রুদ্রপ্রয়াগের কাছে এসে ফের বড়সড় ধস। গোটা রাস্তায় গাড়ির লাইন। একটু হেরফের হলেই বাস সোজা খাদে। চোখ বুজে শুধু কেদারনাথকে ডেকেছি। শেষে ৮ ঘন্টার রাস্তা প্রায় ২৪ ঘন্টায় পেরিয়েছি প্রাণ হাতে করে।

বৃহস্পতিবার সকালে হরিদ্বার পৌঁছলাম বটে। তবে জানি না হাওড়া কী ভাবে পৌঁছব। ১৯ অক্টোবর ট্রেনের টিকিট ছিল। কিন্তু তা বাতিল হয়েছে। রাতের ট্রেনে তৎকালে ওয়েটিং লিস্টে টিকিট কেটেছি। এখন বাড়ি ফিরতে পারলেই হয়।

Natural Disaster
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy